রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামোর এই তিন ধাপের নিয়মে সেক্রেটারিয়েট প্রায় রাজদণ্ডের মতো; তাদের ভাগ্যই সুপ্রসন্ন। উপরন্তু, পদোন্নতির সুযোগও যেন এক অভিজাত ক্লাবে প্রবেশের টিকেট। কিন্তু সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের মাঝে এই শ্রেণীসৃষ্টির কি মূল্য আছে? সমাজের মানসিক অবস্থা ক্রমেই পরিবর্তিত হচ্ছে, তবে বঞ্চনা ও অদক্ষতার প্রতিবিম্ব কীভাবে ঠাঁই পাবে আমাদের রাজনীতির আয়নায়?
বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো: তিন স্তরের নীতি ও ক্ষমতার বণ্টন
বাংলাদেশের প্রশাসন বর্তমানে তিনটি স্তরে কাজ করছে – সেক্রেটারিয়েট, ডিরেক্টরেট এবং রিজিওনাল অফিস। এই স্তরগুলোতে একটি সুস্পষ্ট শ্রেণিবিভাগ রয়েছে। শীর্ষে রয়েছে সেক্রেটারিয়েট, যেখানে কর্মকর্তাদের বাস্তব ক্ষমতা ও সুবিধা সর্বাধিক। তবে, প্রশ্ন উঠছে, এই ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ কি গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক?
সেক্রেটারিয়েটের আধিপত্য: এক অদৃশ্য ওয়ার্কিং এনভায়রনমেন্ট
সেক্রেটারিয়েটের কর্মীরা সাধারণত পদোন্নতিতে সফল হন। তাদের সাফল্যের মূল কারণ কী? এখানে কাজের গতি কিংবা জনগণের সেবার বিষয়টি কোনো প্রাধান্য পায় না; বরং সবকিছু রাজনৈতিক সহায়তা ও প্রশাসনিক সংযোগের ওপর নির্ভরশীল।
রাজনৈতিক অথর্বতার আড়ালে
এখন কর্মকর্তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও আদর্শ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেটি ভাবার সময় এসেছে। প্রশাসন কি আসলে জনগণের সেবায় নিবেদিত, না কি ক্ষমতার খেলার অংশ? জনগণের মনে প্রশ্ন উঠছে, ‘আমরা কি এখনো সেই পুরনো রাষ্ট্রের নাগরিক?’
ডিরেক্টরেট ও রিজিওনাল অফিস: নতুন নেতৃত্বের সম্ভাবনা
ডিরেক্টরেটের অফিসগুলোতে বেশ ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। সেখানকার কর্মীরা বুঝতে পেরেছেন, সেক্রেটারিয়েটের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, জনগণের সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করা তাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে। তারা সরকারী নীতিগুলো জনগণের কাছে কিভাবে আরো উপযোগী করে তুলে ধরেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।
গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
রাজনৈতিক দেওয়া নেওয়ার এই প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের অবস্থান কোথায়? বর্তমানে সরকারের নীতিসমূহ কি সমাজের কল্যাণে সহায়ক, না কি কেবল শ্রেণিগত সুবিধা বণ্টনের উপায়? জন আন্দোলন, সামাজিক বক্তব্য ও মিডিয়ার ভূমিকা কোথায় যাচ্ছে, সেটি ভাবতে হবে।
সমাজের মধ্যে এক নতুন ভাবনার আহ্বান
এখন প্রয়োজন রাজনীতিবিদদের জনগণের জন্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপায়িত করা। তারা কি তাহলে নিজেদের ক্ষমতা থেকে ফিরে এসে জনগণের স্বার্থে কাজ করবেন? না হলে জনগণের অসন্তোষ বাড়বে? সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের কি করণীয়, সেই ভাবনাগুলো এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন
রাজনৈতিক কাঠামোকে নতুন করে পর্যালোচনা করার জন্য, মহৎ আদর্শ ও সমাজের সত্যিকারের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এই পরিবর্তনের জন্য জনতার কণ্ঠস্বর অপরিহার্য; সম্ভবত তখনই রাজ্য প্রশাসনের এই তিন স্তরের কাঠামো নতুন আলোর পথ দেখাবে।