কলকাতা হাইকোর্টে ২০২৪ সালের রামনবমীতে ছুটি না থাকলেও, ২০২৫ সালে সেটি ‘পাবলিক হলিডে’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ পরিবর্তন কি রাজনৈতিক চাপের ফল, নাকি সরকারের খামের মধ্যে লুকায়িত ধর্মের ডিসকাউন্ট? রাজ্য সরকার কি সত্যি মুমূর্ষু রীতির পুনরুত্থান ঘটাতে চাইছে, নাকি এ ভয়াবহ নাটকের মধ্যে জনগণের অসন্তোষের সুরে গানের স্বর মেলাতে? অধিকার, ছুটি, আর ধর্মের চাঁদ—সকল কিছুই তো আজকের সরকারের নাট্যমঞ্চে রঙ্গমালার মতো, যেখানে প্রতিটি টানা লাইনেই লুকিয়ে রয়েছে গায়ের রঙ।
রামনবমী: ছুটির সত্যতা নাকি রাজনৈতিক খেলা?
২০২৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টে রামনবমীতে ছুটি প্রদান করা হয়নি, তবে সরকার কি বিষয়টিকে সহজে প্রভাবিত করতে পেরেছে? ২০২৫ সালের ছুটির তালিকায় রামনবমীকে ‘পাবলিক হলিডে’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপের পেছনে কি কোন গভীর উদ্দেশ্য রয়েছে? দুই সময়ের মধ্যে এতো বড় ফারাক রাজনৈতিক মোড়ের সূচনা তো নয়?
রাজনৈতিক নাটক ও তার পরিণতি
রামনবমী ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া কি রাজনৈতিক এজেন্ডার প্রতীক? পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকার যখন প্রতিদিন নতুন সমীক্ষার মুখোমুখি, তখন কি জনমনে এ পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে? যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির চেষ্টা চললেও, তার পেছনে কি রাজনৈতিক চাপ এবং চিন্তাভাবনা গোপন? কি নেতাদের মিডিয়ার মাঝে উজ্জ্বলতা তৈরির খেলা একটু বেশিই তীব্র হয়ে উঠছে?
জনতার মন কি বৃহত্তর বলেন?
রামনবমীর ছুটি নিয়ে আলোচনা পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতির প্রতিফলন। নেতাদের স্লোগান যখন ধর্মীয় ব্যবসার রঙ্গমঞ্চে পরিণত হয়, তখন সাধারণ নাগরিক কিভাবে এর বাইরে আসবে? ধর্মীয় উৎসবকে সরকারি ছুটির তালিকায় যুক্ত করার সিদ্ধান্ত কি জনগণের আগ্রহের প্রতিফলন, না কি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি কৌশল?
মিডিয়ার ভূমিকা ও রাজনীতির প্রতিচ্ছবি
মিডিয়া এই রাজনৈতিক নাটককে বর্তমানে তুলে ধরার পাশাপাশি গণজাগরণের প্রতিফলন ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এমন এক সিদ্ধান্তকে তারা কিভাবে উপস্থাপন করছে? জনগণের আসল সমস্যাগুলিকে কি তারা অনুধাবন করতে পারছে? ইতিহাস দেখায় যে রাজনৈতিক নেতারা সাধারণ মানুষের সাড়া পেতে যে গভীরতায় চিন্তা করেন, তা একটি বিস্তৃত ইতিহাসে ডুবে থাকে। আর সেই ইতিহাসের দায় কি শুধুমাত্র জনগণের?
শেষকথা
এখন প্রশ্ন উঠছে, রামনবমীর ছুটি নিয়ে আলোচনা আমাদের সমাজের একটি প্রতিফলন, নাকি রাজনৈতিক নেতাদের কৌশল? এই নতুন ধারনা আমাদের চিন্তার জগতে কি একটি পরিবর্তন নিয়ে আসবে? আমরা কি সঠিক পথে আছি, নাকি ধর্ম রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নিজেদেরকে অকারণে আবদ্ধ রেখেছি? সময় এসেছে ভাবার, এই দ্বন্দ্ব আমাদের চরিত্রের সার্থকতা খুঁজে দিচ্ছে নাকি আমাদের আরও বিটিভক্ত করছে?