বলিউডের জনপ্রিয় প্রোডাকশন ডিজাইনার রাজাত পঁদ্দার হঠাৎ মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সদ্য মুক্তি পাওয়া কাজের জন্য যে তিনি ছিলেন উচ্ছ্বসিত, সৌন্দর্যের পিছনে তার অবদান ছিল অপরিসীম। পরিচালক তথা বন্ধু Vivek Agnihotri নবীন প্রজন্মের প্রেক্ষাপটে তার অভাব অনুভব করছেন, যা প্রমাণ করে একজন শিল্পীর খোঁজ কতটা গভীর। এই বেদনাদায়ক ঘটনাটি চলচ্চিত্রের শিল্পযোগে নতুন আবেগ ও চিন্তার সৃষ্টি করবে।
বলিউডে মর্মান্তিক শূন্যতা: নির্মাতা রাজাত পাড়দার আর নেই
সম্প্রতি, জনপ্রিয় প্রোডাকশন ডিজাইনার রাজাত পাড়দার, যিনি ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’, ‘কাইটস’, ‘গুন্ডে’, ‘প্যাঁর কা পাঞ্চনামা’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘ওয়ার’, ‘স্যাত্যপ্রেম কি কাথা’ এবং ‘ড্রিম গার্ল ২’সহ বহু সিনেমার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁর অকাল মৃত্যু সংবাদে শোকাহত ভারতীয় চলচ্চিত্র মহল। পশ্চিমাঞ্চলীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তিনি লন্ডনে অবস্থানরত অবস্থায় হৃদক্রম বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। যদিও এই আকস্মিক মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আর কোনো অতিরিক্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিনেমাটিক জগতে এক অশান্তির ঢেউ
নির্মাতা আনি বাজমী এবং Vivek Ranjan Agnihotri শোক প্রকাশ করেছেন রাজাতের মৃত্যুর পর। আনি বাজমী একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানান, তিনি রাজাতের সঙ্গে তাঁর আসন্ন হরর কমেডি ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’ নিয়ে কাজ করছিলেন। একদিন আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের কথা হওয়ার সময় রাজাত ‘কার্তিক আরিয়ান ও তৃপ্তি দিমরি’র নতুন সিনেমার টিজার সম্পর্কেও কথাবার্তা বলেন। বাজমী জানান, রাজাত সেই টিজারের প্রশংসা করেছেন।
এক সহযোগীর শোক: ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’-এ রাজাতের অভাব
অন্যদিকে, Vivek Agnihotri নিশ্চিত করেছেন যে তিনি রাজাতের সঙ্গে ‘দ্য দিল্লি ফাইলস’ সিনেমার জন্য কাজ করছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ তিনি একটি নোট শেয়ার করে রাজাতের মৃত্যুর বিষয়ে শোক প্রকাশ করেন। তিনি রাজাতকে ‘আমার বন্ধু, ভাই এবং সেরা প্রোডাকশন ডিজাইনার’ বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘রাজাত সর্বদা সুস্থ ও হাসিখুশি ছিলেন, কিন্তু রাতে লন্ডনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমি জানি না, তোমার ছাড়া #TheDelhiFiles কিভাবে তৈরি করব?’
রাজাত পাড়দারের অবদান এবং চলচ্চিত্র শিল্পের পরিবর্তন
রাজাত পাড়দার ছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাঁর ডিজাইন করা সেট ও শিল্পকলার মাধ্যমে চলচ্চিত্রগুলি অন্য মাত্রা পেয়েছিল। আজকের চলচ্চিত্রে দর্শকদের মেজাজ, গল্প বলার ধরন এবং সমাজের চাহিদার পরিবর্তন স্পষ্ট দেখা যায়। রাজাতের অকাল প্রয়াণ এই শিল্পে এক শূন্যতা তৈরি করেছে যা পূরণ হওয়া কঠিন।
চলচ্চিত্র ও সমাজের সম্পর্ক
রাজাতের কাজ যেভাবে সিনেমাগুলিকে জীবন্ত করে তুলেছে, সেভাবে তিনি দর্শকদের মনে রেখাপাত করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এখন প্রযোজকেরা অধিকাংশ সময় বাজেট ও সামাজিক মিডিয়া রিভিউয়ের দিকে বেশি নজর দেন, যা শিল্পের অনুপ্রেরণাকে প্রভাবিত করছে। সমাজের পরিবর্তনশীল দৃশ্যপট আজকের সিনেমার ধারাকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
শেষ কথা: রাজাত পাড়দারের শূন্যতা
রাজাত পাড়দারের মৃত্যু শুধু পরিবারের জন্য নয়, বরং চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি গভীর ক্ষতি। তাঁর সৃষ্টির মধ্যে যে সুন্দর বিজ্ঞান ছিল, তা আজ আমাদের গভীরভাবে ভাবায়। তাঁর স্মৃতি অমর হয়ে থাকবে, এবং আমাদের মনে করিয়ে দেবে যে, চলচ্চিত্রের পিছনে যে কারিগররা কাজ করেন, তাঁদের অবদান কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।