প্রবাদপ্রতিম পরিচালক সুবাষ ঘাই তার স্মৃতিকথা ‘কার্মার চাইল্ড’ প্রকাশ করতে যাচ্ছেন, যা মুম্বাইয়ের সাহিত্য উৎসবে প্রকাশিত হবে। এই আত্মজীবনীতে তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে একজন তরুণ, চলচ্চিত্রের ইন্ডাস্ট্রির চড়াই-উতরাই পেরিয়ে নিজের ভাগ্য নির্মাণ করেছেন। ঘাই এর সিনেমা যেমন আমাদের বিনোদন দিয়েছে, তেমনি তাদের গল্পে সমকালীন সমাজের প্রতিফলনও ঘটে।
ছবির জগতে প্রেম এবং বিরহ: সুবশ ঘাইয়ের আত্মজীবনী
ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালনা ক্ষেত্রের এক উজ্জ্বল তারকা, সুবশ ঘাই, খুব শীঘ্রই প্রকাশ করতে চলেছেন তাঁর আত্মজীবনী ‘Karma’s Child’। এই বইটি সাংবাদিক এবং লেখক সুভীন সিনহার সহযোগিতায় লেখা হয়েছে এবং হোপারকলিন্স দ্বারা প্রকাশিত হবে। আগামী ১৫ নভেম্বর মুম্বাইয়ের ন্যাশনাল সেন্টার অফ পারফর্মিং আর্টসে অনুষ্ঠিত সাহিত্য উৎসবে বইটির উন্মোচন হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কিংবদন্তি গীতিকার এবং পরিচালক গোলজার।
নতুন পাতা উন্মোচন
প্রকাশক অনুযায়ী, বইটি “একটি মানুষের গল্প বলতে চলেছে যে বিশ্বাস করেছিল সে নিজের ভবিষ্যৎ পরিচালনা করার জন্যdestined, সে এমন করে দেখিয়েছে যেভাবে সাবাশ ঘাইয়ের একটি সিনেমা হয়।” সুবশ ঘাই নিজের আত্মজীবনী নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জানান, “আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পে অসংখ্য তারকা জন্মায় এবং আরও অনেকেই ম্লান হয়ে যায়। আপনি যে বইটি ধরেছেন সেটি একটি তরুণ মানুষের গল্প, যে শূন্য থেকে উঠে এসে, তাঁকে সামনে আসা চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করেছে এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই বইটি ১৯৬০ থেকে আজকের বলিউডের গল্প।”
চলচ্চিত্রের মহাকাব্য
সুভীন সিনহা বলেন, “কলিচরণে ‘লায়ন’র ঘুরে ঘুরে ইশারা আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে দিয়েছিল। হিরোতে জ্যাকি যখন তার প্রেমকে বাঁচাতে টিটকিরি দিয়ে আসছিল, আমি উল্লাস করেছি। রাম লখনে ‘ওয়ান টু কা ফোর’-এ নাচ করেছি। সুবশ ঘাইয়ের সঙ্গে এই আত্মজীবনীতে কাজ করা আমার জন্য একটি স্বপ্নসাধ্য।” লেখকদ্বয় ‘বইটি ওই শ্রেষ্ঠ ছবির পরিচালক সাবাশ ঘাইয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে বলিউডের গল্প বলা হয়েছে যা এটিকে একটি অনন্য সেলিব্রিটি আত্মজীবনী করে তোলে।’
কাহিনীর মোড়
হোপরকলিন্সের নির্বাহী প্রকাশক উদয়ন মিত্র জানান, “সুবশ ঘাই আমাদেরকে বহুবছর ধরে বিনোদন দিয়েছেন শক্তিশালী কাহিনীর, আকর্ষণীয় সঙ্গীতের, এবং মহাকাব্যিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে। তাঁর আত্মজীবনীটি একটি সুখকর পাঠ—হাস্যরস, ঘটনার সমাহার, এবং নাটকীয়তা ভরা, যা যেন সাবাশ ঘাইয়ের ছবির মতো পাঠককে আকৃষ্ট করে।”
রাজনীতির পালটে যাওয়া
সুবশ ঘাইয়ের উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে কালিচরণ, করজ, বাদশা, হিরো, karma, রাম লখন, সাউদাগর, খল নায়ক, পরদেশ এবং তাল। তাকে নিয়ে আরও এক তথ্য নুসরাতের আওয়াজে এসেছে যে “তাল” এর ২৫ বছর পূর্তিতে তিনি জানান, গোবিন্দা মূল চরিত্রের জন্য প্রথম পছন্দ ছিলেন। তবে তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ করেননি কারণ নায়িকার সঙ্গে অক্ষয় খন্নার বিয়ে চলছে। তিনি বলেছিলেন, ‘এই ছবির জন্য আমি ছোট চরিত্রের অভিনেতা হয়ে যাব।’”
আমাদের কথা: চলচ্চিত্রের পরিবর্তনশীল রূপ
বর্তমানে বলিউডে যে পরিবর্তন আসছে তা শিল্পের গতিপথ পরিবর্তনের উল্লাসজনক উদাহরণ। সাবাশ ঘাইয়ের মতো কিংবদন্তিদের ক্যারিয়ার এবং তাঁদের অভিজ্ঞত্বের গল্প আমাদের শিখিয়েছে যে শুধু সিনেমা নয়, ছবির গল্প, চরিত্র, এবং অভিনেতাদের ক্ষমতাকে বুঝতে হবে। সুতরাং, দর্শকের আশা, মিডিয়া প্রতিফলন এবং সমাজের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন কাহিনীগুলি তৈরি করা উচিত।
নারী প্রাধান্যের সন্ধান
এখন সময় এসেছে নারী কেন্দ্রীক গল্পগুলির উন্নয়নের, যেখানে নারীদের পারফরমেন্স এবং দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্বকে আরও গুরুতরভাবে নেওয়া উচিত। সিনেমায় একজন মহিলার গল্পের কেন্দ্রিকতা শুধু গড়পড়তা চিত্রকলা নয়, বরং সমাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির পুনবিবেচনার একটি উপায়।
নতুন প্রজন্মের প্রতিফলন
বর্তমানে নতুন প্রজন্মের দর্শক এবং শিল্পীরা নানা বিষয়ের প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন, যা সিনেমাতে এক নিম্নমানের নেকড়ের মতো পরিবর্তন আনতে চলেছে। সুবশ ঘাইয়ের আত্মজীবনী উপস্থাপন করে এক নতুন দৃষ্টিশক্তি প্রদান করবে, যা শুধুমাত্র একটি চলচ্চিত্রের গল্প নয়, বরং শিল্পের ভবিষ্যতের সম্পর্কে আমাদের ভাবনার জন্য প্রেরণা যোগাবে।