আলিয়া ভাটের নতুন ছবি ‘জিগরা’ মুক্তির পর থেকেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। ছবির প্রতি মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে অভিনেত্রী দিভ্যা খোসলা বক্স অফিসের রিপোর্ট নিয়ে মাথাব্যথা সৃষ্টি করেছেন। অন্যদিকে, মণিপুরের অভিনেতা বিজু থাঙজাম দাবি করেছেন, নর্থইস্টের অভিনেতাদের প্রতি নির্মাতাদের অসহযোগিতা ও অবহেলা ছিল। তার কথায়, বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের হাতে স্বচ্ছন্দে কাজ করার সুযোগ হারানো নিয়ে ব্যথা প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে গবেষণা, ছবি নির্মাণের ধরন এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিত্বের প্রভাব সম্পর্কে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভারতীয় সিনেমার অঙ্গণে নতুন বিতর্ক: আলিয়া ভট্টের ‘জিগ্রা’ নিয়ে চলছে চরম সমালোচনা
আলিয়া ভট্টের সর্বশেষ সিনেমা ‘জিগ্রা’ ১১ অক্টোবর মুক্তির পর থেকেই নানা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এই ছবি নিয়ে সমালোচকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি, সিনেমাটির শিল্পী ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে অভিনেত্রী দিভ্যা খোসলা প্রকাশ্যে আলিয়া ভট্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তিনি ‘জিগ্রা’-এর বক্স অফিসের সংখ্যা Manipulate করেছেন। যদিও আলিয়া তাতে চুপ থেকেছেন, তাঁর সহযোগী প্রযোজক করণ জোহর সোশ্যাল মিডিয়ায় এক রহস্যময় বার্তা পাঠিয়েছেন। তবে খোসলা তাঁর অভিযোগের পক্ষে দাঁড়িয়ে উল্লেখ করেছেন যে সত্য প্রায়ই ওই ব্যক্তিদের আহত করে যারা তার বিরুদ্ধে যায়।
নতুন অভিযোগের ঝড়: বিজো থাংজামের প্রবেশ
এখন একটি নতুন অভিযোগ সামনে এসেছে, যা এসেছে মণিপুরের অভিনেতা বিজো থাংজামের কাছ থেকে। তিনি দাবি করেছেন যে ‘জিগ্রা’-এর নির্মাতারাCasting Process-এর সময় উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের প্রতি পেশাদারিত্বের অভাব দেখিয়েছেন। তিনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “আমি কোনও অঙ্গীকার বা অভিযোগ নিয়ে এই লিখছি না। আমি শুধু সেই বাস্তবতা শেয়ার করতে চাই, যেখানে উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলি কীভাবে সাধারণত আচরণ করে। আশা করি, এটি আমাদের মুখোমুখি হওয়া সমস্যা সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করবে।”
অভিনেতার অভিজ্ঞতা: অপেক্ষার ক্ষতিপূরণহীন দিন
থাংজাম তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছেন কীভাবে তাঁকে সিনেমাটির একটি ভূমিকায় প্রতিস্থাপন করতে বলা হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমি চার মাসের মধ্যে দুইবার অডিশন দিয়েছি এবং ডিসেম্বর মাসে একটি ভূমিকায় অভিনয়ের অঙ্গীকার নিয়ে কথা হয়েছিল। কিন্তু, যদিও আমি দৃঢ় চিত্রগ্রহণের জন্য ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছি, ‘জিগ্রা’ দলের তরফে সাড়া পাইনি।” তিনি কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে, দীর্ঘ মাসের গবেষণা এবং চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর জন্য কোনও নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।
অভিযোগের চূড়ান্ত বিন্দু: পেশাদারিত্বের অভাব
তিনি আরও যোগ করেন, “অথর্ব অবস্থা গত ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছিল, একমাত্র বার্তা পাওয়ার পরে আমি পুরোপুরি নীরবতা পেয়েছি। এই পরিস্থিতিতে আমি অন্যান্য প্রকল্পে যোগ দিতে পারিনি, কারণ আমি তাদের প্রতীক্ষায় ছিলাম। তবে তারা কখনও সাড়া দিল না।” এই অভিযোগের মাধ্যমে বিজো থাংজাম এক ধরনের পক্ষপাতিত্ব এবং বিশেষত উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের প্রতি অবমাননাকর আচরণের একটি চিত্র তুলে ধরেছেন।
বিজো থাংজামের বক্তব্যের সারমর্ম
“আমি জানি কিভাবে বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলি কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরিচালক অবশ্যই প্রতিভাবান, কিন্তু পরিস্থিতিটি পরিচালনার পদ্ধতি ছিল অত্যন্ত অপ্রাঞ্জল। আমাদের মতো উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের জন্য এটি বিশেষভাবে অগ্রাহ্যকারী এবং যেন এক ধরনের বৈষম্য,” তিনি তাঁর পোস্টে বলেছেন। তিনি শেষ করেছেন, “আমি কোনও অঙ্গীকার বা অভিযোগ নিয়ে এখানে এসেছি। আমি শুধু এই বাস্তবতা শেয়ার করতে চাই, যা actoresদের প্রতি বড় নির্মাণ সংস্থার আচরণ নির্দেশ করে।”
সিনেমার মূল পর্যালোচনা
‘জিগ্রা’, যা বাসান বালার পরিচালনায় মুক্তি পেয়েছে, দর্শকদের মাঝে বিতর্ক জাগিয়ে তুলেছে। যদিও ছবিটিতে আলিয়া ভট্ট, ভেদন রায়না, এবং মনোজ পাহওয়া অভিনয় করেছেন, তবুও এই বিতর্কগুলি এখন সিনেমাটির রেটিং এবং অর্জনের অবস্থাকে প্রভাবিত করছে। অনেকেই বিশ্বাস করছেন, এই ঘটনা চলচ্চিত্রশিল্পে উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের প্রতি যে অবিচার এবং বৈষম্য হচ্ছে, সেটি একটি বড় সামাজিক দায়বদ্ধতার ইঙ্গিত দেয়।
শেষ কথা
এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্কগুলি ‘জিগ্রা’ চলচ্চিত্রকে কোথায় নিয়ে যায় এবং অভিনেতাদের জন্য ভবিষ্যতে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে। তবে এটা নিশ্চিত, সিনেমার প্রকল্পগুলিতে উত্তর-পূর্বের অভিনেতাদের জন্য একতা এবং দায়িত্বশীলতার প্রয়োজন রয়েছে।