আজ প্রকাশিত ভারতীয় সিনেমা “অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট” সেন্সরের আঁস্তাকুড় থেকে বাঁচার নজির স্থাপন করেছে। মহিলাদের নগ্নতা এবং সহবাস দৃশ্যে সিবিএফসি কোনো কাটছাঁট করেনি, যা ভারতীয় সিনেমার পরিবর্তিত মানসিকতার পরিচায়ক। পরিচালক পায়ল কাপাডিয়া এ বিষয়টি স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টা করেছেন, যে গল্পের থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কেরালায় সীমিত মুক্তির পর, এখন সারা দেশে এই চলচ্চিত্রটি ভারতের গর্ব।
শিল্পের ক্যানভাসে প্রগতির রেখা: ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ মুক্তির আত্মপ্রকাশ
ভারতের চলচ্চিত্র বোর্ডের চিন্তাভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’, যা আজ, ২২শে নভেম্বর, গোটা দেশে মুক্তি পেয়েছে। সিনেমাটির সেন্সর প্রক্রিয়া দুই মাস আগে সম্পন্ন হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড (CBFC) এটিতে কোনো দৃশ্য বা সংলাপ কাটেনি।
বলিউড হাঙ্গামার একটি সূত্র জানিয়েছে, “’অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ একটি তীব্র প্রেম দৃশ্য রয়েছে এবং অন্য একটি দৃশ্যে, সামনের নগ্নতা দেখা যায়। তথাপি, CBFC’র পরীক্ষামূলক কমিটি একটি প্রগতিশীল অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা সন্দেহ করেনি যে এই দৃশ্যগুলো চলচ্চিত্রের থিম ও ন্যারেটিভের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।” এর ফলে ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি বিরল চলচ্চিত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে যা সেন্সরের কাটছাঁট থেকে বাঁচতে পেরেছে।
নারীত্বের চিত্রায়ন: সমাজের প্রতিফলন
মিড ডে’র সাথে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে, পরিচালক পায়েল কাপাডিয়া নারীর নগ্নতা প্রদর্শনের বিষয়ে জানান, “আমি এটি স্বাভাবিকীকরণ করতে চেয়েছিলাম। এটি দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ, যেমন খাওয়া ও পান করা। আমি সত্যিকার অর্থে একটি প্রধান থিম, যা হলো কামনা, তা তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।”
নতুন ধারার চলচ্চিত্রনির্মাণ
‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ এর নায়করা হলেন কানী কস্রুতি, দিভ্যা প্রভা এবং ছায়া কাদাম। এটি একটি হাসপাতালে কাজ করা তিনজন নারীর গল্প, যারা মুম্বাইয়ের একাকীত্ব এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয়।
কানস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনী
এই চলচ্চিত্রটি 77তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়েছিল, সেখানে এটি 1994 সালের পর থেকে ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে প্রধান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং গ্র্যান্ড প্রি পুরস্কার জিতে। ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ ২২শে নভেম্বর সারা দেশে মুক্তি পেলেও, এটি ২১শে সেপ্টেম্বর কেরালায় একটি সীমিত মুক্তি পেয়েছিল যাতে এটি ভারতের অফিশিয়াল অস্কার এন্ট্রি হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। এই চলচ্চিত্রটির বিতরণ ভারতে করেছেন রানা ডাগ্গুবাতি।
স্বাধীন চলচ্চিত্রের চ্যালেঞ্জ
কিছু দিন আগে হানসাল মেহতা বলেন, “অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ ডিজিটাল মুক্তি পেতে কষ্ট করছে যা স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণের কঠোর বাস্তবতা কে তুলে ধরে।” এই মন্তব্য ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজের মুখভঙ্গির পরিবর্তন
এটি স্পষ্ট যে ‘অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয় বরং এটি ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যেখানে নারীত্বের চিত্রায়ন এবং প্রস্তুতকারক দলের প্রগতিশীলতা নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে এসেছে, এটি दर्शকদের জন্য নতুন গল্প বলার দিশা প্রদান করে।