জাভেদ আখতার তার পূর্ণাঙ্গ বিবৃতিতে বলছেন, “এনিমাল” ছবির সাফল্যের পিছনে রয়েছে দর্শকদের মূল্যবোধের প্রতিবিম্ব। তিনি মন্তব্য করেছেন, সমাজে ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য অশ্লীলতার জয়যাত্রা উদ্বেগজনক এবং এটাই চলচ্চিত্রের ভিতরে শক্তির প্রকাশ। পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভঙ্গার প্রতিক্রিয়া যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে যে সাম্প্রতিক সিনেমার কাহিনি আমাদের মানসিকতাকে প্রভাবিত করছে, তা ভাববার বিষয়।
বলিউডের গতিবিধি: সমাজের প্রতিচ্ছবি নাকি আপসোসের খোঁজ?
জাভেদ আখতার সম্প্রতি সঞ্জয় রেড্ডি ভাঙার ২০২৩ সালের ব্লকবাস্টার ফিল্ম ‘অ্যানিমাল’-এর সাফল্য নিয়ে তার পূর্ববর্তী মন্তব্যগুলি পরিষ্কার করেছেন। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার মন্তব্যগুলি সিনেমাটির উপর নয় বরং দর্শকদের সম্পর্কে ছিল।
“আমি অ্যানিমাল নিয়ে মন্তব্য করিনি, আমি দর্শকদের নিয়ে মন্তব্য করেছি। সত্যি কথা বলতে, যদি ১০-১২-১৫ জন মানুষ ভুল মূল্যের উপর সিনেমা বানান … যদি ১০-১২ জন মানুষ অশালীন, অশালীন গান তৈরি করেন … তাহলে এটা সমস্যা নয়। যদি ১৪০ কোটির মধ্যে ১৫ জন বিকৃতমনস্ক হন, তাহলে তাতে কি আসে যায়। কিন্তু যখন সেই বিষয়টি বাজারে ছরিয়ে পরে এবং সুপারহিট হয়ে যায়, সেটাই হচ্ছে সমস্যা,” জাভেদ আখতার ব্যাখ্যা করেছেন।
কিন্তু কেন ‘অ্যানিমাল’-এর সাফল্য?
অভিজ্ঞ গীতিকার ও চিত্রনাট্যকারের কাছে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন তিনি মনে করেন ‘অ্যানিমাল’ সফল হয়েছে, তখন তিনি মজার ছলে বলেছিলেন, “শিরোনামটি দেখে বোঝা যায় কেন। শিরোনামটি নিজে থেকেই স্পষ্ট।” এই বছর, জাভেদ একটি ইভেন্টে উল্লেখ করেছিলেন যে যদিও তিনি ‘অ্যানিমাল’ দেখেননি, তবে তিনি এমন একটি বিতর্কিত দৃশ্য সম্পর্কে শুনেছেন যেখানে পুরুষ কৌতূহল (রনবীর কাপূর) তার প্রেমিকার (ত্রিপ্তি ডিমরি) কাছে তার জুতো চুষতে বলেছিল। এই দৃশ্যের মাধ্যমে প্রেম ও বিশ্বস্ততা প্রমাণের দাবি তুলে বলেছেন, ‘অ্যানিমাল’ এর ₹500 কোটির উপার্জন কেবল সমাজের মানসিকতার বিপদকে তুলে ধরে।
সামাজিক অবস্থা এবং মিডিয়ার প্রতিফলন
‘অ্যানিমাল’-এর পরিচালক সঞ্জয় রেড্ডি ভাঙা জাভেদের মন্তব্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তার কাছে পরামর্শ দিয়েছেন সিনেমাটি দেখে বোঝার। পাশাপাশি, তিনি জাভেদের দ্বৈততার প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন, উল্লেখ করে যে তাঁর ছেলে ফারহান আখতার প্রাইম ভিডিও ইন্ডিয়ার ক্রাইম থ্রিলার ‘মির্জাপুর’-এর সহ-প্রযোজক, যার বিশ্রী ভাষার ব্যবহার প্রসিদ্ধ।
জাভেদ তার প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সঞ্জয় কেবল তার ছেলের প্রযোজনা সংস্থা এক্সেল এন্টারটেইনমেন্ট দ্বারা প্রযোজিত একটি শো খুঁজে পেয়েছেন, যাতে তিনি তার তথাকথিত দ্বৈততা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। তিনি আরো বলেন যে সঞ্জয় যদি তার নিজস্ব ফিল্মোগ্রাফি বা গীতিকারিতে কোনও নারীবাদী বা অশালীনতার উদাহরণ খুঁজে না পান, তাহলে সেটি আসলে প্রশংসার দাবি রাখে।
বিনোদন শিল্পের প্রকৃতি ও পরিবর্তনশীল দর্শকপ্রাধান্য
যদিও জাভেদের মন্তব্যগুলি বাস্তবিক সমস্যা তুলে ধরছে, কিন্তু গণমাধ্যম, সিনেমা এবং সমাজের মধ্যে সমস্যা এবং সম্পর্ক নিয়ে একটি গভীর আলোচনা তৈরি করতে হবে। দর্শকদের পছন্দ এবং ইমেজেশনের পরিবর্তনশীল স্তরগুলি সিনেমার বিষয়বস্তু এবং শিল্পীদের পারফরম্যান্সকেও প্রভাবিত করছে।
ভারতের সিনেমা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, বিশেষ করে পরিবারের গল্প এবং সামাজিক সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনাটি সমস্ত শ্রেণীর মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। শিল্পের এই ভাঁতের আলোচনাগুলি কেবল চলচ্চিত্রের বর্তমান পরিবেশকেই প্রতিফলিত করছে না, বরং আমাদের সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার প্রতিফলনও করছে।