বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ দিল্লি হাই কোর্টে দাবি করেছেন, তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে অপরাধমূলক উপহারের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে যে চিটিংবাজ সুকেশ চন্দ্রশেখরের কাছ থেকে প্রাপ্ত এসব উপহার ২০০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ে যুক্ত। জ্যাকলিনের আইনজীবীরা বলেন, তিনি উপহারের উৎস জানতেন না এবং এসব উপহারকে ব্যক্তিগত ভাবে নিয়েছিলেন। আদালত আগামী ২৬ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি করবে, যেখানে সিনেমার জগতের কাহিনির মঞ্চায়ন এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপর বড় প্রশ্ন উঠছে।
বর্ষণাত্মক বলিউড: জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের কালো ধ CLOUD
বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ, তাঁর আইনজীবী মারফত গত বুধবার, ১৩ নভেম্বর, দিল্লি হাইকোর্টে দাবি করেন যে, তিনি অভিযুক্ত প্রতারক সুকেশ চাঁদ্রশেখরের কাছ থেকে প্রাপ্ত বিলাসবহুল উপহারগুলোর অবৈধ উৎস সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। ফার্নান্দেজকে ২০০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলায় জড়িত বলা হচ্ছে, একটি মামলা যা ব্যাপক জনসাধারণ এবং মিডিয়ার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
ফার্নান্দেজের আদালতপক্ষে বক্তব্য: আমি জানতাম না!
ফার্নান্দেজের হয়ে আইনজীবি সিদ্ধার্থ আগরওয়াল, প্রশান্ত পাটিল এবং শাক্তি পান্ডে যুক্তি দেন যে, অভিনেত্রী বিশ্বাস করতেন যে এগুলো ব্যক্তিগত উপহার এবং তিনি জানতেন না যে এগুলো প্রতারণামূলক উপায়ে ক্রয় করা হয়েছে। আগরওয়াল বলেন, “তিনি মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত ছিলেন না, এবং উপহারের উৎস সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন না।”
জাস্টিস আনীশ ডায়ালের প্রশ্ন
জাস্টিস আনীশ ডায়াল, যিনি এই শুনানির সভাপতিত্ব করছেন, ব্যক্তিগত দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, তিনি বলেছেন, “এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য যে উপহার সে পায় তার উৎস জানার কি একটি দায়িত্ব নেই?” মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ২৬ নভেম্বর।
ইডির অভিযোগ: উপহারগুলি অবৈধ প্রাপ্তির অংশ
প্রবিধান কর্তৃপক্ষ (ইডি) অভিযোগ করেছে যে, ফার্নান্দেজ চাঁদ্রশেখরের কাছ থেকে মূল্যবান উপহার গ্রহণ করেছেন যা আদিত্য সিংয়ের স্ত্রীকে প্রতারণার মাধ্যমে লুটিয়ে নেওয়া অর্থ দ্বারা অর্থায়িত হয়েছে। ইডির অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে যে, ২০১৯ সালে ফার্নান্দেজ যখন চাঁদ্রশেখরের অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদনগুলি দেখেছিলেন, তখন তিনি তাদের যাচাই করেননি। আগরওয়াল বলছেন, ফার্নান্দেজ অভিযোগ নিশ্চিত হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে জানানো হয়নি যে তিনি “ক্রাইমের প্রাপ্তি” গ্রহণ করছেন।
সহ-আবেদনকারীর প্রভাব: পিংকি ইরানির ভূমিকায় মন্দবাদ
মামলাটি আরও জটিল হয়ে যাচ্ছে, ফার্নান্দেজের আইনজীবী উল্লেখ করেছেন যে, তিনি সহ-অভিযুক্ত পিংকি ইরানির সাথে যে ইউজিন-কেনো যোগাযোগ করেছেন, সেখানে তিনি ফার্নান্দেজকে চাঁদ্রশেখরের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করছিলেন, তাকে একজন রাজনৈতিক ফিক্সার হিসেবে উপস্থাপন করে। আইনজীবী আরও দাবি করেন, চাঁদ্রশেখরের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পেয়ে ফার্নান্দেজ সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন, যা তার অপরাধমূলক উত্সের সাথে সম্পর্কিত।
আগামী প্রক্রিয়াঃ উচ্চ আদালতে মামলার পরবর্তী ধাপ
যেহেতু মামলাটি চলতে থাকে, ফার্নান্দেজের আইনজীবীরা বলছেন যে চাঁদ্রশেখরের সম্পাদকামূলক ধনসম্পদের উত্স যাচাই না করা একটি অদৃষ্টবিহীন ভুল ছিল, অপরাধ নয়। তারা যুক্তি দেন যে, তার ইচ্ছার অভাব তাকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। আদালত ২৬ নভেম্বর ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ, চাঁদ্রশেখরের সঙ্গে তার সম্পর্ক এবং আইনগত দায়িত্ব পুনর্বিবেচনা করতে আবার আলোচনা করবে।
বলিউডের ডাইনামিক্স: এ কেমন শিল্প?
এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে এই প্রশ্ন উঠছে, যে কি করে আমাদের এই শিল্প কর্তৃপক্ষের চোখের সামনেই একজন পরিচিত অভিনেত্রীর সাথে এমন ঘটনা ঘটে? নির্মাতাদের দায়িত্ব কি এখানে অপরিসীম? বলিউডের এই পরিস্থিতি কি শুধু একটি জলঘোলার কাহিনী, নাকি এই পুরো শিল্পের প্রতি আমাদের বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দেয়?