রোজলিন খানের অভিযোগ, মুম্বাইয়ের ইয়াশদীপ সমাজে প্রতিবেশীদের দ্বারা নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছিল তাকে, যা তাকে অবশেষে ফ্ল্যাট বিক্রি করে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করছে। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে পুলিশের কাছে অভিযোগে, অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকতে চান না এবং জীবনযুদ্ধে আরও বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। এই পরিস্থিতি চলচ্চিত্র শিল্পের অন্ধকার দিক এবং সমাজের এক অংশের মনোবিজ্ঞানকে ফুটিয়ে তোলে, যা অভিনেত্রীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এবং অনুরাগীদের সামনে এক নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করছে: নিরাপত্তা ও শান্তি পেতে কি একজন তারকা হিসেবে সবকিছু ছাড়তে হয়?
বহাল তালোপুরের নাটক: রোজলিন খানের সংগ্রাম
বলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী ও ইনফ্লুয়েন্সার রোজলিন খান সম্প্রতি মুম্বাইয়ের অশিওয়ার পুলিশ স্টেশনে গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ইয়াশদীপ সোসাইটির কিছু বাসিন্দার সাথে নিয়মিত সংঘাতের কারণে তিনি তার ফ্ল্যাট বিক্রি করে অন্য একটি এলাকায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোজলিন খানের অভিযোগে বলা হয়েছে, “যখন থেকে আমরা এই ফ্ল্যাটটি কিনেছি, তখন থেকেই সোসাইটির সবাই আমাদের নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল। কিন্তু আমরা প্রচুর ব্যস্ত ছিলাম এবং খুব কমই সোসাইটির সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম।” এই ঘটনা নিয়ে তিনি প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ করেছেন, সেখানে তিনি নিজেকে নিরাপত্তাহীন বোধ করার কথা জানান। তিনি লিখেছেন, “আমি এমন একটি স্থানে বসবাস করতে পারি না যেখানে আমার নিরাপত্তা বিপন্ন এবং আমাকে নোংরা খেলা খেলতে বাধ্য করা হচ্ছে।”
একগুচ্ছ সামাজিক সমস্যার মুখোমুখি
রোজলিন আরও বলেছেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি ফ্ল্যাটটি বিক্রি করব এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাজে চলে যাব। এখনও অনেক যুদ্ধ জিততে বাকি রয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেছেন যে, স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি টুইট করে জানান যে, তাকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে উঠতেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। “এমন পরিস্থিতিতে, চালক আমার অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে দিয়েছিলেন, যখন আমার প্লেটলেট কাউন্ট ৩৭,০০০-এর নিচে নেমে যায়। আমাকে রাত ২টায় জরুরি পরিষেবায় পৌঁছনোর জন্য প্রচণ্ড অভাবের মাঝে হাঁটতে হয়েছিল।”
সামাজিক মিডিয়ায় বিতর্কের জন্ম
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, যেসব বাসিন্দা তাকে অত্যাচার করছে, তারা অবৈতনিকভাবে তার জীবনকে দুর্ভোগে ফেলে দিচ্ছেন। খালাস পাওয়ার জন্য তিনি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীকে এই ঘটনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এর ফলে এই ঘটনা সামাজিক এবং রাজনৈতিক উভয়ক্ষেত্রে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
বলিউডের গতিধারা: খ্যাতি কি সত্যিই সুরক্ষা দেয়?
রোজলিন খানের এই অভিযোগগুলো বলিউডের যুগপৎ সাফল্য এবং চ্যালেঞ্জগুলোর একটি দৃষ্টান্ত। তিনি যে শান্তি এবং নিরাপত্তা চান, সেটি সব অভিনেতাদের জন্য প্রয়োজন, তবে বর্তমানে তা কতটা বাস্তবসম্মত? খোলামেলা আলোচনা খুবই জরুরি, যেখানে অভিনেতারা নিজেদের অসমর্থিত মানসিকতা এবং শারীরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।
জি, রোজলিনের ঘটনা আমাদের এনে দেয় সেই এক আশ্চর্য বাস্তবতা, যেখানে কোমলতম অভিনয়ে যারা শাসক, তাদের জন্যও সমাজের নাগরিক হিসাবে লড়াই করতে হয়। সাবলীলতা, নিরাপত্তা এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন শুধুমাত্র নাম, খ্যাতি, অথবা টলিউডের আলোচনার বিষয় নয়; বরং এটি উচিত সবার অধিকার।