বলিউডের নন্দিত অভিনেতা অজয় সিং পালের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে চলচ্চিত্রের পেছনের গল্প ও সমাজের প্রতি প্রভাব। তিনি জানান, নারীরা তাকে সহজেই চিনতে পারলেও পুরুষদের মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে। তাঁর ধূমপানের অভ্যাসের কথা সরাসরি উল্লেখ করে, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাফল্য পাওয়ার কাহিনীও তুলে ধরেন। নিজের কাজের প্রতি আবেগ ও ভ্রান্তির প্রতিফলন ঘটে এই কথোপকথনে, যা বর্তমান সিনেমার গল্প বলার ধরণে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক।
একা একজন ‘নন্দু’: আজয় সিং পালের বলিউডে দোর্দণ্ডপ্রতাপের কাহিনী
তিনি হলেন সেই অভিনেতা, যিনি বছরের সবচেয়ে বেশি সময় স্ক্রীনে দেখা দেন। আমরা আলোচনা করছি আজয় সিং পাল সম্পর্কে, যিনি বিখ্যাত এন্টি-Smoking বিজ্ঞাপনে ‘নন্দু’ চরিত্রে অভিনয় করেন, যেখানে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার। সম্প্রতি মিড-ডে’র মোয়াঙ্ক শেকরের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি কিছু আগ্রহজনক মন্তব্য করেছেন।
আজয় সিং পাল এই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যে মহিলারা তাঁকে পুরুষদের থেকে অনেক বেশি দ্রুত চিনতে পারেন। তিনি বলছেন, “পুরুষেরা সব সময় জিন্দাগির কশ্মকশে আটকা পড়ে থাকেন।” সেইসাথে বলেন, মানুষ প্রায়ই বিভ্রান্ত হয়ে যায় তাঁকে দেখে এবং ভাবেন, “ও কি নন্দু? এবং যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে সে ভোপালে কি করছে?”
সিগারেটের পেছনের সত্যি এবং চলচ্চিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য
একই সাক্ষাৎকারে যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কি আসল জীবনে সিগারেট খাচ্ছেন? তখন অদ্ভুতভাবে উত্তর দেন, “আমি খুব, খুব কখনও কখনও, ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে, জমের সময় সিগারেট খাই। আমি কখনও পাবলিকে এটা করব না।” আরেকটি আকর্ষণীয় তথ্য হল, আজয় পছন্দ করেন না রীল শুটিং করতে এবং বিজ্ঞাপনের ঐতিহাসিক লাইনের পুনরাবৃত্তি করতে।
২০২০ সালে, বলিউড হাঙ্গামার সঙ্গে এক কথোপকথনে আজয় সিং পাল বলেছিলেন, যে তিনি প্যাড ম্যান (২০১৮) চলচ্চিত্রে একটি ছোট ভূমিকায় কাজ করেছেন, যা তাঁকে বিজ্ঞাপনে সুযোগ পেতে সাহায্য করে। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “সত্যি বলতে ১০০ জনের মধ্যে ২০-২৫ জনই জানতে পারে আমি নন্দু। তবে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে নন্দু তো একটি বড় তারকা, যে মুম্বাইয়ে থাকে এবং তাঁকে ভোপালে দেখা যাবে না!”
বদলানোর একটি গল্প: স্থানীয় অভিনয় শিল্পীরা
আজয় তার পুরনো সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “শ্রুতি মহাজন, প্যাড ম্যানের কাস্টিং ডিরেক্টর, ভোপালে এসে স্থানীয় অভিনেতাদের জন্য অডিশন নিচ্ছিলেন। তাঁরা মুম্বাই থেকে অভিনেতাদের নিতে চাননি। প্রথমে আমাকে ১০ দিনের জন্য চাওয়া হয়েছিল। প্রথম ৮ দিন, আমাকে একটি ক্যামেরার পেছনে সেইCrowd সীনগুলোতে কাজ করতে দেওয়া হয়। কিন্তু ৯ম দিনে, দু’টি সাঁতারের দৃশ্যে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক অংশ দেওয়া হয়।” তিনি আরও জানান, “যখন তারা বুঝতে পারে যে আমি ভালো অভিনয় করতে পারি, তখন তাদের মনোভাব অনেক বদলে যায়।”
এই সাক্ষাৎকারে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে আজয় সিং পাল বলেন, “১৫ দিন পরে তারা কল করে জানায় যে তারা চাইছেন একটি বিজ্ঞাপনে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে কাজ করতে। আমি রাজি হই এবং এভাবেই আমি সেই বিজ্ঞাপনের অংশ হলাম।”
চলচ্চিত্রের পরিবর্তন ও সমাজের প্রতিফলন
আজয়ের এই কাহিনী আমাদের বলে দেয় যে, বলিউডে স্থানীয় প্রতিভা কতটা গুরুত্ব পায় এবং সিনেমার মাধ্যমে সমাজের চিত্র তুলে ধরার একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। যেখানে একদিকে অভিনয় শিল্পীরা চেতনায় পরিবর্তন আনতে পারেন, অন্যদিকে দর্শকের চিন্তাভাবনাও পরিবর্তিত হচ্ছে ধীরে ধীরে।
এছাড়াও, আজয়ের কাহিনী চলচ্চিত্রের দুনিয়াতে কেমন করে সমাজের উর্ধ্বে উঠে আসার সুযোগ তৈরি করছে, যেখানে স্থানীয় প্রতিভার মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে এবং অগ্রগতির নতুন চিত্র ফুটে উঠছে।>