প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে 77তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে গ্র্যান্ড প্রিজ জিতেছে “অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট”, যা নভেম্বরে মুক্তির জন্য প্রস্তুত। রানাদাগতর পরিচালনায়, এই সিনেমাটি বহু আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। পরিচালক পায়েল কাপাডিয়া বলেন, এটি ভারতের সিনেমার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। সিনেমাটি তিন নারীর জীবনের জটিলতা ও সম্পর্কের গভীরতা ফুটিয়ে তুলবে, যা দর্শকদের মনে দাগ কাটবে। বলিউডের বর্তমান চিত্রের নিরিখে, এই ধরনের মৌলিক কাহিনী এবং নারীদের প্রতিনিধি হিসেবে সিনেমার প্রসারিত হওয়া প্রমাণ করে দর্শকদের নতুন গল্পের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বোলিউডের নতুন দিগন্তে আলোকিত এক পালা: ‘অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট’
বোলিউডের চলচ্চিত্রে এক নতুন ইতিহাস রচিত হলো। ‘অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট’ নামে ছবিটি ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে গ্র্যান্ড প্রিক্স জয় করে প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে পুরো বিশ্বকে মুগ্ধ করেছে। ছবিটি ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে মুক্তি পেতে চলেছে, এবং এটি দেশজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে গণ্য হবে। পরিচালক পায়াল কাপাডিয়া ও তাঁর টিম দীর্ঘ আন্তর্জাতিক উৎসবের পর ছবিটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে আসছে।
রানা ডাগ্গুবাতির স্পিরিট মিডিয়ার মাধ্যমে বিতরণ করা এই ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের পর থেকেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। টেলিউরাইড, টরন্টো, নিউ ইয়র্ক এবং সান সেবাস্তিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবেও এটি প্রদর্শিত হয়েছে। কিছুদিন আগে, ছবিটি ফ্রান্সের ১৮৫টি সিনেমা হলে মুক্তি পায় এবং সেখানে এটি দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
গোটা ভারতের জন্য এক উজ্জ্বল প্রতীক্ষা
পায়াল কাপাডিয়া, ছবির পরিচালক, ভারতীয় মুক্তির বিষয়ে বলেন, “এই নভেম্বরে দেশের মুক্তির জন্য আমি খুবই উত্তেজিত! আমি আশা করছি অনেক মানুষ এটি দেখতে আসবেন।” ছবিটি মুম্বাই শহরের পটভূমিতে গড়ে উঠেছে। এতে নার্স প্রবাহার কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, যিনি তাঁর বিচ্ছিন্ন স্বামীর কাছ থেকে একটি অপ্রত্যাশিত উপহার পান এবং এটি তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
ছবির অন্য প্রধান চরিত্রগুলো মানেই দুটি মহিলার ব্যক্তিগত জীবন এবং তাঁদের জীবনবোধ। কর্মিষ্ঠ পার্বতী, যে হাসপাতালের রান্নার দায়িত্বে থাকে, প্রবাহার বন্ধু এবং গোপন সঙ্গী। তিনজনের কাহিনী একটি সমুদ্র সৈকতে চলে যায়, যেখানে তাঁরা নিজেদের জীবন নিয়ে গভীর ভাবনাচিন্তা করতে পারে।
বোলিউডে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও সংবেদনশীলতা
রানা ডাগ্গুবাতি এই ছবির বিষয়ে জানান, “আমরা ‘অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট’ ছবিটি ভারতীয় দর্শকদের জন্য আনতে পেরে খুবই আনন্দিত। এটি আমাদের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ, যাতে আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আকর্ষণীয় এবং স্পর্শকাতর কাহিনীগুলো জনগণের সামনে আনতে পারি।”
ছবির প্রযোজকরা, যাঁরা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাপাডিয়ার সাথে কাজ করেছেন, তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ এই ছবিটি দর্শকদের সামনে আসতে চলেছে। ছবিটি একাধারে বিভিন্ন ভাষা এবং ব্যক্তিগত কাহিনীকে মিশিয়ে একটি চিত্তাকর্ষক এবং আত্মপ্রকাশ ভিত্তিক আলোচনা তুলে ধরবে, যা দর্শকদের জীবন সম্পর্কে গভীর চিন্তার সুযোগ দেবে।
বোলিউডের জন্য নতুন paradigma
এই ছবিটি মুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় চলচ্চিত্রে শিল্পীদের কাজের বৈচিত্র্য এবং নারীদের চরিত্রের উন্নয়নকে আরও সামনে নিয়ে আসবে। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই তুলে ধরতে পারবো, যা আজকের বোলিউডের প্রয়োজন।’অল উই ইম্যাজিন অ্যাজ লাইট’ আমাদের কেবল বিনোদন দেবে, বরং আমাদের জীবনের নানা জটিলতার প্রতিফলনও ঘটাবে।