বিগ বস ১৮-এর হোস্ট সালমান খানের কাছে পেটা একটি খোলামেলা চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে অনুরোধ করা হয়েছে শোতে প্রাণী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য। শোতে একটি গাধার উপস্থিতি নিয়ে ঘটে যাওয়া বিতর্কের পর পেটা জনসাধারণের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছে। গাধার জন্য চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করে পেটা বলেছে, এমন একটি পরিবেশে প্রাণীদের জন্য ভালো নয় এবং বিনোদনের জন্য তাদের ব্যবহার অনৈতিক। শোয়ের প্রযোজকদের দয়া দেখাতে আহ্বান জানিয়ে তারা দাবি করেছে, সালমানের উচিত প্রাণী অধিকার রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেওয়া। তাই চলচ্চিত্র শিল্পের এ ধরনের ব্যবহার সমাজে কী বার্তা দেয়, তা ভাবার সময় এসেছে।
বলিউডের একজন চুম্বক: সালমান খানের উপর পশু অধিকারীদের প্রভাব
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা এবং বিগ বস ১৮-এর প্রতিযোগিতার সঞ্চালক সালমান খান, সম্প্রতি পশুদের প্রতি সদয় ব্যবহার নিয়ে একটি নতুন বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছেন। পশুদের নৈতিক আচরণের সংরক্ষণের জন্য কাজ করা সংস্থা, পিটিআই (PETA), সালমানের কাছে আবেদন জানিয়েছে যাতে তিনি শোতে পশুদের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য প্রযোজকদের প্রতি আহ্বান জানান। বিগ বস বাড়িতে একটি গাধার উপস্থিতির মাধ্যমে এক উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা জনমনে বড় রকমের বিতর্ক এবং পশুদের প্রতি আচরণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
PETA-র উন্মুক্ত চিঠি: গাধার সুস্থতার জন্য উদ্বেগ
পিটিআই একটি উন্মুক্ত চিঠি প্রকাশ করেছে, যা সালমানকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। চিঠিটি “বিগ বস থেকে পশুদের দূরে রাখার জন্য জরুরি আবেদন” শিরোনামে এসেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা দৃঢ় উদ্বিগ্ন যে, বিগ বস বাড়িতে গাধাকে রাখা হয়েছে, যা মানুষের পশুদের প্রতি চিন্তাভাবনার প্রতি অশুভ সংকেত।” দর্শকদের অভিযোগ এই বিষয়টি নিয়ে তীব্র হয়েছে। পিটিআই জানাচ্ছে, এটি কেবলমাত্র জনসাধারণের অসন্তোষের বিষয় নয়, বরং এটি পশুদের মঙ্গল সম্পর্কিত একটি গুরুতর সমস্যা।
মিডিয়ার শোরগোল: পশুদের উপর অত্যাচার?
পিটিআই সালমানের কাছে অনুরোধ করেছে যে তিনি প্রযোজকদেরকে অনুরোধ করেন, “আপনি ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী তারকা এবং বিগ বসের সঞ্চালক হিসাবে, সহানুভূতির উদাহরণ স্থাপন করার ক্ষমতা রাখেন। এই প্রভাব ব্যবহার করে আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারেন।” পিটিআই এমন একটি বিষয় উল্লেখ করেছে যে, শো-র সেটের পরিবেশ পশুদের জন্য অত্যন্ত সমস্যাজনক। গাধার মতো শিকারী প্রাণী স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়ে যায় তার চারপাশের প্রভাবে। আসলেই, পশুদের জন্য তাদের মতো বিপর্যস্ত পরিবেশে রাখা সঠিক নয়।
গাধার ভবিষ্যৎ: নতুন তথ্য উদ্ভাসিত
শোনা যাচ্ছে, এই গাধাটি অ্যাডভোকেট গুনরত্ন সাদাভার্তের হাত ধরে বিগ বস অ্যাঙ্গারিতে এসেছে এবং পার্বত্য গাধা দুধের গবেষণার জন্য এটি আনা হয়েছে। কিন্তু পিটিআই স্পষ্ট করেছে যে, গাধা শুধুমাত্র তার ছানা জন্য দুধ প্রদান করে। এর মানে হচ্ছে, এই প্রাণীর উপস্থিতি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ছিল। পিটিআই আবেদন করেছে যে, গুনরত্ন সাদাভার্ত গাধাটিকে পিটিআই ইন্ডিয়ার কাছে সোপর্দ করুন, যাতে তারা এটি মুক্ত করে অন্য উদ্ধারকৃত গাধাদের মধ্যে একটি আশ্রয়ে নিয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ আহ্বান: সালমানের পদক্ষেপ
পিটিআই বরাবর সালমানকে এক কঠোর অবস্থানে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। চিঠির শেষ অংশে বলা হয়েছে, “আপনার এই পদক্ষেপ বিগ বসের জন্য একটি মাইলফলক হতে পারে, যা দেখাবে প্রাণীদের প্রতি আমাদের দয়াদৃস্টি এবং সম্মান প্রদর্শন করে।” বিনোদনের জগতের এইসব বিতর্ক জনমনে ইতিবাচকভাবেও প্রতিফলিত হতে পারে, যদি এই ধরনের প্রাণীর ব্যবহার বন্ধ হয়। দর্শকরা এই ধরণের অমানবিক পরিস্থিতি আশা করেন না।
শেষ কথা
সালমান খানের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যদি পশুদের অধিকার রক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ নেন, তা শুধু বিগ বস শোয়ের প্রেক্ষাপটেই নয়, সামগ্রিকভাবে বলিউডের সংস্কৃতি ও দর্শকদের মনোভাব পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। দর্শকদের নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পশুদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, বলিউড হয়তো তার আসল মহিমায় ফিরে আসতে সক্ষম হবে।