বলিউডের সিনেমা জগতের গতিপ্রকৃতিতে এক নতুন আবহ আসছে, যেখানে ভৌতিক কমেডি জনরা ভরপুর সাফল্য পাচ্ছে। ২০২৪ সালের শুরুতেই ‘শैतান’, ‘মুণজ্যা’, এবং ‘স্ট্রী ২’-এর মতো চলচ্চিত্রগুলো বক্স অফিসে বাজিমাত করেছে, এবং এবার দর্শকদের দৃষ্টি ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’-এর দিকে। এ ধরনের গল্পগুলো মানুষের মজা ও ভয়ের অনুভূতি একসাথে নিয়ে আসে, যা যেন বর্তমানে সবার জন্য পছন্দের। শিল্পের বিশ্লেষকদের মতে, সাফল্যের সাথে সাথে আকষর্ণের এই পরিবর্তন সমাজে সিনেমার প্রভাবের প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসছে। আর এখন অক্ষয় কুমারও এই ট্রেন্ডে যোগ দিচ্ছেন, তাঁর নতুন ভৌতিক কমেডি “ভূত বাংলায়” দর্শকদের জন্য নতুন কিছু নিয়ে আসার আশা করা হচ্ছে।
ভৌতিক রসিকতা: বলিউডের হাস্যকর দুনিয়া
একটা সময় ছিল যখন অ্যাকশন, কমেডি এবং প্রেমের গল্পগুলি বক্স অফিসের রাজা ছিল। কিন্তু এবছর সবকিছু বদলে গেছে। ২০২৪ সালের প্রথম হিট ছিল “শैतান”, একটি অতিপ্রাকৃত থ্রিলার। এর পর “মুঞ্জ্যা” এবং “স্ত্রী ২” নামে ভৌতিক কমেডি সমূহের সফলতা। এখন সকলের নজর “ভূলভুলাইয়া ৩” ছবিটির দিকে, যা এই মজাদার ঘরানার একটি বড় দীপাবলি মুক্তি পাবে। আমরা এ সম্পর্কে কিছু বাণিজ্য বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছি।
ভৌতিক কমেডির জোয়ার
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ তারণ আদর্শ যখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি বলেন, “নিশ্চিতভাবেই। এবছর ভৌতিক এবং ভৌতিক কমেডির জন্য একটি দারুণ বছর।” ৭০ এবং ৮০-এর দশকে যখন রামসাই এবং মোহন ভাকরি যেসব ভৌতিক চলচ্চিত্র তৈরি করতেন, তখন এই ঘরানাটি জনপ্রিয় ছিল। রাম গোপাল ভার্মা কিছু অমর চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন, কিন্তু এই ঘরানায় খুব কম নির্মাতা এগিয়ে এসেছিলেন।”
ফিল্ম শিল্পের পরিবর্তনশীল মুখ
প্রযোজক এবং চলচ্চিত্র ব্যবসায় বিশ্লেষক গিরিশ যোহর সহমতের স্বরে বলেন, “ভৌতিক চলচ্চিত্রসমূহ, ‘ভেরানা’ (১৯৮৮) ও এর আগে থেকেই সাফল্য পাচ্ছে এবং এটি একটি লাভজনক ঘরানা।” তিনি আরও বলেন, “মানুষ ভয় পেতে এবং হাসতে পছন্দ করে। কারণ যদি ভয় বেশি হয়, তাহলে হাসি অনিবার্য।”
জাতীয়ভাবে জনপ্রিয়
ট্রেড বিশ্লেষক অতুল মোহন জানিয়েছেন, “ভৌতিক এবং ভৌতিক কমেডি একটি প্যান-ইন্ডিয়া ফেনোমেনন। এটি শুধুমাত্র মৌসুমের ফ্লেভার নয়, বরং জাতির ফ্লেভার!” কোভিড পরবর্তী সময়ে বক্স অফিস ফিরে এসেছে “ভূলভুলাইয়া ২” (২০২৩) দিয়ে। এই ভৌতিক কমেডি সিনেমাগুলি বিরাট সাফল্য পেয়েছে।
আকর্ষণীয় লোকেটিং
এই ধারার জনপ্রিয়তা নিয়ে সাড়া দিয়ে, তারণ আদর্শ বলেছেন, “এমনকি ‘তুম্বাড’ পুনঃমুক্তিতে অনেককে অবাক করেছে। এটি প্রমাণ করে যে এর জন্য একটি অডিয়েন্স আছে।”
অক্ষয় কুমারের আগমণ
অতুল মোহন পর্যালোচনা করেছেন, “এখন এমন অবস্থায়, অক্ষয় কুমারও একটি ভৌতিক কমেডি সিনেমা ঘোষণা করেছেন। ‘ভূত বাংলা’, পরিচালক প্রিয়দর্শনের সাথে এবং এই ছবিটি তাকে বক্স অফিসে নতুন করে টার্ন করতে পারে।”
প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন
গিরিশ যোহর উল্লেখ করেছেন, “অক্ষয় কুমারের সাম্প্রতিক ছবিগুলি কাজ করেনি। তবে তিনি প্রিয়দর্শনের চলচ্চিত্রগুলি নিয়ে আসছেন যা তাকে ২০০০ সালে ‘হেরা ফেরি’ এর মাধ্যমে একটি ভিন্ন মূল্যে নিয়ে গেছে।”
নতুন সম্ভাবনার পথে
বক্স অফিসের এই পরিবর্তনশীল পরিবেশের মধ্যে, রাজ bansal বলেছেন, “এখনই বলা সম্ভব নয়।” ফলে, বলিউডের ভৌতিক কমেডির পরিবেশ এখন সারা দেশে একটি নতুন উদ্দীপনা তৈরি করছে।
এটি দেখার বিষয় যে, এই নতুন ধারা ঠিক কতটা সময় দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। দর্শকদের পছন্দের এ পরিবর্তন কি বলিউডের গল্প বলার দক্ষতাকে নতুন রূপরেখায় সাজায়?