মুম্বাই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক প্রতিভাবান গায়ক, যিনি সালমান খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। অভিযোগ, তিনি তাঁর গানকে প্রচার করার জন্য এ ধরনের চরম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ঘটনার ফলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমের ধ্বংসাত্মক প্রভাবে চলচ্চিত্রের প্রাণপ্রদীপকে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আরও স্পষ্ট হয়, বিনোদনের জগতে খ্যাতি অর্জনের জন্য কত দূর যেতে পারে কিছু শিল্পী।
বলিউডের নিরাপত্তা উদ্বেগ: ‘সিকান্দার’ গানের লেখকের কাণ্ড
মুম্বাই পুলিশ মঙ্গলবার একজন উদীয়মান গায়ককে আটক করেছে, যিনি বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি পাঠানোর অভিযোগে গ্রেফতার হন। সালমান খানের প্রতি পাঁচ কোটি রুপি দাবি করার অভিযোগে এই ঘটনা ঘটেছে, যা গ্যাংস্টার লরেন্স বিশনয়ের নামে।
পুলিশ জানায়, রাইচুর, কর্ণাটক থেকে আটক হওয়া সোহাইল পাসা চেয়েছিলেন নিজের লেখনীকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং তার গানকে প্রচারের জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। গত নভেম্বর ৭ তারিখে মুম্বাই ট্রাফিক পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ हेल্পলাইন বেশ কিছু হুমকি বার্তা পেয়েছিল, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে প্রেরক বিশনয় গ্যাংয়ের সদস্য। বার্তায়, সালমান খানকে পাঁচ কোটি রুপি না দিলে তাকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, ‘মেইন সিকান্দার হুঁ’ নামক গানের লেখককে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়।
গায়কের আসল উদ্দেশ্য
মুম্বাই পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চ বলছে, ওই মেসেজ পাঠানোর সময় ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি রাইচুরের দিকে অনুসন্ধান করা হয় এবং একটি টিম পাঠানো হয় কর্ণাটকে। সেখানে তারা ভ্যাঙ্কাটেশ নারায়ণ নামের নম্বরের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে নারায়ণের ফোনে ইন্টারনেট ছিল না। পুলিশ পরে আবিষ্কার করে যে তার ফোনে একটি হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টলেশন OTP এসেছিল, যা আরও তদন্তের দিকে পরিচালিত করে।
নারায়ণ পুলিশকে জানান যে ৩ নভেম্বর, একটি অপরিচিত ব্যক্তি বাজারে তার কাছে এসে ফোন ধার চাইেছিল। তদন্তে জানা যায়, ওই ব্যক্তি নারায়ণের ফোন নম্বর ব্যবহার করে তার নিজের ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টল করতে একটি OTP পেয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ সেই সন্দেহভাজনকে পাসার দিকে নিয়ে যায়, যিনি রাইচুরের মানভি গ্রামে বসবাস করেন।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চাপ
পাসা, যিনি উল্লেখিত ‘মেইন সিকান্দার হুঁ’ গানটির লেখক, পুলিশকে স্বীকার করেছেন যে তিনি এই পন্থা গ্রহণ করেছেন তার গানের প্রচারের জন্য। তাকে মুম্বাই নিয়ে আসা হয়েছে এবং তদন্তের জন্য ওয়ার্লি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, সম্প্রতি সালমান খানের বিরুদ্ধে অন্তত চারটি হুমকি মেসেজ মুম্বাই ট্রাফিক পুলিশের হেল্পলাইনে পাওয়া গেছে।
উপসংহার: সাহস অথবা বোকামি?
এখন প্রশ্ন হল, কি ধরনের চিন্তা-ভাবনা আজকের প্রজন্মের মধ্যে তৈরি হচ্ছে? চলচ্চিত্রের জগতে একটি গানের জন্য এমন অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা কি আসলে শিল্পের জন্য ক্ষতিকর? বলিউড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, এই ধরনের ঘটনা কেবল একটি গানকে প্রচার করার জন্য নয় বরং শিল্পের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিটিও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সিনেমার কাহিনী বদলাচ্ছে, তবে যে ধরনের সক্রিয়তা বর্তমান শিল্পীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, তা আমাদের আরও চিন্তা করতে বাধ্য করছে।