প্রবীণ সঙ্গীত পরিচালক ভিপিন রেশাম্মিয়ার মৃত্যুর খবর বলিউডে শোকের ছায়া ফেলেছে। তিনি ৮৭ বছর বয়সে ১৮ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। হিমেশ রেশাম্মিয়ার পিতা হওয়া সত্ত্বেও, ভিপিন সঙ্গীতের মূলধারায় প্রবেশ করেননি, বরং তার ছেলের সংগীত প্রতিভা বিকাশে সমर्पিত ছিলেন। টিভি শোতে সঙ্গীত দেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে চিনিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু হিমেশের সাফল্যই ছিল তার প্রধান প্রাধান্য। ভিপিনের বিদায়ে বলিউডের পারিবারিক বন্ধন এবং নেপোটিজম আবারও আলোচনায় এসেছে, যেখানে শিল্পের প্রতি একধরনের অবিচ্ছিন্ন দায়িত্ব মহান শিল্পীর সন্তানদের সাফল্যের অঙ্গীকার।
নস্টালজিয়ার সঙ্গীত: ভিপিন দেশম্মিয়া এবং বলিউডের বর্তমান পরিস্থিতি
প্রখ্যাত সুরকার ভিপিন দেশম্মিয়া, যিনি সুপরিচিত সুরকার ও অভিনেতা হিমেশ দেশম্মিয়ার পিতা, ১৮ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ে ৮৭ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছেন। সঙ্গীত জগতে একজন অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ভিপিন, তার পুত্রের সফল ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর শেষকৃত্য ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
ভিপিন দেশম্মিয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছিলেন এবং মৃত্যুর আগেও মুম্বাইয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর শেষকৃত্য জুহুতে অনুষ্ঠিত হবে, এবং মৃতদেহ শিগগিরই বাড়িতে আনা হবে।
বন্ধুত্ব ও প্রিয় স্মৃতি
ভিপিনের পারিবারিক বন্ধু বাণীথা ঠাপার, যিনি deceased এর সাথে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক রেখেছিলেন, ইটাইমসের সাথে তার শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “তিনি কোকিলাবেন হাসপাতালের ভর্তি ছিলেন এবং আজ সন্ধ্যা ৮.৩০ মিনিটে চলে যান। আমি একটি পারিবারিক বন্ধু, বরং পরিবারের মতো। আমি তাকে পাপা বলে ডাকতাম যখন তিনি টিভি সিরিয়াল তৈরি করতেন। পরে, তিনি একজন সঙ্গীত পরিচালক হলেন, এবং হিমেশও তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করলেন। আমরা খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেয়ার করি।”
ভিপিনের সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অবদান
যদিও ভিপিন দেশম্মিয়া একজন প্রতিভাবান সুরকার ছিলেন, তিনি পুরো সময়ের জন্য সঙ্গীতে ক্যারিয়ার গড়তে বেছে নেননি, বরং নিজের পুত্র হিমেশের দক্ষতা উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছিলেন। যদিও ভিপিন তার টিভি শোগুলোর জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, তাঁর প্রধান অগ্রাধিকার সবসময় ছিল হিমেশের শিল্পী বিকাশ সমর্থন করা। তিনি একবার প্রকাশ করেছিলেন যে হিমেশের সঙ্গীত প্রতিভায় গর্বিত, যা ছোটবেলা থেকেই পরিস্কার ছিল।
প্রথম চলচ্চিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক
যারা ভিপিনের অবদান জানেন না, তাদের জন্য তিনি হিমেশ অভিনীত ‘দ্য এক্সপোজ’ (২০১৪) এবং ‘তেরা সুররুর’ (২০১৬) সিনেমার সঙ্গীত নির্মাণ করেছিলেন। তিনি ১৯৯০ সালের চলচ্চিত্র ‘ইনসাফ কা সূর্য’র জন্যও সঙ্গীত প্রস্তুত করেন, যা আজও মুক্তির অপেক্ষায়। হিমেশ একবার জানিয়েছেন যে, তাঁর পিতার এবং সালমান খানের মধ্যে পরিকল্পিত একটি সহযোগিতা পরে তাঁর নিজস্ব বড় ব্রেক হিসাবে ১৯৯৮ সালের চলচ্চিত্র ‘জাব প্য আর কিয়া তো ডারনা কিয়া’তে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে শুরু হয়।
নতুন প্রজন্মের প্রভাব
বর্তমানে বলিউডে প্রকৃত শিল্পীর অভাব দেখা যাচ্ছে, যেখানে দুর্লভ সঙ্গীত প্রতিভারা হারিয়ে যাচ্ছে। ভিপিন এবং হিমেশের সম্পর্ক সঙ্গীতকে পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরেছে, যা বর্তমান সময়ে অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে যেমন দেখা যাচ্ছে না। হিমেশের সঙ্গীত হয়তো হারাতে বসেছে, তবে ভিপিনের সৃষ্টির উজ্জ্বল স্মৃতি আমাদের মনে অধ্যাবসায় করবে।
শেষ মন্তব্য
ভিপিন দেশম্মিয়া একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ইতিহাসের অংশ হয়ে রইলেন, যিনি নিজের ছেলের জন্য নিজের কাব্যিক কল্পনাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন। বলিউডের বর্তমান চিত্রে ভিপিনের সমর্থন এর চেয়ে আলাদা কিছু বলে দেয়। এটি একটি পরিবারের দায়িত্ব, যা সঙ্গীতের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে পারে।