বলিউডের বড় তারকা আমির খান তার মেয়ে ইরা খানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য যৌথ থেরাপিতে যাচ্ছেন। একটা সম্প্রতি কথোপকথনে আমির জানান, তার প্রতিষ্ঠানের প্রতি অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়েই তিনি তার তিন সন্তানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো মিস করেছেন। পিতৃত্ব ও শৈশবের সেই ক্ষতকে সাড়া দিতে তিনি এখন সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন, যা শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, পুরো সমাজের মানসিক স্বাস্থ্য ও সংবেদনশীলতার উপর গুরুত্বপূর্ণ আলো ফেলে।
অভিনয়ের আড়ালে: সম্পর্কের জোড়াতালি ও মনের স্বাস্থ্য
বলিউডের তারকা আমির খান সম্প্রতি তার সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি ও তার মেয়ে ইরা খান একসাথে থেরাপি সেশন করাচ্ছেন তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য। একটি নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া ভিডিওতে আমির ইরা ও ডাক্তার Vivek Murthy’র সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করেছেন।
থেরাপি: সম্পর্কের পুনর্নিমাণের চাবিকাঠি
আমির খান বলেন, “থেরাপি খুবই সহায়ক। আমি মনে করি, ইরাই আমাকে এই পথে ঠেলে দিয়েছে। আমি এটি পরামর্শ দেব সকলের জন্য যারা এর প্রয়োজন অনুভব করেন। এটি আমার জন্য সহায়ক হয়েছে। আসলে, আমরা দুজনেও একসঙ্গে থেরাপিতে যাচ্ছি। আমরা আমাদের সম্পর্কের জন্য একজন থেরাপিস্টের কাছে যাচ্ছি। যাতে আমাদের সম্পর্কটিকে আরও ভালো করা যায় এবং বছরের পর বছর ধরে থাকা সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়।”
একটি বাবার উন্মুক্ত আলোচনা
রিয়া চক্রবর্তী’র পডকাস্ট “চ্যাপ্টার ২”-এ একটি স্বচ্ছ আলাপন করতে গিয়ে, আমির খান তার সন্তানদের জীবনে না থাকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, এটাই তার চলচ্চিত্র শিল্প ত্যাগের একটি কারণ। তিনি বলেন, “প্যান্ডেমিক আমাকে আমার অগ্রাধিকার সম্পর্কে কঠিন জাগরণ দিয়েছে। আমি আমার তিন সন্তানের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো মিস করেছি।”
সন্তানদের সংগ্রামের কথা মনে করে
আমির খান স্মরণ করেন, তার অনুপস্থিতির কারণে তার সন্তানদের কী ধরনের সংগ্রামের সম্মুখীন হতে হয়েছে, এবং এ নিয়ে গভীর আফসোস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ইরা তখন হতাশার সঙ্গে সংগ্রামী ছিল, এখন সে অনেক ভালো। কিন্তু তখন সে আমাকে প্রয়োজন ছিল। জুনায়েদের জীবন আমি দেখি না, আর আজ হয়তো সে তার জীবনের শেষ বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।”
বিশেষ সম্পর্কের পুনর্ষাণ
ইরা হলো আমিরের প্রথম স্ত্রীর রিনা দত্তের কন্যা, এবং তাদের একটি পুত্র জুনায়েদও রয়েছে। তাদের ডিভোর্স হয় ২০০২ সালে। ইরা ২০১৯ সালে তার পরিচালনায় *মেডিয়া* নাটকটি পরিচালনা করেন। আমিরের দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণ রাওয়ের সঙ্গে তার একটি পুত্র, আজাদ রাও খান, যাকে নিয়ে তাদের বিচ্ছেদের ঘোষণা জুলাইয়ে হয়।
আমির খানের চলচ্চিত্র জীবনের প্রতিফলন
আমির খান তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা বলেছেন, যেখানে তিনি একসাথে ছয়টি প্রকল্পে কাজ করতে উদ্যোগী ছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন তার শেষ ১০ বছরের কাজের সুযোগ সীমিত। তিনি বলেন, “আপনি জীবনের উপর আস্থা রাখতে পারেন না; আমরা হয়তো আগামীকালই মরতে পারি।”
বেসরকারি জীবনে বড় সিদ্ধান্তের আয়োজন
এই কথোপকথনের মাধ্যমে আমির খান আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দাঁড় করাচ্ছেন, তা হচ্ছে পারিবারিক সম্পর্ক এবং মানসিক স্বাস্থ্য। Bollywood-এর গ্ল্যামার এবং সাফল্যের আড়ালে, এমন ব্যক্তিগত সংগ্রাম এক নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি করছে।