আজকের বলিউডের ঝমঝমে পরিবেশে, তনুজার ধর্মেন্দ্রকে চড় মারা ও ‘বেশরম’ বলা সেই পুরনো ঘটনা একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে। অভিনেতাদের পারফরম্যান্সের আবেগ ও সংঘাত তখনও দর্শকদের আকর্ষণ করে, অথচ বর্তমানে টক শো ও সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে কটাক্ষ বাড়ছে। ছবির গল্প বলার ধরন বদলালেও, সঠিক মূল্যবোধের সন্ধানে আমাদের হারানোর কিছু নেই।
আজকের বলিউড: শ্রেষ্ঠত্বের পিছনে লুকিয়ে থাকা এক গভীর কাহিনী
আজকের সময়ে বলিউডের ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা আছে যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় সমস্যা ও সংকটের মধ্য দিয়ে কিভাবে এই শিল্পের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি, তনুজার সাথে ধর্মেন্দ্রর সেই পুরানো ঘটনাটি মনে পড়ে গেল, যেখানে তনুজা ধর্মেন্দ্রকে বেহেশ্তা বলে অপমান করেছিলেন এবং তাকে চড়ও মেরেছিলেন একটি শুটিং সেটে। এটি শুধু একটি ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ছিল না, বরং বলিউডের দ্বৈত মানদণ্ড এবং শিল্পীর আত্মসম্মান নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দিয়েছিল।
বিনোদন শিল্পের মুখোশ
বর্তমান সময়ে আমরা বলিউডে নানা ধরনের চরিত্র এবং ন্যারেটিভ দেখতে পাই, কিন্তু প্রায়শই সেইসব গল্প আমাদের সমাজের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। তনুজা ও ধর্মেন্দ্রর এই ঘটনার মাধ্যমে তৎকালীন সমাজের পাতলা শিরোনাম-মুক্ত চরিত্রগুলোর প্রতি এক প্রকার অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। তনুজার বাহuffman ধন আশ্রয়ী চরিত্রগুলি সমাজের নারীদের সম্পর্কে একটি নতুন ধরণের ধারণা তৈরি করেছিল। আজকের যুগে, যখন আমরা দেখি সিনেমাগুলিতে নারী চরিত্রগুলোর সঙ্গে যৌন হয়রানির বিষয়গুলি সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছে, তখন সেই সময়ের কাহিনী আমাদের ভাবায় যে মূল বিষয়টি কখনও অদৃশ্য রয়ে যায়।
সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিফলন
তনুজা এবং ধর্মেন্দ্রর প্রতি বিতর্ক আমরা বুঝতে পারি যে সিনেমা ও সমাজের মধ্যে এক শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। ভারতীয় সিনেমার দুনিয়া যখন আরো বেশি ভিন্ন ভিন্ন গল্প বলার চেষ্টা করছে, তখন বিভিন্ন প্রজন্মের এবার নতুন প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাই। হয়তো আমরা আজ বেশ কয়েকটি মেগা হিট দেখতে পারি, কিন্তু আসল ব্যাপারটি হল, কি বিষয়বস্তু আমাদের মনে দাগ কাটছে? কিভাবে আমাদের চরিত্রগুলো সমাজকে প্রভাবিত করছে?
বিনোদনের নেপথ্যে থাকা সত্য
আমরা জানি বাংলাদেশের দর্শকরা আলাদা বিষয়বস্তু খুঁজছেন, কিন্তু সিনেমার কাহিনী এবং চরিত্র নির্মাণে কম্পন থাকাটা তো আসল কথা। ধর্মেন্দ্র এবং তনুজার এই ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসার পর মনে হয়, এই ধরনের সম্পর্ক কিভাবে শিল্পী এবং তাঁর মনোভূমির মধ্যে যোগাযোগের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মহাত্মা গান্ধীর ‘মহান নিয়ম’ মনে রেখেও কোনো নাটকীয় ভঙ্গিতে আমরা জীবনের কঠিন সত্যগুলি বলি কি না?
বেশরম থেকে সুশীলতার খোঁজে
নিঃসন্দেহে বলিউডের এ এক অভিনব যুগ যেখানে সামাজিক সচেতনতা নানা স্তরে বিকশিত হচ্ছে। তনুজা ওই সময়ে ধর্মেন্দ্রকে ‘বেহশরম’ বলার মাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে আজকের সিনেমাগুলি সঙ্গে তুলনা করলে যে কোনো চরিত্রের কর্মকাণ্ডেই আমাদের মূল্যবোধ বা সামাজিক শৃঙ্খলাকে সামনে রেখে আগানোর চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। সেটা যতই চ্যালেঞ্জিং হোক না কেন, দর্শকরা এখন সেইসব গল্পের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন যা তাদের চিন্তা ভাবনাকে পরিবর্তিত করে।
শেষ কথা
এইভাবে বলিউডের ইতিহাস আমাদের একটি সমন্বিত বার্তা দেয়। তনুজা এবং ধর্মেন্দ্রর সেই কাহিনী শুধুমাত্র দুই অভিনেতার দ্বন্দ্ব ছিল না, বরং একটি বৃহত্তর সমাজের ভাবনাকে প্রকাশ করে। আজকের বলিউডে পরিবর্তন আসতে থাকলেও, তখনকার মতো আমাদের চরিত্রগুলোকে গভীরভাবে উপলব্ধি করা আবশ্যক। আর শুধু তাই নয়, আমাদেরকে সেইসব সিনেমা দেখতে হবে যে সিনেমাগুলো সমাজের ক্ষয়ে যাওয়া অংশগুলোর প্রতিফলন।