বর্তমান বলিউডের জগতে, ‘লাপাতা লেডিস’ সিনেমায় ‘ফুল কুমারী’ চরিত্রে অভিনয় করা নিটানشی গোয়েল তার ক্লাস ১১-এর ফাইনাল পরীক্ষা মিস করেছেন সিনেমার জন্য। এই ঘটনা আরো একবার প্রমাণ করে, সিনেমা এবং শিক্ষা এবং তাদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ। শিল্পী এবং যুব সমাজের প্রতি এর প্রভাব গভীর, যা সক্রিয়ভাবে আমাদের গল্প বলার ধরণ এবং সামাজিক প্রতিনিধিত্বের কাঠামো পরিবর্তন করছে। ফলে, দর্শকদের ভিন্নতা অবলম্বন করতে উদ্বুদ্ধ করছে।
ফুল কুমারীর ফাস্ট পাস: সিনেমার চোখে নিশ্চয়তা ও হারানোর খেলা
সম্প্রতি, বলিউডের উজ্জ্বল নক্ষত্র নিধান্তি গয়েল ‘লাপাতা লেডিস’ ছবিতে ফুল কুমারীর চরিত্রে অভিনয় করে চমক সৃষ্টি করেছেন। তবে যেটি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে, তা হল, এই ছবির জন্য নিধান্তি তাঁর ক্লাস ১১-এর চূড়ান্ত পরীক্ষা মিস করেছেন। এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন তরুণ প্রতিভার চেষ্টা নয়, বরং সিনেমা জগতের অন্তর্নিহিত চাপ এবং পাবলিক সেক্টরের অপেক্ষা করার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তনের এক শক্তিশালী উদাহরণ।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর মধ্যে এক, স্কুলের পরীক্ষা
নিধান্তি গয়েল জানালেন, জন্মের পর থেকেই তাঁর অভিনয়ের স্বপ্ন ছিল। তবে এসবে সমস্যা হলো, খানিকটা চাপের মাঝে তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে পড়াশোনা এবং অভিনয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করতে। তিনি ভাবেন, “আজকের দিনে সিনেমা শিল্পের সব কিছুই সময় সাপেক্ষ, তাই পরীক্ষা নিয়ে পরে ভাবার সময় কী হবে?” চলচ্চিত্র নির্মাতারা দ্রুত পরিবর্তনশীল দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সবকিছু ঝুঁকির মাঝে ফেলছে।
অভিনেত্রীদের চাপ: স্বপ্নের কি মূল্য?
অভিনেত্রী নিধান্তির এই পদক্ষেপ সমাজে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কিছু সমালোচক বলছেন, “এটা কি সঠিক?” তাহলে কি শিল্পের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে মিস করা প্রয়োজন? আবার অনেকে মনে করেন, এটি একটি নতুন প্রজন্মের উত্তরাধিকার, যেখানে সমাজে নির্মাণাধীন বিশ্ব ছবির কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আজকের সমাজে, সিনেমার প্রতি আগ্রহ এবং প্রভাব বাড়ছে, যার ফলে শিক্ষার প্রতি মনোযোগ হ্রাস পাচ্ছে। কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, “এটি নতুন সমস্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
সিনেমার গল্প বলার পরিবর্তন
বলিউডের সিনেমায় গল্প বলার উপায় পরিবর্তন ঘটছে। আজকের সিনেমাগুলোতে মহৎ গল্পের বদলে আলোচনা হওয়া উচিত। নিধান্তির মাধ্যমে আমাদের দেখায়, তিনি কিভাবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত। চলচ্চিত্র নির্মাতা কিরণ রাও ফুল কুমারীর চরিত্রে জমকালো অভিনয় করেছেন, কিন্তু এর মূল্য কি শুধুমাত্র সুবর্ণ পদকের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে? চলচ্চিত্র শিল্পীরা যখন অভিনয়ের জন্য নিজেদের ছেড়ে দিচ্ছেন, তখন সেটা গতিশীলতার সুযোগ তৈরি করতে হবে।
দর্শকদের পরিবর্তনশীল রুচি
নতুন প্রজন্মের দর্শকরা এখন হৃদয়গ্রাহী চরিত্র এবং সমসাময়িক বিষয়গুলোকে দেখতে চাইছে। স্কুলের পড়াশোনা ও অভিনয়ের মধ্যে সমন্বয় করে কিভাবে একটি তরুনী আজকের প্রচলিত ধারার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে, তা সত্যিই ভাবনার। এত চাপ সম্বন্ধে চিন্তা করলে, একটি প্রশ্ন উঠে আসে, “আসলেই কি এই শিল্পের জন্য মূল্যবান?” নিধান্তির নাটকীয় পদক্ষেপ আমাদের দেখায় যে, গতিশীলতার জন্য প্রস্তুত হতে হবে, যদি আমাদের সমাজে নাটকীয় পরিবর্তন চান।
সিনেমার ভবিষ্যৎ: শিক্ষা অথবা চলচ্চিত্র?
সব কিছু মিলিয়ে, নিধান্তির মতো প্রতিভাবান অভিনেত্রীদের জন্য এই চড়াই-উত্তরায় সময়টা চ্যালেঞ্জিং। শিক্ষার উপযুক্ততা এবং শিল্পের ক্ষেত্রে সুযোগ খোঁজা—কোথায় আছে সঠিক সামঞ্জস্য? পৃথিবী পরিবর্তন হচ্ছে, এবং সিনেমা শিল্পও তার প্রেসক্রিপশন ঠিক করতে পারবে। তবে, প্রশ্ন হচ্ছে এই পরিবর্তনগুলো কি আমাদের শিক্ষার মূল্যায়নে কোনো প্রভাব ফেলে?
এখন সময় এসেছে, আমরা রূপালী পর্দার বাইরেও সঠিক সমীকরণ খুঁজে বের করবো, যেখানে কেবল অভিনয় নয়, বরং শিক্ষাও সমান গুরুত্ব পাবে। এটি একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন এবং বিনোদনের মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করবে।
