বলিউডের নাটক: ‘স্কুইড গেম’ ও ‘লাক’-এর চিত্রনাট্যের নকলের অভিযোগ, সৃষ্টিশীলতার মৃত্যু কি অপরিসীম?

NewZclub

বলিউডের নাটক: ‘স্কুইড গেম’ ও ‘লাক’-এর চিত্রনাট্যের নকলের অভিযোগ, সৃষ্টিশীলতার মৃত্যু কি অপরিসীম?

বলিউড সিনেমা নির্মাতা সোহম শাহের বিরুদ্ধে নেটফ্লিক্স কোরিয়ান শো ‘স্কুইড গেম’-এর প্লেজারিজম অভিযোগের দিকে নজর দিচ্ছে। তার দাবি, এই জনপ্রিয় সিরিজের গল্প তার ২০০৯ সালের ‘লাক’ সিনেমার সাথে মিল রয়েছে, যেখানে প্রধান চরিত্রগুলো আর্থিক সংকটে পড়ে বিপদের মুখোমুখি হয়। নেটফ্লিক্স এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা এই বিষয়ে কঠোর প্রতিরোধ করবে। পারস্পরিক চরিত্র, থিম এবং কাহিনীর অদ্ভুত মিলগুলো কি কাকতালীয়? দর্শকদের রুচি ও চলচ্চিত্রের সমাজ ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এই বিতর্ক।

বলিউডের নাটক: ‘স্কুইড গেম’ ও ‘লাক’-এর চিত্রনাট্যের নকলের অভিযোগ, সৃষ্টিশীলতার মৃত্যু কি অপরিসীম?

বোলিউডে নকলের খেলা: ‘স্কুইড গেম’ নিয়ে বিতর্কে সোহমের অভিযোগ

নেটফ্লিক্স বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তায় ফুলে ফেঁপে ওঠা কোরিয়ান শো ‘স্কুইড গেম’ এর বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগের মুখে পড়েছে। এই অভিযোগটি দায়ের করেছেন বোলিউডের পরিচালক সোহম শাহ। তিনি দাবি করেছেন যে, এই জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের মূলPlotline তার ২০০৯ সালের নাটক ‘লাক’ থেকে অনুপ্রাণিত, যা শ্রুতি হাসানের হিন্দি সিনেমায় অভিষেক ঘটায় এবং এতে পুরুষ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমরান খান। তবে, স্ট্রিমিং জায়েন্ট এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নেটফ্লিক্সের প্রতিরক্ষা

একটি TMZ রিপোর্ট অনুযায়ী, যখন সোহম শাহ নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে এই ‘স্পষ্ট নকল’ এর অভিযোগ করেছেন, তখন নেটফ্লিক্স একটি বিবৃতি জারি করে এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে এবং তাদের দাবি করেছেন যে এতে কোন ভিত্তি নেই। এছাড়াও, তারা জানায় যে ‘স্কুইড গেম’ -এর নির্মাতা এবং লেখক হলেন হোয়াং ডং হিউক, এবং তারা এই বিষয়টি দৃঢ়ভাবে প্রতিরক্ষা করবে। এই অবস্থায়, সোহম শাহ দৃঢ় একটি অবস্থান বজায় রেখেছেন এবং এই মামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মতে, ‘স্কুইড গেম’ এবং ‘লাক’ এর মূলPlot, চরিত্র, থিম, মূড, সেটিং এবং ঘটনাসমূহের ধারাবাহিকতা একেবারে অনুরূপ, যা নিছক একটি co-incidence নয়।

শো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা

‘স্কুইড গেম’ তে ৪০০ জন প্রতিযোগী জড়িত রয়েছে, যারা গভীর আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন, এবং তারা একটি গোপন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে যেখানে তারা জনপ্রিয় কোরিয়ান শিশুদের খেলায় খেলবে। এই খেলায় একটি বিপদজনক মোড় থাকে, যা জীবন এবং মৃত্যুর বিষয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, ‘লাক’ বিশেষ একটি তারকা সংকুলান নিয়ে আসে, যেখানে সঞ্জয় দত্ত, মিঠুন চক্রবর্তী, চিত্রাশি রবাত, ড্যানি দেঞ্জংপা এর মতো অভিনেতারা রয়েছেন, যারা তাদের আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি ‘লাক’ এর খেলায় জড়িত হন, যেখানে পরাজয় মানে মৃত্যু। ‘স্কুইড গেম’ ২০২১ সালে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছিল, যেখানে ‘লাক’ ২০০৯ সালে থিয়েটারগুলিতে মুক্তি পায়।

সমাজে চলচ্চিত্রের প্রভাব

এই বিতর্ক কেবলমাত্র চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি এবং বলিউডের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলির প্রতিফলন নয়, বরং আমাদের সমাজে চলচ্চিত্রের প্রভাবকেও তুলে ধরে। সিনেমাগুলো কিভাবে আমাদের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং মানসিকতার উপর প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। যখন দুটো চলচ্চিত্রের মধ্যে এই ধরনের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়, তখন দর্শকদের কিভাবে একটি নতুন কাহিনীর প্রত্যাশা থাকা উচিত, সেই প্রশ্নও উঠে আসে।

নতুন উদ্ভাবনের প্রয়োজন

আমাদের চলচ্চিত্র প্রেমীদের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের ভাবা উচিত, আমাদের কি নতুন এবং মৌলিক কাহিনীর প্রয়োজন? বলিউড যেন একটি চক্রে বন্দী হয়ে পড়েছে, যেখানে প্রায়শই পুরনো কাহিনীদের নতুন করে বলা হচ্ছে। যেমন ‘স্কুইড গেম’ এর বিষয়বস্তু যেন আরও ভিন্ন হতে পারতো। দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য আরও নতুন ধারণার দরকার, যাতে করে আমাদের শিল্পী এবং নির্মাতারা নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আগ্রহী হন।

বোর্ডমেন্টের মধ্যে এই তরঙ্গ প্রবাহে, বলিউডের উচিত নিজের মেরুদণ্ড খুঁজে পাওয়া এবং একটি নতুন উত্তরাধিকার তৈরি করা, যেখানে সৃজনশীলতা এবং ট্যালেন্টের সঠিক মিশ্রণ ঘটবে।

মন্তব্য করুন