স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় নোনা জল ঢুকে যায় তাদের জমিতে, কারণ প্রশাসনের অবহেলায় বাঁধ ভেঙে পড়ে। বর্ষার দিনে প্রতিবারই বড় বাবুরা মেরামতির নামে শুধু নাটক করেন, কিন্তু কাজের মান এত নিম্ন যে, কৃষকদের ফসল প্রতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোথায় গিয়েছিল সুশাসনের প্রতিশ্রুতি?
বন্যার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ: প্রশাসনের উদাসীনতার চিত্র
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার তাণ্ডব চলছে, যা একদিকে প্রকৃতির অসীম শক্তির প্রকাশ, আর অন্যদিকে স্থানীয় জনগণের দুর্দশার চিত্র ফুটিয়ে তুলছে। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে পূর্বাঞ্চলের কৃষকদের বিশাল ফসলী জমি ডুবে যায় জলাবদ্ধতায়। এর ফলে কৃষির বার্ষিক উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এবং সরকারি সহায়তা ও নীতির বাস্তবায়নে সংকট দেখা দিচ্ছে।
প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি: বাস্তবতার সঙ্গে ব্যবধান
প্রশাসন এই সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করলেও এর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, “প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয় না।” নিত্য নতুন প্রতিশ্রুতি শোনা গেলেও জরুরি মেরামতের ক্ষেত্রে যেসব কাজ হচ্ছে, তার মান অতন্তঃ নিম্নমানের, যা প্রতি বছর বাঁধ ভাঙার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সরকারি কার্যক্রমকে কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ রেখে তাদের কার্যক্রমের স্বরূপ প্রকাশ পায়।
কৃষকদের অবস্থান: কথা কথা নয়, কাজ চাই
রাজনৈতিক নেতাদের উদ্যোগ ভোটের সময়কালেই সীমাবদ্ধ থাকে। জনসভায় এসে তারা কৃষকদের সমস্যাগুলো নিয়ে সমবেদনা জানান, কিন্তু বিপরীত দিকে কৃষকদের ফসল প্রতিনিয়ত ডুবতে থাকে। কৃষকদের মুখে কৃতজ্ঞতার হাসি থাকলেও তাদের মনে ক্ষোভ। তারা এখন শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বরং কার্যকর পদক্ষেপের আশা করছেন।
মিডিয়ার ভূমিকা: একটি সংবেদনশীল প্রতিবেদন
দুর্যোগের চিত্র বর্ণনা করার সময় মিডিয়ার সক্রিয়তা প্রকট থাকে। কিন্তু সরকার যখন অবহেলার পথে পা বাড়ায়, তখন মিডিয়ার কণ্ঠরোধ হয়ে যায় কেন? অতীতে অনেক রাজনৈতিক নাটক অনুষ্ঠিত হয়েছে, এখন প্রয়োজন নতুন নাটকের সূচনা। “সমস্যা সমাধানের পথে আসুন, মানবতার জয়গান গাই!”—এমন প্রত্যাশার মধ্যে নতুন কার্যক্রমের প্রয়োজন রয়েছে।
পাবলিক অনুভূতি: শান্তি বা প্রতিশ্রুতি?
জনসাধারণের রাজনৈতিক অনুভূতি বরং কঠিন মনে হলেও উদ্বেগ ও হতাশায় তারা চরম অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। সমাজবিদদের মতে, জনতা উত্সাহ প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করে না, তারা সক্রিয় ভূমিকা চাইছেন। তাদের প্রয়োজনীয়তা নেতাদের কাছে তুলে ধরার সময় এসেছে। কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? এখন প্রয়োজন একটি সঠিক আন্দোলনের, না হলে জনগণের অধিকারও হুমকির সম্মুখীন হবে।
সমস্যার সমাধানে আসবে কি নতুন দিশা?
এই প্রেক্ষাপটে সরকারের এবং প্রশাসনের ভাবতে হবে, কৃষকদের কণ্ঠস্বর রক্ষার জন্য তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সঙ্গে সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে মোকাবিলা জরুরি। শেষ পর্যন্ত, মনে রাখতে হবে—’আশ্রু প্রবাহের স্থানে আরাধনা হয়’, কিন্তু তা কি সেই কৃষকের মৌলিক জমি রক্ষার জন্য যথাযথ? প্রশাসন ও নেতাদের উচিত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে সমস্যা সমাধানে সহযোগিতার হাত বাড়ানো।