ভাটপাড়া পৌরসভার প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি অশোক সাউকে গুলিবিদ্ধ করার ঘটনা, যেন আমাদের সমাজের রাজনৈতিক নাটকের একটি নতুন ঘটনার সূচনা। চায়ের দোকানে বসে, তিনি কি ভেবেছিলেন, নিরাপত্তা আর স্বস্তির কোন সম্পর্ক আছে? রাজনৈতিক অস্থিরতা আর সংঘর্ষের আবহে, এক অবিস্মরণীয় অবসাদ সৃষ্টি করে যাচ্ছে এই সন্ত্রাস, যে আমাদের শাসন ব্যবস্থার মৌলিকত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। সুতরাং, জনগণের মনে ক্রমশ বেড়েই চলেছে ক্ষোভের স্রোত, যেখানে বিশ্বাসের প্রস্থানে আজকের রাজনীতির রসিকতাকে হাস্যকর মনে হচ্ছে।
ভাটপাড়ার গুলিবিদ্ধ অশোক সাউ: এক রাজনৈতিক সংকটের চিত্র
আজ সকালবেলা একটি চায়ের দোকানে বসে অশোক সাউ, যিনি ভাটপাড়া পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি, গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় সূত্রের মোতাবেক, চা উপভোগ করার সময় কিছু দুষ্কৃতী অতর্কিতে এসে বোমা ফাটিয়ে এবং গুলি ছুড়ে মারলে এই ঘটনা ঘটে। এ ধরনের সহিংসতা আমাদের সমাজের রাজনৈতিক দুর্বলতার একটি চিহ্ন।
দুষ্কৃতীদের সহিংসতা এবং সমাজের নীরব দর্শক
অশোক সাউয়ের উপর এ হামলা একমাত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতার বিষয় নয়, বরং এটি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক বৃহত্তর চিত্র। রাজনৈতিক মঞ্চে যারা নিজের লাভের উদ্দেশ্যে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সমাজের সংগঠন কিভাবে সাড়া দিচ্ছে?
সংকটক্রমিণ সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব
এমন পরিস্থিতির মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য দায়িত্ব কি? অশোক সাউয়ের ওপর এই হামলা একাধিক প্রশ্নের উদ্রেক করে। প্রথমত, রাজনৈতিক হতে গেলেও কেন নিরাপত্তার ব্যবস্থা আগে থেকে গ্রহণ করা হয়নি? দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কতটা মানবিক ও নৈতিকভাবে সঠিক হতে পারে, এবং এ বিষয়ে জনসাধারণ কতটা সচেতন?
জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া এবং নীরবতা
এইভাবে সহিংসতা আমাদের আদর্শের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে। রাজনৈতিক দলের নেতারা কি এ ব্যাপারে সচেতন ও বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করবেন? অথবা তারা সমালোচনা শুনতে প্রস্তুত? সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতার এ দৃশ্যপট কি নতুন কোন আন্দোলন বা ধারণার জন্ম দিতে পারে? জনগণের মধ্যে অসন্তোষ এবং হতাশা প্রতিদিন বাড়ছে।
মিডিয়া এবং জনসাধারণের উপলব্ধি
মিডিয়া সমাজের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরতে চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা কি প্রকৃতপক্ষে সফল? রাজনৈতিক সহিংসতা আমাদের অস্তিত্বের সংকট তৈরি করেছে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস অথবা বিজেপির মধ্যে আসলে কারা দলের জন্য আস্থাহীন? সমাজের উপর তাদের বিশ্বাস কতটা দৃঢ়?
রাজনৈতিক সংস্কৃতির পুনর্গঠন জরুরি
অবশেষে আমাদের মনে রাখতে হবে: পরিবর্তন ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়। যদি এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হয়, তাহলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন অপরিহার্য। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহানুভূতি এবং মানবিকতা কিভাবে পুনঃস্থাপন করা যায়, এ বিষয়ে আমাদের ভাবনা ও উদ্যোগ দরকার।
অশোক সাউয়ের উপর হামলা থেকে আমারা জানতে পারি যে, আমাদের সমাজের বাস্তবতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের নৈতিকতার স্তর কোথায় অবস্থান করছে। রাজনীতি কোনও জীবিকার ক্ষেত্র নয়; এটি মানুষের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ।