শিয়ালদা-এছপ্ল্যানেড মেট্রোর কাজ, যা একটি আধুনিকতার চিত্র তুলে ধরার মুখাপেক্ষী, সেই কাজেই যেন ধসের কাহিনী। একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ে, পানি ঢুকে পড়ে সুড়ঙ্গ; এ তো এক ভ্রষ্টচারিতার চিত্র। প্রশাসনের সহিষ্ণুতার চিত্রে লুকিয়ে আছে মানুষের আতঙ্ক এবং অসহায়ত্ব। মুহূর্তে আস্থা ভেঙে, আলোচনায় এসেছে নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি। সমাজের প্রতি ন্যায়বিচার, সচেতনতার দাবি, কিন্তু যেন আমাদের আলোচনার ডালি এখন শুধুই কৌতুক। কতদিন ধরে চলবে এই সময়ের গণ্ডগোল?
শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রোর নির্মাণ: উন্নয়ন না বিপর্যয়?
সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রোর নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ঘটে যাওয়া একাধিক দুঃখজনক ঘটনা। আশ্চর্যজনকভাবে, সুড়ঙ্গে জল ঢুকে পড়ার কারণে এই প্রকল্পের অগ্রগতি স্তব্ধ হয়ে গেছে, ফলে জনবহুল এলাকা বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাহলে সাধারণ জনগণের এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেবে কে?
কয়েকটি বাড়ির ধস: প্রশাসনের ভূমিকা ও দায়বদ্ধতা
বিশ্লেষণের আলোকে দেখা যায়, মেট্রোর নির্মাণ কার্যক্রমে বাড়িগুলোর ধস আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার অবহেলা নির্দেশ করে। বর্তমানে, কতগুলো বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, তা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। সরকারের মুখ্য কর্মকর্তারা যে ‘উন্নয়ন’ ঘোষণা করছেন, তার পিছনে কি আসলে গৌরবের চিত্র লুকায়িত? এলাকা বিশেষজ্ঞদের মতে, মেট্রোর নির্মাণের এই সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত নেয়ার সহায়ক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণযোগ্য নয়।
জনমানুষের স্বার্থ: কোথায় আমাদের অগ্রাধিকার?
প্রশ্ন উঠছে, সঠিক পরিকল্পনার অভাবের কারণে কি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হবে? একটি প্রকল্পের জন্য কত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে? প্রশাসনের নেতারা ‘মেট্রো’র স্বপ্নের বন্দী, কিন্তু সাধারণ মানুষের হতাশা কি বার বার অবহেলিত হবে? রাজনৈতিক চক্রান্তে সাধারণ মানুষের অস্তিত্ব ক্রমশ মুছে যাচ্ছে।
মিডিয়া এবং জনমত: উপজেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচনার দ্রষ্টব্য
মিডিয়া হঠাৎ করেই এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসছে, যেন তারা আগামী নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য ‘শুভ ট্রেন’ চালানোর দায়িত্ব পালন করছে। শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেডের ধস রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জনগণের গণ্ডগোলের বাস্তবতা এবং প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে থাকা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে গঠনমূলক সমালোচনার এক নয়া ভার্সন তৈরি হয়েছে।
নতুন আন্দোলনের সম্ভাবনা এবং জনগণের চেতনা
জনগণের মধ্যে এখন আলোচনা হচ্ছে, ‘বাড়ি ধসলে মেট্রো হবে না’। এ ধরনের প্রতিবাদ রাজনীতির মধ্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। জনগণের প্রশ্ন, আসলে কি ঘটছে এই মেট্রো প্রকল্পের পেছনে? রাজনৈতিক খেলা কি সত্যিই চলমান? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সমাজের নানা স্তরে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।
মুখোমুখি সমস্যার সম্মুখীন: আমাদের ভবিষ্যৎ কি?
অবশেষে, যখন সংবাদমাধ্যম ও জনগণের মধ্যে আলোচনার সূত্রপাত ঘটছে, তখন প্রশ্ন উঠছে, আমাদের পরিকল্পিত উন্নয়নের পরিণতি কি হবে? অন্ধকারের মধ্যে কিভাবে আলো খুঁজে পাব? শেষ পর্যন্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্ধৃতি মনে করিয়ে দেয়, “জন্মিলে মরতে হবে, কিন্তু লড়াই চলবে।” মেট্রোর নির্মাণ আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে—আমাদের পথের প্রতিবন্ধকতা এবং জল সমস্যা সমাধান করতে হবে।
