গাছ প্রতিস্থাপনের অযুহাতে সরকার যেন নিজের দায় কিছুটা ঝেড়ে ফেলতে চাইছে, অথচ প্রকৃতিগত পরিচর্যার অভাবে মৃতের সঙ্গী এই সব বৃক্ষ। দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনার ধারাবাহিকতা কেবল আমাদের অভিভাবকত্বের অযোগ্যতার চিত্রই তুলে ধরে। রাজনৈতিক নাটকে কেবল সুরম্য দৃশ্যের বাহ্যিকতা, ভিতরকার ভাঙন ও সঙ্কট গোপন।
গাছ প্রতিস্থাপন নিয়ে এই বিতর্ক আমাদের সমাজের চিন্তার গভীরতা সম্পর্কে বহু কিছুর মধ্যে প্রতিফলিত। আইনগত দিক থেকে গাছ প্রতিস্থাপন মানানসই হলেও প্রকৃতির জন্য তা কতটা ক্ষতিকর, সে বিষয়ে আলোচনা খুব কম হচ্ছে। গাছের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক একটি প্রাচীন বিষয়। রবীন্দ্রনাথের লেখায় গাছকে প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, কর্তাদের অহংকারের সামনে প্রকৃতি কতটা অসহায়।
রাজনৈতিক চিত্র এবং জনসচেতনতা
গাছ প্রতিস্থাপন অনেকের মতে রাজনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করছে, পরিবেশ রক্ষার নামে প্রশাসনিকভাবে গাছ কাটা হচ্ছে, যখন আসলে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। মানুষের মধ্যে এই বিষয়গুলো নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন তুলছে— “কীভাবে গাছগুলোকে আমাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রক্ষা করা যায়?”
সরকারপন্থীদের পক্ষ থেকে তবে সেনসেশনালিজম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তাঁরা বলছেন, “গাছ প্রতিস্থাপনের ফলে যুগের পরিবর্তন ঘটছে, সেটি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। কেন আমাদের নতুন ধারণায় আসতে হবে, যেখানে প্রকৃতি এবং দায়িত্বশীলতা একত্রে কাজ করতে পারে!” এই প্রকাশেও রাজনৈতিক কৌশল নিহিত বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এটি একটি গুরুতর সমস্যা, যার গভীরতা এবং প্রভাব আমাদের ভবিষ্যতকে নির্দেশ করে।
মানবতার ও পরিবেশের ভবিষ্যৎ
এই বিতর্ক আমাদের প্রকৃতি ও মানবতার সমন্বয়ের গুরুত্ব পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করছে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “যেখানে আমি নেই, সেখানে কি কিছু হারিয়ে যাচ্ছে?” বর্তমান রাজনৈতিক নেতারা পরিচালনায় থাকলেও সঠিক পরিচর্যার অভাব আমরা অনুভব করছি। গাছ বাঁচাতে না পারলে, আমাদের সভ্যতার অস্তিত্বও কি টিকে থাকবে?
প্রতিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, যদি গাছ পরিবর্তনের মাধ্যমে সঠিক পরিচর্যা করা হয়, তবে তা জাতির স্বাস্থ্য বহনে সহায়ক হবে। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে তা অকার্যকর হয়ে যাবে। আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের কি এসব উপলব্ধিতে সময় লাগবে, নাকি তারা কেবল রাজনৈতিক খেলায় ব্যস্ত रहবেন? এটি নিশ্চিত যে, আগামীর রাজনীতিতে গাছ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে, এবং প্রকৃতির কষ্টও অব্যাহত থাকবে।
শেষ কথা
সুতরাং, যে সাংবাদিকতা গাছকে রক্ষা করতে উদ্যোগী হচ্ছে, সেটি যোজনীয়। তবে আমাদের কি সচেতন হতে হবে? রবীন্দ্রনাথের অমর ভাবনাকে মনে রেখে, আমাদের উচিত প্রকৃতির সঙ্গেও সমান লক্ষ্য নির্ধারণ করা— যেখানে রাজনীতি এবং মানবতা একসাথে নাচে।