আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের পরে রাজ্যের মাটিতে আন্দোলনের পাতা উল্টে যাচ্ছে, যেখানে সরকারি সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি মানুষের চেতনাকে স্তব্ধ করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়াই উঠতে থাকা মিছিলে বিজেপির চাপ বেড়ে চলেছে, যেন সরকারের জিলিপি রাজনীতির মধ্যে নতুন স্বাদের আস্বাদ পাওয়ার লোভ! একদিকে নৃশংসতার নীরব প্রতিবাদ, অন্যদিকে গভীরভাবে বিন্যস্ত রাজনৈতিক খেলা। গায়ে মাথা খোঁজার এই সংসারে যেন মানবতাকেও পাওয়া যায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে নির্যাতিতার সুবিচার কামনা
আরজি কর হাসপাতালে একজন তরুণী চিকিৎসকের ওপর যে বর্বর নির্যাতন ঘটেছে, তা সারা রাজ্যে গভীর বিষাদের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এই দুঃখজনক ঘটনায় ধর্ষণের পর হত্যার মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে, যা আমাদের সভ্যতার এবং নৈতিকতার সংকটের চিত্র তুলে ধরে। দেশের নেতারা যারা দেশপ্রেমের কথা বলেন, তারা বুঝতে পারছেন না যে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় প্রতিরোধ করতে হলে তা অতিব জরুরি।
প্রতিরোধের অগ্নিশিখা
এই ঘটনার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ ও আন্দোলনের আগুন জ্বলছে। ‘অবিচারের বিরুদ্ধে মানুষের ঐক্য’ স্লোগানে হাজারো মানুষ রাজপথে নামছে। প্রতিবারের মতো পুলিশ প্রশাসন আবারও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরী করেছে। জেলা শহর থেকে কলকাতা, সর্বত্রই এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে মিছিল বের হয়েছে, যদিও পুলিশ আন্দোলনের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বিজেপির নেতারা নির্যাতিতার সুবিচারের দাবিতে রাজ্য সরকারকে চাপ দিতে একত্রিত হয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো এই নির্মম ঘটনার মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা প্রকাশ করা। তবে, কেন সরকার আন্দোলনকারীদের কণ্ঠ রোধ করতে চাইছে? এটি কি সমাজের নৈতিক অধঃপতনের বিরুদ্ধে, নাকি সরকারের দুর্বলতা ঢাকার একটি নতুন পদক্ষেপ?
গভীর চিন্তা ও প্রশ্ন
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, যেখানে প্রশাসন ও সমাজ আলাদা দিকে চলে যাচ্ছে, সেখানে বিপদের সংকেত জনমানসে আরও গভীরভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। জনগণ রাজনৈতিক যুদ্ধের মাঝে ধরণের ধাক্কা খাচ্ছে, কিন্তু মানবিকতা কোথাও পিছনে পড়ে গেছে। ‘মানুষের আগে মানুষ’—এই মূল্যবোধ কি কেবল একটি স্লোগান হিসেবে থেকে যাবে, না কি রাজনৈতিক দলের কাছে নৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে?
মিডিয়ার ভূমিকা
এই পরিস্থিতির মাঝে মিডিয়ার অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। তারা কি সত্যিই জনগণের পক্ষে? তারা কি নৈতিকতা এবং সত্যের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, নাকি ক্ষমতাবানদের দোহাই দিয়ে মূল সত্যকে লুকিয়ে রেখেছে? আমাদের জানা দরকার, আমরা আসলে কতটুকু জানি এবং কতটুকু জানতে পারি।
শেষবারের প্রশ্ন
রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে এই নির্মম ঘটনা আবারও আমাদের মনে করিয়ে দেয়—মানবিক সংকটের আধুনিক চিত্র। আমরা কীভাবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবিলা করব, সেটাই আমাদের ভাবনায় প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের অন্তঃস্থল থেকে এই বার্তা প্রতিধ্বনিত হোক—নির্যাতিতার সুবিচার এবং মানবিকতার জয়।