রাজনীতির মঞ্চে নাটকীয়তা যেন নতুন করে রঙিন হচ্ছে, যেখানে মানুষ আর পুলিশ, দুই পক্ষই যেন ভীতির খাঁচায় বন্দি। দুলালের অভিযোগ, এক দিনের জন্যও ভাবেনি যে প্রশাসন এমন নৃশংস হতে পারে। সমাজের এই ভয়াবহ পরিবর্তনে কি কেবল নেতা ও তাদের শাসনের দোষ, নাকি জনগণের নিষ্ক্রিয়তাও দায়ী?
জাতীয় স্বার্থের ভাবনা: পুলিশি অত্যাচার ও নাগরিকের জীবন
বর্তমানে, যখন আমরা সংবাদপত্রের পাতাগুলি খুলি, তখন আমাদের শহরের বিভিন্ন কোণে আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সাক্ষী হয়ে থাকি। দুলালবাবুর কথায়, ‘একসময় ভেবেছিলাম যে আমি মরেই যাব। কোনো পুলিশ অফিসার এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, ভাবতেই পারিনি।’ এই মন্তব্য আমাদের দুঃখজনক বাস্তবতার মধ্যে বাস করতে বাধ্য করছে। পুলিশি অত্যাচার ও নাগরিকের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি কতটা গভীর, তা এই কথাতেই ফুটে ওঠে।
পুলিশি অত্যাচারের চিত্র: রাষ্ট্রের সঙ্কট
এক দিকে, রাজনৈতিক মহল শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলার কথা বলছে, অন্য দিকে পুলিশের হাতে নিরীহ মানুষের নিগ্রহ যেন প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশি অত্যাচার শুধুমাত্র দুলালদের মতো যুবককে কেন্দ্র করে নয়; এটি সমাজের মৌলিক অধিকারকে ব্যষ্টির আশ্রয়ে রূপান্তর করে। এটি কি সভ্য সমাজের চিত্র? আমাদের যে শাসকের কাছে আমরা গর্বিত, তারা কি এই অবস্থার দ্বারা প্রভাবিত নয়? যতই তারা নিজেদের মধ্যে একমত প্রকাশ করুন, বাস্তবতা ভিন্ন।
গণমাধ্যমের দায়িত্ব: তথ্যের সত্যতা
এমন পরিস্থিতিতে, গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তথ্য কি সত্যিই জনগণের স্বার্থে উপস্থাপন করা হচ্ছে? সাংবাদিকদের পেশাগত নৈতিকতা কোথায়? অনেক সময় তথ্য খণ্ডিত বা বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়, যা জনগণকে বিভ্রান্ত করে। তাই জনগণকে তথ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা, কিছুটা বিমূর্ত মনে হয়। বাস্তবতাকে উন্মোচন করা হলেই সঠিক সংবাদ প্রকাশ পাবে।
জনতার জীবন: পরিবর্তন ও প্রতিক্রিয়া
দুলাল এবং তার মতো হাজার হাজার যুবকের সংকেত বোঝায় যে তারা আর নিপীড়িত জীবন যাপন করতে চায় না। এটি কি নতুন আন্দোলনের সূচনা? সামাজিক মিডিয়া এই আন্দোলনের যাত্রাপথ হয়ে উঠতে পারে। পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এই আন্দোলনের প্রভাবই এখন দেখা দরকার।
পাঠকের মননে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা
রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। শুধু পুলিশি ভয়ের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের সাহসী হতে হবে। কেননা, দুলালের বেঁচে থাকার অধিকারও আমাদের। তাই আমাদের নিজেদের পরিবর্তনের জন্য সোচ্চার হতে হবে। ইতিহাস দেখিয়েছে, জনগণের আওয়াজ কর্তৃত্বের কাছে হার মানে না।
নতুন সম্ভাবনার আলো: ভবিষ্যতের দিকে পদক্ষেপ
এখন সময় সচেতন নাগরিক হওয়ার। লড়াই শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত হবে কি না, সেটি সময়ই বলবে। যদি দুলালের গল্প আমাদের সকলের গল্প হয়ে ওঠে, তবেই সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতার পরিবর্তে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।