মহালয়ার দিনে শ্রীভূমিতে দেবীর সোনালি আর্শিবাদ: ভিড়ের মাঝে রাজনীতির দুর্মূল্য স্রোত!

NewZclub

মহালয়ার দিনে শ্রীভূমিতে দেবীর সোনালি আর্শিবাদ: ভিড়ের মাঝে রাজনীতির দুর্মূল্য স্রোত!

মহালয়ার সন্ধ্যায় শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে মানুষের ঢল, যেন প্রত্যাশার মধ্যে মুডি মিনার নির্বাচন। তিরুপতি বালাজির থিমে মা দুর্গার সোনার গয়না শোভিত, অথচ সমাজের বহুমাত্রিক সংকটের বোধগম্যতা রয়ে গেছে অদৃশ্য। এত উল্লাসের মাঝে প্রশ্ন, সরকারী প্রতিশ্রুতির বিষয়টি কি শুধুই সজ্জার নয়?

মহালয়ার দিনে শ্রীভূমিতে দেবীর সোনালি আর্শিবাদ: ভিড়ের মাঝে রাজনীতির দুর্মূল্য স্রোত!

মহালয়ার সন্ধ্যায় শ্রীভূমিতে দেবীর সান্নিধ্যে হাজারো মানুষের উপস্থিতি

মহালয়ার সন্ধ্যায় লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে প্রতিমা দর্শনে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে। প্রতিটি প্রতিমা যেন আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি মূর্ত প্রতীক। এবারের বিশেষ থিম ‘তিরুপতি বালাজি মন্দির’ নিয়ে মা দুর্গাকে সোনালী গয়নায় সাজানো হয়েছে, যা বাঙালির ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কৃতিকে উজ্জ্বল করে তোলে। শ্রীভূমির এই আয়োজন সরকারের সংস্কৃতি নীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

সাংস্কৃতিক মহোৎসবে রাজনৈতিক বিতর্কের আবহ

তবে, দর্শকদের এতো বেশি সমাগম প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষকে আরও প্রবল করছে। আন্দোলনের গন্ধ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে; মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে, সরকারের প্রকল্পগুলির ত্রুটি দেখা যাওয়ার পরে আগামী নির্বাচনে তাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? সমাজের কিছু অংশ মনে করছে, সরকার বিশেষ কিছু কারণে সাধারণ মানুষের প্রতি অবিচার করছে। রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি তুষ্ট রাখার প্রচেষ্টা যেন দিন দিন বাড়ছে।

গভর্নেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে মন্দিরের আল্লুসঙ্গ

এখানে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, ধর্মীয় আচার-আচরণের মধ্যে ‘বিকল্প রাজনীতি’ বা ‘নতুন দৃষ্টিভঙ্গি’ কী সরকারকে কিছু শেখাচ্ছে, নাকি শুধু ভোটের জন্য পপুলিস্ট আয়োজন করছে? একদিকে সরকার ধর্মের প্রতি সমর্থক হতে চাইলেও, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের কল্যাণের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে; এটি একটি নারীবাদী কৌতুক। পরস্পরবিরোধী এই পরিস্থিতিতে মা দুর্গার অনন্য প্রতিমার মাধ্যমে সমাজের ঐক্যবদ্ধতা এবং সংহতির অনুভূতি হাজির হয়।

সামাজিক পরিবর্তন ও গণমানসের প্রতিফলন

দর্শকরা মণ্ডপে এসে শুধু ধর্মের প্রতি তাদের বিশ্বাসই তুলে ধরছেন না, বরং সামাজিক পরিবর্তনের আশায় নিজেদের নতুন কিছু খোঁজার চেষ্টাও করছেন। মানুষ ভাবছে, কতটুকু ধৈর্য্য ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আমাদের সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে? প্রতিমার সৌন্দর্যের বেশির ভাগই জনগণের নেতা ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে দূরত্ব নির্দেশ করে। সত্যিকার অর্থে মাতৃ সম্মাননার পরিবেশনা হচ্ছে, যদিও সমাজের প্রশ্নগুলি স্তব্ধ হয়ে যায়।

মিডিয়া ও রাজনৈতিক প্রভাব

মিডিয়া এই পরিস্থিতি তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সামাজিক মাধ্যমেও বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো, মিডিয়া কি সরকারের আসল অবস্থান তুলে ধরছে? জনগণের কণ্ঠস্বর কি যথাযথভাবে সমাজের আসল ছবি ফুটিয়ে তুলতে পারছে? সমাজের পরিবর্তন প্রতিমা দর্শনে আসা প্রত্যেক মানুষের মাঝে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির চিত্র প্রকাশ করছে। রাজনৈতিক সম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের অনুভূতি প্রায়ই উপেক্ষিত হয়।

চাকমার ঠাকুরের প্যারাডক্স

জাতীয় রাজনীতির মূল প্রবাহ মাঝে মাঝে হতাশায় গিয়ে পৌঁছায়, তবে মহালয়ার সন্ধ্যায় শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের আয়োজন মানুষের ভক্তির রশ্মি প্রদান করছে। এটি ভবিষ্যতের জন্য শুভ পরিকল্পনার পরিচায়ক। সরকার এবং জনগণের মধ্যে দূরত্ব ধীরে ধীরে কমছে, তবে রাজনৈতিক সংকট কি চিরস্থায়ী? এই প্রশ্নের উত্তর কেবল সময়ই দিতে পারে।

মন্তব্য করুন