কালীপুজোতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যেমন অস্পষ্ট, তেমনই রাজনৈতিক দৃশ্যপট। নেতাদের আগ্নেয়গিরির মতো অঙ্গভঙ্গি কিন্তু জনগণের মধ্যে শ্রীচৈতন্যের প্রেম, নাকি আতঙ্ক? বৃষ্টির ছাঁটাকেও যেন আর বিবেচনা করা হচ্ছে না। দুর্নীতির সুনামি আর স্বান্তনা ভাষণ—ভালোবাসা আর রাজনৈতিক নাটকের সুর যেন অবিরাম চলছেই।
রাজনীতির রঙে কালীপুজোর ছায়া
আজ কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। কিন্তু কালীপুজোর দিনে কি আকাশের মুখও ভারী হয়ে থাকবে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা সামাজিক মাধ্যমে। একদিকে মেঘের ঘনঘটা, অন্যদিকে রাজনৈতিক বিতর্কের ঝড় চলমান।
মেঘের সঙ্গেও আলোচনা
রাজ্যজুড়ে কালীপুজোর জন্য মন্দিরগুলো সেজেছে দৃষ্টিনন্দন সাজে, কিন্তু রাজনৈতিক মহলে অশান্তির আবহ বিদ্যমান। সম্প্রতি রাজ্যের কৃষকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে কৃষি আইন সম্পর্কিত বিভ্রান্তি তাদের উপরও প্রভাব ফেলেছে। কালীপুজোর উৎসবে গোপন দ্বন্দ্বের ছাপ অনুভূত হচ্ছে।
রাজনৈতিক জলদসের সংকট
বিজেপির নেতারা কৃষক আন্দোলন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধী অবস্থান নিয়ে মমতার সরকারের সমালোচনা করছেন। তবে, প্রশ্ন উঠছে— সরকারি তহবিল কি সঠিকভাবে ব্যয় হচ্ছে? সরকারের বক্তব্য, “আমরা যতটা সম্ভব করছি,” কিন্তু অতীতে তাদের ব্যর্থতার রেকর্ড স্বচ্ছ।
বিধানসভায় রাজনৈতিক উত্তাপ
যেখানে কালীপুজোর সময় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক উত্তাপও সৃষ্টি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে বাক্যবিনিময় ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সভাগৃহে এই বিতর্ক আকর্ষণীয়।
প্রেমময় কালী, অন্ধকার রাজনীতি?
সাধারণ মানুষের মন্তব্য, “আজ কালীপুজো, কিন্তু কি রাজনৈতিক আলোচনা বজায় রাখতে হবে?” সত্যিই, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে চায়ের দোকানে রাজনৈতিক আলোচনা অব্যাহত। প্রশ্ন উঠছে— এই কালীপুজো কি শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব, নাকি এটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মেও রূপ নেবে? আমাদের স্বাধীনতা যেন কোথাও হারিয়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সামাজিক দর্শনের পরিবর্তন
কালীপুজোর আবহাওয়ার মতো, আমাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারাও পরিবর্তনশীল। প্রতি বছর কালীপুজো আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেয়। কিন্তু, কীভাবে এই বার্তা রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে? সমাজের দলীয়করণের মধ্যে ঐক্যের ফলাফল কেমন হবে, সেটাই এখন দেখার।
একটি চিন্তার প্রসঙ্গ
মেঘের আড়ালে সত্যিই আলো আছে কি, তা বুঝতে নিজেদের বিবেকের দিকে তাকাতে হবে। কালীপুজো শেষ হলেও রাজনৈতিক আলো এখনও ক্ষীণ। আমাদের মনে রাখতে হবে, সত্যিকারের আলো হবে আমাদের অন্তরে— শুধু উৎসবের দিনেই নয়, প্রতিদিন।