অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপির সদস্যপদ অভিযানের সূচনা, মিঠুন চক্রবর্তীর কথায় যেন এক অমোঘ সংকেত, ‘বাংলায় জয়ের জন্য প্রস্তুত যেকোনও কিছুর জন্য’, পর্যবেক্ষকরা ভেবে দেখেন, কতটা গভীর হতে পারে রাজনীতির এই চরিত্র। এই চলমান নাটকের জন্য কি আমন্ত্রিত হয়েছে সমাজ? প্রশ্ন উঠেছে, হানাহানি আর প্রতারণার মাঝে বাংলার দরজায় কী প্রত্যাশা নিয়ে যেতে চায় বিজেপি?
বাংলার রাজনীতিতে অমিত শাহের সফর: মিঠুন চক্রবর্তীর দৃষ্টিভঙ্গি
২৭ অক্টোবর কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপির সদস্যপদ অভিযানের উদ্বোধন হয়। এই সভায় বিজেপির তারকা সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী একটি প্রভাবশালী বক্তব্য দেন, যা রাজনৈতিক দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘বাংলায় জয় পেতে বিজেপি যেকোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’ এই উক্তির মাধ্যমে মিঠুন শ্রোতাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছেন, তবে প্রশ্ন উঠছে, এটি কি আসল নির্বাচনী কৌশল নাকি রাজনৈতিক অস্থিরতার চিহ্ন?
রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতা
মিঠুনের বক্তব্যে যে গভীর আলোচনা লুকিয়ে তা वर्तमान রাজনৈতিক সংকটে নির্দেশ করছে। বিজেপির অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং রাজনৈতিক হিংসার উদ্বেগজনক বৃদ্ধি এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। মিঠুনের কথায় বোঝা যায়, রাজনৈতিক দলের কাছে বিজয়ের জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণের মানসিকতা বিরাজ করছে। তবে প্রশ্ন হলো: এই রাজনীতির নাটকীয়তার মাঝে সাধারণ মানুষের স্বার্থ কোথায়?
সমাজের সংকট ও প্রতিক্রিয়া
মিঠুন চক্রবর্তীর ‘যা বলা যায় না’ মন্তব্য নতুন রাজনৈতিক ধারা তৈরি করছে। বাংলায় যে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে, তা শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না, সাধারণ মানুষের মনেও পরিবর্তন ঘটছে। তারা আর ভোঁতা বিশ্বাস রাখছেন না যে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবকিছু স্বচ্ছ। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মিঠুন ভারতের রাজনৈতিক সংকট এবং জনগণের বিভাজনের চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এই বিভাজন কি কেবল রাজনৈতিক, নাকি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক?
মিডিয়ার পরিবর্তিত ভূমিকা
মিডিয়া আজকাল সামাজিক বিশ্বাসের শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। সাংবাদিকতার রূপ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং সংবাদ মাধ্যমগুলো ক্রমশ রাজনৈতিক উপাদানে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তারা কীভাবে বিজেপির সদস্যপদ অভিযানের বিবরণ প্রদান করবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বর্তমানে মিডিয়া রাজনীতির একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র। তবে সত্যিকার অর্থে, তারা জনসাধারণের স্বার্থে কাজ করছে কি, নাকি কেবল রাজনৈতিক দলের স্বার্থে?
জনমতের পরিবর্তন ও আশা বিনষ্ট
যদিও রাজনৈতিক নেতা নিজেদের জয় বা পরাজয় নিয়ে বাণী শুনাচ্ছেন, জনগণের মধ্যে একটি ভেতরের অসন্তোষ বাড়ছে। যেই আশা নিয়ে তারা ভোট দেন, তা কি সত্যিকার অর্থে পূরণ হবে? কিছু গোষ্ঠী ইতিমধ্যে নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন। যদি মিঠুন চক্রবর্তী মনে করেন বিজেপি ‘যেকোনও কিছুর জন্য প্রস্তুত’, তাহলে প্রশ্ন হলো: এই ‘কিছু’ কি আসলে জনগণের লাভে আসবে?
সারসংক্ষেপ
বাংলার রাজনৈতিক অবস্থার এই নাটকীয়তা রবীন্দ্রনাথের কথাকে মনে করিয়ে দেয়, ‘মানুষকে পোড়ালে পুড়ে যাবে, আর তাদের মনের ভাবনা ফিরিয়ে দিতে সম্ভব নয়’। রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য যেন নাটকের সংলাপ, কিন্তু সেই নাটক দেখতে বসে আমরা কি জানি ক্যামেরার আড়ালে আসল ঘটনা কী? আসুন, আমরা এখন এই রাজনৈতিক আবহে নিজেদের প্রশ্ন করতে শিখি এবং অন্যদেরকেও শিখাচ্ছি।