মহালয়ার সুভাষিণী সন্ধ্যায় মণ্ডপে জনজোয়ার যেন উৎসবের কালোচ্ছবির বিপরীতে, দেবাংশু ভট্টাচার্য তৃণমূলের মুখপাত্র হয়ে ‘উৎসবে ফিরছি না’ স্লোগানকে বামপন্থার ছোঁয়া দিলেন। এমনকি, সাম্প্রতিক বয়কটের ডাক যেন রাজনীতির নাটকে এক অভিনব চরিত্র—যার দিকে সাধারণ মানুষের আবেদন নেই! আমাদের সমাজের এই দ্বন্দ্বপূর্ণ মোড় স্রোতস্বিনী বাঙালির চেতনা নিয়ে কি সংকটের ফসল, নাকি উৎসবের অন্তর্গত সৌন্দর্যের খোঁজ?
মহালয়ার সন্ধ্যায় কলকাতার উৎসবমুখর পরিবেশ: দেবাংশু ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ
মহালয়া রাততে পশ্চিমবঙ্গের মাটি আবারও উৎসবের আনন্দে ঠাসা। কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার প্যান্ডলগুলোতে প্রতিদিনের ভিড় বেড়ে গেছে। করোনাভাইরাসের নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় মানুষের মধ্যে খুশির ধারা তৈরি হয়েছে, যা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও একটি নতুন চিত্র তুলে ধরে। তবে, এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বামপন্থীদের পক্ষ থেকে ‘উৎসব বয়কট’ের ডাক নিয়ে মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘উৎসবে ফিরছি না’ স্লোগানটি বামপন্থির একটি স্বরূপ চিন্তার প্রতিফলন।
রাজনীতির সুর: জনগণের মুখে উৎসবের গান
এখনকার জনজীবনে উৎসবের স্বর শাসকদলের পণ্য কৌশলের জটিলতা প্রকাশ করছে। দেবাংশু ভট্টাচার্যের মন্তব্যগুলি রাজনৈতিক দলের স্বার্থের অসাধারণ নাটকের অংশ। শহরের মানুষ যখন গণপরিসরে ফিরছেন, তখন তারা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও উৎসবের খোঁজে বের হচ্ছেন। মানুষের ধ্যান-ধারণা পরিষ্কার, রাজনৈতিক প্রচারনার মধ্যেও জীবনের স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব।
বয়কট বনাম উৎসব: দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব
রাজনৈতিক নেতাদের এই মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। বামপন্থীরা যখন উৎসবের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তখন তৃণমূলের নেতার মন্তব্যগুলি রাজনৈতিক তরঙ্গের গহনে প্রবাহের একটি ছবি তুলে ধরে। উদযাপনের সঙ্গে মানুষের সংযোগ পুনরুদ্ধারে একটি নতুন অনুভূতি বিস্তারিত হয়ে উঠছে। কিছুদিন আগে এই শহরে বয়কটের ডাক শুনলেও, আজ মানুষ আনন্দের সন্ধানে ফিরে এসেছে।
উৎসব এবং রাজনীতির সম্পর্ক: একটি নতুন দৃষ্টি
প্রশ্ন হল, উৎসব কি শুধুমাত্র আনন্দের বিষয়, নাকি এটি রাজনৈতিক প্রতিরোধের এক প্রতীক? দেবাংশুর মন্তব্যে বোঝা যায়, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উৎসবের আনন্দের গভীরতা রয়েছে। এটি শুধুই সময় কাটানোর একটি ক্ষেত্র নয়, বরং একটি সামাজিক প্রেক্ষাপট তৈরি করছে, যা বিরোধী দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মানুষের মতামত: সমাজের নতুন গতি
মানুষের ভাবনা এখানে গুরুত্বপূর্ণ। যখন দেবাংশু বলেছেন, ‘পিওর বাম সুলভ’, তখন তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে শোষণ করছে। সাধারণ মানুষ যেন এসব বিষয় নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করতে শুরু করেন। যখন উৎসবের গান মানুষের মুখে ধরা দেয়, তখন তা রাজনীতির আকাশে নতুন আশার আলো প্রবাহিত করে।
উপসংহার: সঙ্কটের মাঝেও উদ্দীপনা
মহালয়া রাতে উৎসবের গূঢ় রূপ যেন সমাজের গতিশীলতার চিত্র তুলে ধরে। দেবাংশু ভট্টাচার্যের মন্তব্যের বিরুদ্ধতা প্রকাশ করে রাজনৈতিক আলোচনা হয়তো খুচরো, কিন্তু এটি সমাজের প্রবাহে এক গভীর প্রভাব ফেলে। বর্তমান পরিস্থিতি প্রদর্শন করে, মানুষ পরিবর্তনের আহ্বান জানাচ্ছে। উৎসব তো আনন্দের নাম—রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও, মানুষ নিশ্চয়ই উৎকণ্ঠা ভুলে আনন্দের উৎসব খুঁজে পাবে।