রাজনৈতিক বাতাবরণে যেন অসম্ভব আবহাওয়া, শনিবার থেকে কালীপুজো অবধি কে জানে কোন দিকে ঝড় উঠবে। নেতাদের প্রতিশ্রুতির হাজারো নাটক, মানুষের আশা-নিরাশার পারদ চড়তে চড়তে শীতল দৃষ্টিতে ঠা ঠা করছে। জনতাকে ভুল বুঝতে দেওয়া যেন এখন শাসনের স্বাভাবিক রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে; প্রতিটি আলোচনায় শুধুই কালীপুজোর ছায়া নয়, ক্ষমতার রাজনৈতিক নাটকে মঞ্চস্থ হচ্ছে জীবনের প্রতিফলন।
কালীপুজো: মাতৃসত্তার পূজা না রাজনৈতিক প্রতীক?
সকাল-বিকেল, আলো-অন্ধকারের মধ্যে দেবী বিশাখার অনন্ত আহ্বানে মাতৃসত্তার পূজা শুরু হতে চলেছে। কিন্তু এখানে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে: এই পূজা কি সত্যিই সৃষ্টির আনন্দ, নাকি রাজনৈতিক মহলগুলোর অনুভূতির প্রতিফলন? কালীপুজোর নবান্নকে কেন্দ্র করে কি সবার আবেগ নিগৃহীত হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে কলকাতা পর্যন্ত?
আবহাওয়া এবং জনমানসের অবস্থা
আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবারের জন্য কোনো দুর্যোগের আশঙ্কা নেই। হিমেল বাতাসের মধ্যে ভাস্কর্যের দোকানে কিছু ভিড় দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেই ভিড়ের পিছনে কি রাজনৈতিক চাপা দুশ্চিন্তার কাহিনী রয়েছে, নাকি সাধারণ মানুষের অন্তর্দহন? অতীতের কালীপুজোতে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। তাই কি এবারের পোশাক বদলের ভিতরে আসলে কিছু নতুন আছে?
সরকারি উদ্যোগ এবং তার প্রতিক্রিয়া
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে এবারের কালীপুজোকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ জনসচেতনতা কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে: এই উদ্যোগগুলো কি বাস্তবায়ন হচ্ছে? যেখানে সরকার শান্তির পরিবেশ চায়, সেখানে কালীপুজোর আয়োজনের সঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্কের সম্পর্ক কি সত্যিই শান্তির বার্তা নিয়ে আসবে? সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন তুলতে শিখেছে, এটা কি নতুন একটি ভাবনা?
ধর্মীয় উৎসব এবং রাজনৈতিক বিচ্ছেদ
রাত গভীর হলে যখন কালীদেবীর গান শোনা যায়, তখন রাজনৈতিক নেতারা টিভির পর্দায় বিজয়ীর ভূমিকায় থাকেন। কিন্তু সাধারণ জনগণের দৃষ্টি কোথায়? এই দায়িত্ব কি রাজনৈতিক নেতৃত্বের? রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে আসা আলোর রশ্মি কি সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব দূর করতে সক্ষম হবে?
সামাজিক আন্দোলন: নতুন উন্মোচন
পূর্ববর্তী কালীপুজোর সময়, যখন সবাই ‘মা’ বলে ডাকতে ব্যস্ত ছিল, তখন কিছু সামাজিক আন্দোলনও মাথা উঁচু করেছে। নারী সুরক্ষা, শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে। বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ চরম সচেতন, তারা আসন্ন নির্বাচনে ভোট দিয়ে দলের পরিবর্তন করতে চায়। কিন্তু, এসব কি ধর্মীয় উৎসবের প্রেক্ষিতে বিদ্বেষ নয়? ধর্মের মূলবস্তুর ওপর রাজনৈতিক বিতর্কের পড়চ্ছে?
সংগঠন এবং সমাজ: ভবিষ্যতের কল্পনা
এখন অপেক্ষা করতে হবে, দেখা যাবে কালীপুজোর আনন্দের পরিবর্তে জনগণের মনস্থিরতার অভাব। সরকারের প্রতি এই পরিবর্তিত মনোভাব হয়তো একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করবে। সাধারণ মানুষের সমর্থন ছাড়া এই উৎসব কি জীবিত থাকবে?
সত্যিই, ফুটপাথে কালীপুজোর রঙবাহারে কর্পূরের গন্ধে কি আর সত্যিকার মাধুর্য বাকি আছে? সামনে আসা ভোটের মহাযাত্রায় শুধু দেবী কালী নয়, আমাদের সমাজের পরিবর্তনের গতিবিধি কতদূর নেয়া যেতে পারে, সেটিই দেখার বিষয়।