“দুর্গাপুজোর আগমনে সরকারী জলবর্ষণ: শাসনের মুখোশ বা জনসেবার নতুন রূপ?”

NewZclub

“দুর্গাপুজোর আগমনে সরকারী জলবর্ষণ: শাসনের মুখোশ বা জনসেবার নতুন রূপ?”

এবারের দুর্গাপুজোর তিথি ভোর নাগাদ, পুরসভা জল সরবরাহের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে—ভোর ৩টেতে। কিন্তু পঞ্চমী থেকে দশমী, এমন সকালবেলায় সুমিষ্ট জল মিললেও, দেশের নেতাদের উদাসীনতা যে সমাজের অন্তর্দাহকে জলবিহীন রেখেছে, তাতে পুজোর আনন্দও যেন বিষাদময় হয়। এই উদাসীনতায় কি ভাসবে আমাদের ধর্মীয় উৎসব?

“দুর্গাপুজোর আগমনে সরকারী জলবর্ষণ: শাসনের মুখোশ বা জনসেবার নতুন রূপ?”

দুর্গাপুজো ২০২৩: নতুন জল সরবরাহ উদ্যোগের প্রস্তুতি

নভেম্বরে উদযাপন হতে চলেছে দুর্গাপুজো, এবং পঞ্জিকার অনুযায়ী এবারের পুজোর দিনগুলো ভোরে শুরু হবে। শহরবাসীর মাঝে এই উৎসব উপলক্ষে উত্তেজনা আশাতীত। তবে পুজো আসতে এখনও কিছুদিন বাকি রয়েছে, আর এই সময় পুরসভা জল সরবরাহের জন্য সদ্য একটি নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। তাঁরা ঘোষণা করেছে যে চারদিন ধরে, প্রতিদিন ভোর ৩টা থেকে জল সরবরাহ করা হবে। এটি শহরের দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য একটি আশীর্বাদ হবে, না কি ভোরের শান্ত ঘুমকে ভেঙে দেওয়ার কারণ হবে?

শাসনের দায়িত্ব ও জনসেবা

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কেন মাঝে মাঝে ‘দূরদর্শিতা’ হারান? কেন জনসেবামূলক উদ্যোগ গ্রহণে অজ্ঞতা প্রকাশ করেন? চলতি বছরের পুজোয় যখন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য, ন্যায্য সেবা এবং সুস্বাদু খাবারের প্রয়োজন রয়েছে, তখন পুরসভার এই জল সরবরাহ ব্যবস্থা সমাজের কাছে কেমন গ্রহণযোগ্যতা পাবে, সেটাই প্রশ্ন। এটি কি কোনো অস্থায়ী জনকল্যাণ প্রচেষ্টা, নাকি সঠিকভাবে জনগণের মনে স্থান তৈরি করার একটি পদক্ষেপ?

মিডিয়া, জনমত ও জল সরবরাহের প্রকল্প

মিডিয়া কি এই জল সরবরাহ পরিকল্পনাকে ‘ঐতিহ্য’ এবং ‘সংস্কৃতির’ অংশ হিসেবে উপস্থাপন করবে? নাগরিকদের সম্পর্কিত স্থায়ী রাজনৈতিক সঙ্কটের ছবি তুলে ধরা হচ্ছে; কিন্তু সেই সমস্যার বিশ্লেষণে বদল আসবে কি? বিতর্ক ও আলোচনা মানুষকে তাঁদের কষ্টের বিষয়ে সচেতন করবে।

দুর্গাপুজো: উৎসব ও নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ

সরকারি উদ্যোগের বর্তমান গতিপ্রকৃতি মানুষের মনে যেই প্রশ্ন জাগিয়েছে তা হলো, ‘আসল সমস্যা কোথায়?’ যে সমাজে কাজ ও কর্মদক্ষতা কিছু ক্ষেত্রে ভিন্ন নির্দেশকের হাতে, সেখানে কেন বাচ্চাদের হাসির মাঝে জল সংকটে পড়তে হবে? পুজোর সময়ে এই বিভ্রান্তি কি আমাদের উন্নতির পথে বাধা তৈরি করছে?

নতুন উদ্যোগের সম্ভাবনা

দুর্গাপুজো ২০২৩ এ পুরসভা যেই উদ্যোগ নিয়েছে, তা সমাজের গভীর চিন্তার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা রাখে। তবে প্রচলিত রাজনীতির দিক থেকে, ধর্মীয় উৎসবগুলোকে সমাজবিরোধী চিন্তাভাবনা থেকে কিভাবে রক্ষা করা যায়, সেটাও দেখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের বিশ্বাস ও আশ্বাসের পক্ষে তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে হবে।

প্রত্যাশা: জল ও জীবনের সংযোগ

অতএব, ভোরের জল সরবরাহের উদ্যোগটি একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই এটি রাজনৈতিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। জনগণ কি তাঁদের বাস্তবতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, না কি বৃহত্তর সামাজিক কল্যাণের জন্য পরিবর্তনের দাবি করবে? বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের শিক্ষা দেবে, এটি নতুন ধরনের রাজনীতির সূচনা। দুর্গাপুজো আসছে, জলও আসছে; কিন্তু জীবনধারণের উপকরণ কি আসবে?

মন্তব্য করুন