শিশুদের জন্য গড়ে তোলা এমন এক স্কুল, যেখানে বইয়ের সঙ্গে সখ্যতার জন্য ‘গল্প ঘর’ আছে; কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই আকর্ষণীয় প্রস্তাবনায় কি আসলেই শিশুদের মননের বিকাশ হবে, না কি শিক্ষা ব্যবস্থার আড়ালে ক্ষমতার রাজনীতি লুকানো? নেতাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সমাজের উত্তাপ বেড়ে চলেছে, মনে হয়, শিক্ষার আদর্শ ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত হতে ব্যর্থ হচ্ছে।
শিক্ষার নতুন দিগন্ত: মেয়র’স স্কুলের উদ্যোগ
বর্তমানে সারা দেশে মেয়র’স স্কুলের নতুন উদ্যোগ—‘শিশুদের পূর্ণাঙ্গ গড়ে তোলার ব্যবস্থা’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ এবং বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এই উদ্যোগের পেছনে কতটা গভীর চিন্তা রয়েছে, তা নিয়ে নানা মতামত প্রকাশিত হচ্ছে।
মেয়র’স স্কুলের সুবিধা
মেয়র’স স্কুলের ল্যাবরেটরি, যেখানে শিশুরা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সক্ষম হবে, এটি নতুন প্রজন্মের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ। তবে প্রশ্নের উদ্রেক হচ্ছে, আমাদের নেতারা কি শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সত্যিই এভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন? বা তারা কি শুধুমাত্র এলিট শ্রেণীর শিক্ষার গন্ডিতে আটকে থাকার চেষ্টা করছেন?
গল্প ঘরের গুরুত্ব
মেয়র’স স্কুলের ‘গল্প ঘর’ বা লাইব্রেরির ধারণাটি অত্যন্ত সৃজনশীল। এখানে ছাত্রীরা বিভিন্ন বিষয়ের বই পড়ে জ্ঞান লাভ করতে পারবে। তবে প্রশ্ন হলো, কি এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার প্রবাহ সত্যিই বৃদ্ধি পাচ্ছে? আমাদের সমাজে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার সংকট এখনও বিদ্যমান।
সরকারের নিরাপত্তা ও পৃষ্ঠপোষকতা
সরকারের পক্ষ থেকে শিশুদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা প্রয়োজন, তবে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর পৃষ্ঠপোষকতারও প্রয়োজন রয়েছে। কিভাবে নিশ্চিত করা হবে যে, সরকারি কর্মকর্তারা এই প্রকল্পকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবেন? নাকি শিশুদের শিক্ষার আলো স্থায়ীভাবে হুমকির সম্মুখীন হবে অসম্পূর্ণ নীতির কারণে? এটি বাস্তব নজরদারির বিষয়।
জনসমাগম ও সমালোচনা
বর্তমান সরকারের নীতিমালা এবং কার্যক্রম নিয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা-সমালোচনা চলমান। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই প্রকল্প শিক্ষার্থীদের শেখার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে সক্ষম হবে। তবে অনেকেই উদ্বিগ্ন যে, প্রকল্পের কার্যকরিতা এবং জনকল্যাণে এর আসল অবদান কি হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়ে গেছে।
নেতৃত্বের গুণমান ও ভবিষ্যৎ
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের নেতা-নেত্রীরা এই উদ্যোগগুলোর পেছনে কতটা আন্তরিক? তারা কি সত্যিই শিক্ষার উন্নয়নের একটি সুদূরপ্রসারী স্বপ্ন দেখছেন, নাকি এটি কেবল রাজনৈতিক খেলার এক অংশ? শিক্ষা ও মানবিক উন্নয়নে এর প্রকৃত প্রভাব সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
অবশ্যই, গ্রামগঞ্জ ও শহরের বিভিন্ন কোণে ছোট ছোট উদ্যোগগুলো সমাজে পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে। তবে যদি এগুলো সঠিকভাবে গড়ে তোলা না হয়, তাহলে আমরা কি সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব?
মেয়র’স স্কুলের এই উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সকলের আরও অনেক উদ্যোগে জড়িত হতে হবে। একটি সমাজ তখনই গড়ে ওঠে, যখন প্রতিটি সদস্য নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যকে গুরুত্ব দেয়। আমরা কি সেই পথে হাঁটতে প্রস্তুত?