সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি মন্তব্য করেছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি-দাওয়া ও অঙ্গীকার সত্ত্বেও তাঁদের আচরণে স্পষ্ট হয়েছে, নীতি ও জনস্বার্থের প্রতি অনীহা। চিকিৎসা সেবায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা জনগণের দুরবস্থাকে তীব্র করে তুলেছে। বর্তমান শাসন ব্যবস্থার দ্বিচারিতার প্রতিফলন কি?
বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবা: চলমান সংকটের চিত্র!
সম্প্রতি, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ইতিহাসের ওপর একটি গাঢ় ছায়া পড়েছে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে সরকারের আইনজীবীর বক্তব্য আবারও উদ্ভাসিত করেছে আমাদের সমাজে বিদ্যমান sâuতল সংকট। আইনজীবী বলেছেন, “আশ্বাস ও কাজে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও জুনিয়র ডাক্তাররা যাতে OPD এবং IPD পরিষেবাগুলি বয়কট করেছেন।” এই বক্তব্য আসলে কি ইঙ্গিত দিচ্ছে? আমাদের নাগরিক জীবনে এর প্রভাব কোথায় পড়বে?
সমস্যা নাকি অজ্ঞতা?
এই সংকট আমাদের সমাজের মূল বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করছে: চিকিৎসা সেবায় মানুষের আস্থা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তাররা কেন প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন? এটি কি তাঁদের ঐক্যবদ্ধতার প্রকাশ, নাকি একটি নৈতিক অবক্ষয়ের ফল? আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের যত বক্তৃতা দেওয়া হোক, জনগণের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতাতে কেন এত অভাব রয়েছে? সাধারণ মানুষ আজ চরম দুর্ভোগে, আর ডাক্তারদের এই আন্দোলন সেই সময়ের দুর্দশার একটি প্রতিচ্ছবি।
সরকারের প্রতিশ্রুতি: কেবলই কথার খেলা?
রাজ্য সরকার বারবার আশ্বাস দিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এই প্রতিশ্রুতি কি কার্যকর ফল দিতে সক্ষম হচ্ছে? জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন কেবল তাঁদের অধিকার আদায়ের চেষ্টা নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের প্রতীক। প্রশ্ন উঠছে, এই আন্দোলন কি শুধু চিকিৎসকদের জন্য, না সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য অধিকারেরও কথা বলা হচ্ছে? নাগরিকদের স্বার্থসুরক্ষার যে প্রতিশ্রুতি ছিল, তা ভেঙে যেতে বসেছে।
সামাজিক প্রভাব: আমাদের ভবিষ্যৎ কী?
ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যুবক ডাক্তারদের অশ্রুসজল মুখ। এর পেছনে কি এক করুণ ইতিহাস কাজ করছে? কেন তাঁরা নিজেদের পেশাগত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করছেন? রাস্তার তীব্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে গেছে, ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। সুতরাং, সরকারের দায়িত্ববোধ ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে যে অব্যবহারের বিষয়টি সামনে এসেছে, তা কি সরকারের মানসিকতার প্রকাশ?
রাজনৈতিক নাটক: সমস্যার সমাধান কবে হবে?
রাজনৈতিক মহলে এই আন্দোলন নানা জল্পনা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক নেতাদের অবস্থান, কূটনীতির শৃঙ্খলা, এবং জনসাধারণের আশা, যা দিন দিন ক্ষীণ হচ্ছে, তার মোকাবিলা করতে হবে। কি করতে হবে? দোষী কে? এক দল ডাক্তার বনাম রাজ্য সরকার, সরকার বনাম জনগণ – এই সংঘাতের মাঝে আমরা সত্যিই কি প্রস্তুত? এর উত্তর খুঁজছেন দেশের নাগরিকরা।
নিষ্ক্রিয়তা আর প্রতিশ্রুতির বাস্তবতা
অবশেষে, সামষ্টিক আশায় আমাদের যদি কোনওটা অঙ্গীকার করা না থাকে, তবে তা আমাদের একমাত্র ভরসা। আমাদের স্বাস্থ্য সেবার ভবিষ্যৎ কী হবে? রাজনীতি, সমাজ ও চিকিৎসা – এগুলো যদি পরস্পরের সাথে সংযুক্ত না থাকে, তবে সমাজের গতিপথ কোথায়? ডাক্তারদের আন্দোলন কেবল তাঁদের জন্য নয়, এটি আমাদের জন্য একটি উদ্বোধনী চিঠি – সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি নতুন উদ্যোগ। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও মানুষের ভবিষ্যতের সুরক্ষা তখনই আসবে, যখন আমরা সকলে সক্রিয়ভাবে সংকটের মোকাবিলা করতে এগিয়ে আসব।