মালদার পরিযায়ী শ্রমিক মতিউর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় আবারও উন্মোচিত হলো সমাজের অমানবিক চেহারা। বিজেপি শাসিত রাজ্যে মিথ্যে সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে পরিবার হারাল একটি নতুন অবিচার। মঞ্চে মৃতের স্ত্রী ও সন্তানরা মানবতার ডাক দিচ্ছে, কিন্তু সেই ডাক গৃহীত হচ্ছে কি? রাজনীতির মঞ্চে অপরাধের নাটক নিয়মিত, আর জনগণের কান্না কি শুধুই এক অন্তহীন সুরে বেজে চলবে?
রাজনীতি ও শ্রমিকদের জীবনের সংকট
সম্প্রতি মালদার পরিযায়ী শ্রমিক মতিউর রহমানের ভিন রাজ্যে এক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, শ্রমিকরা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের জন্য জীবনঝুঁকি নিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, শ্রমিকদের জীবন ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে কি শুধু রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে, নাকি আমাদের সমাজেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে?
গণপিটুনি: প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা
মতিউরের মতো অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক অমানবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, তাঁকে বিজেপি শাসিত একটি রাজ্যে মিথ্যা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও শিশুর কান্না প্রমাণ করে যে, তাঁদের কাছে রাজনীতির গুরুত্ব অনেকটা হালকা, যেখানে আদর্শের পরিবর্তে নিরাপত্তার দাবি তোলা হচ্ছে।
সমাজে বাস্তবতার পুনঃসংস্কার
এখন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, সরকার এবং প্রশাসন কি এই হত্যার দায় এড়াতে পারে? কেন এই ঘটনাটির সঠিক তদন্ত হয়নি? পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবন-কর্মের নিরাপত্তা কেন মুখ্য বিষয় নয়? মালদার মতিউর রহমানের মৃত্যুর পর সমাজে কি শুধু কান্না হবে, নাকি পরিবর্তনের জন্য জনমত গঠন হবে?
রাজনীতিতে জনগণের গুরুত্ব
এখন সময় এসেছে আমাদের উপলব্ধি করার, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান কেমন। প্রার্থীরা জনগণের সেবা করার প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য কি এটুকুই? মতিউরের পরিবারের সদস্যরা দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের কান্না ও হতাশা আমাদের সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।
জনমত ও সামাজিক ক্ষোভ
আজকের রাজনীতি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে মতিউরের মৃত্যু যেন কেবল একটি পরিযায়ী শ্রমিকের ঘটনা, তবে এর পেছনে প্রচুর মানুষের ক্ষোভ সুস্পষ্ট। তাহলে, এটি কি কেবল শোকের প্রকাশ, নাকি এর মাধ্যমে সমাজের পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি উদ্ভাসিত হবে?
আত্মসচেতনতার পথে
একটি রাজনৈতিক দল দীর্ঘকাল ধরে শাসন করলেও রাষ্ট্রযন্ত্র ও জনসাধারণের সম্পর্ক ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এখন সময় এসেছে জনগণের জীবনমান উন্নয়নে নজর দিতে। পরিবর্তনের জন্য আমাদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে এবং রাষ্ট্রনীতিকে শুধু স্বজনপ্রীতির সীমানা থেকে বের করে আনতে হবে।
মতিউরের মৃত্যু আমাদের জন্য এক শিক্ষা, যারা নিরাপত্তাহীনতার শিকার, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার নেওয়ার সময় এসেছে। আসুন, একটি নিরাপদ ও সুন্দর সমাজ গঠনে আমরা একযোগে কাজ করি।