আহারের এই যুগে, যখন চিকিৎসা আতঙ্কে কাঁপছে, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার হাসপাতাল অভিযানে সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় যুক্ত হয়েছে এক নতুন দানব। রোগীর পরিজনদের হাতে জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সমাজের গভীরে, মানবিকতার প্রতি আমাদের অবহেলারই এক চিত্র। আরজি করের হুমকি কেবল চিকিৎসকদের নয়, বরং আমাদের সভ্যতার উপরও একটি প্রবল প্রশ্ন তুলে দেয়: কোথায় গেল স্বাস্থ্যসেবার প্রতি শ্রদ্ধা? মুখে শান্তির বুলি, অথচ অজস্র বেদনাকে গোপন করার ডাক—এ সংখ্যায় এর চেয়ে বড় রাজনৈতিক নাটক আর কী হতে পারে!
কলকাতার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অশান্তি: পুলিশ কমিশনারের জরুরি পদক্ষেপ
সকালবেলা সাগর দত্ত হাসপাতালে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে, যখন হাসপাতালের পরিস্থিতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতে গিয়ে রোগীর স্বজনরা গর্জে ওঠেন, তখন এক স্বাস্থ্যকর্মী মারধরের শিকার হন। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালের অমানবিক পরিবেশ এবং অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহনের অস্বস্তি নিয়ে তাদের ক্ষোভ থেকেই এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ কমিশনারের জরুরি পদক্ষেপের গুরুত্ব
এই ঘটনার পর, কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা ছুটির দিনেও হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশের স্বাস্থ্য সেবার অব্যবস্থাপনার বিষয়টি আমাদের আরও উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা: একটি জরুরি প্রশ্ন
হামলার পাশাপাশি জুনিয়র মহিলা ডাক্তারকে ‘আরজি কর’ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এই ধরনের আক্রমণ আমাদের সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা কি আমরা ভুলে যাচ্ছি?
রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সম্পর্ক: একটি সংকট
রোগীদের পরিবারের সাথে স্বাস্থ্য কর্মীদের একটি সেতুবন্ধন গড়ে তোলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপর নিগৃহীত হওয়ার ঘটনা আমাদের সমাজের ভারসাম্যকে ভেঙে দিচ্ছে। সরকারের এখন এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সমাজের জন্য পরিবর্তনের প্রয়োজন
কলকাতার স্বাস্থ্যসেবার পরিস্থিতি যেন আর ‘দেবদাসী’ হয়ে না যায়। চিকিৎসা সেবা শুধুমাত্র কিছু বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য নয়, বরং সকলের জন্য সুলভ হওয়া উচিত। এই ঘটনার ফলে জনমতের পরিবর্তন স্পষ্ট; কৃষক আন্দোলনের মতো সামাজিক আন্দোলনগুলোও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নেতৃত্বের দায়িত্ব: সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়
নেতৃত্বের কাছে এখন প্রশ্ন উঠছে: অতীতে তাঁদের প্রতিশ্রুতি কি ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে? পুলিশ কমিশনারকে যদি প্রতিদিন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে আসতে হয়, তবে আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে চিন্তা করা উচিত।
মিডিয়ার ভূমিকা: তথ্যের সংবেদনশীলতা
মিডিয়া এই ঘটনার খবর প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে, কেবলমাত্র খবর প্রচার নয়, বরং সমাজের ভেতরে প্রগতিশীলতা নিয়ে আসা প্রয়োজন। পরিস্থিতির সমাধানে সমাজের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একত্রিত হয়ে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব!
এই ধরনের কঠিন অবস্থায় আমরা আশা করি, সমাজের প্রতিটি নাগরিক মানবিকতার প্রতীক হয়ে উঠবেন। রাজনৈতিক নেতৃত্ব নতুন ধারণার উদ্ভবের সুযোগ নিতে পারে, অথবা অতীতের ভুল ধারার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।