দীর্ঘ নয় বছরের আইনি জটের পর, অবশেষে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগে আশার আলো দেখা গিয়েছে। ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধাতালিকা প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয়েছে কাউন্সেলিং, যা দুর্গাপুজোর পর আবারও হবে। কিন্তু বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়া তাদের মামলাগ্রস্ত ছিল—যার ফলে শাসনের নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে, সমাজের প্রতিচ্ছবি যেন বলছে, রাজনৈতিক নাটকের পাতা খুলে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে—যেখানে শিক্ষার আলোতে রাজনৈতিক ছায়া গাঢ় হয়ে উঠছে।
ঝড়ের পর সান্ত্বনা: উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগের ‘মুহূর্ত’
লম্বা ৯ বছর অপেক্ষার পর, অবশেষে শিক্ষকদের নিয়োগের সুখবর এসেছে। আইনি জটিলতা কাটিয়ে, উচ্চ প্রাথমিক স্তরের জন্য ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধাতালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। ৩ অক্টোবর এবং আজ, শুক্রবার কাউন্সেলিং চলমান রয়েছে। দুর্গাপুজোর পর, ২৪, ২৫, ২৮, ২৯ অক্টোবর আরও সুযোগ মিলবে। তার পাশাপাশি, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে রাজনীতির মঞ্চে চলছে ব্যাপক তোলপাড়।
রাজনৈতিক নাটক: বিরোধী মহলে অশান্তি
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলগুলির একাধিক মামলা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। মেধাতালিকা প্রকাশের পর বর্তমান সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। সব পক্ষই নিজেদের স্বার্থে ব্যস্ত, তবে সত্যটা আমাদের কাছে স্পষ্ট যে, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন এক কঠিন সময়ে রয়েছে।
সরকারের প্রতিশ্রুতি: নির্বাচনের আগের আবহ
শিক্ষকের পদ পূরণের ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিশ্রুতি সঠিক দিকে এগোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠছে—এই পদে শিক্ষার মান কতটা উন্নত হবে? ‘মেধা’ কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ, না কি এটি রাজনৈতিক স্বার্থের এক প্রকাশ? উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এটি একটি বিতর্কিত বিষয়। আবেদনকারীদের আশা এবং পরিবারের স্বপ্ন কি নষ্ট হবে, সেটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
জনমতের প্রতিধ্বনি: ভেতরের ক্ষোভ
সামাজিক মাধ্যমে চলছে সমালোচনা। জনগণের এক বিশাল অংশ মনে করে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এখনও রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। সরকারের কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে, যেন তারা নির্বাচন প্রস্তুতির চাইতে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। জনমনে এই অশান্তি, একজন কৌতুকশিল্পী পর্যন্ত বলছেন, “আমরা কি শুনবো, হিমালয়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তির মন্তব্য?”
শেষ পাতে বিলাসিতা: পুজো-পার্বণের শুভেচ্ছা
আপনারা কি জানেন? দুর্গাপুজোর সময় সরকার জন্য একটি ‘মৌসুমী উৎসব’। তাঁদের শাসনের ঢং যেন পরবর্তী কাউন্সেলিংয়ে শোভনের পর্যায়ের মত সাজানো থাকে। সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস অনেকটাই মুখোশের মতো। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের কতটুকু আনন্দময় হবে, সেই প্রশ্নও কিন্তু রয়ে গেছে।
উপসম্পাদকীয়: ভবিষ্যৎ কী আমাদের?
অতীতে ফিরে তাকালে আমাদের ভাবতে হয়—কীভাবে আগামী দিনে উন্নতির আশায় পথ চলা সম্ভব হবে? রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন অশান্তি ও ঘৃণা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে আলোকিত সমাজ তৈরির আশা ক্রমেই ক্ষীণ হচ্ছে। বার্ষিক পরীক্ষার ফল কি সত্যিই সন্তোষজনক, নাকি তা শুধুই একটি স্বপ্ন?
সর্বোপরি, মনে রাখতে হবে—নিয়োগ এবং নীতির কার্যকরিতার মাধ্যমে আমাদের সমাজের চিন্তার প্রকাশ ঘটে। উদ্যম এবং নির্মলতা অপরিহার্য। অন্যথায়, এই রাজনৈতিক নাটক আমাদের ভবিষ্যতকে বিপর্যস্ত করতে পারে।