গতকাল ঝাড়গ্রামের মাটিতে বজ্রপাতে দম্পতি-সহ ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা সাম্প্রতিক নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নতুন এক আলোচনা বাড়িয়ে দিয়েছে। যখন সরকার কৃষকদের সুরক্ষায় নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়, তখন প্রকৃতির এই কঠোর পরিহাস আমাদের শেখায়, স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্রুতির পুরোটাই কি শুধু কথা? অথচ আমরা আজো জনতার অশ্রুতে ভিজে যাচ্ছি, বৃষ্টির জল থেকে বাঁচার জন্য।
ঝাড়গ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু: চারজনের শোকময় ঘটনায় গভীর ক্ষত
গতকাল ঝাড়গ্রাম জেলার একটি মর্মান্তিক ঘটনায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি কৃষক দম্পতি। তাঁরা নিজেদের কৃষিজীবনের নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তবে প্রকৃতির নির্মমতা ও সরকারের নিরাপত্তাহীনতার কারণে তাঁদের জীবন না ফেরার দেশে চলে গেছে।
প্রকৃতির নৃশংস গতি এবং প্রশাসনের উদাসীনতা
সোমবার দুপুরে ঝাড়গ্রামের আকাশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির শুরুতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রকৃতি বাস্তবতায় কখনো কখনো এতটা নির্মম হতে পারে, তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। এর পাশাপাশি, জেলা প্রশাসন ও রাজ্য সরকারের কাঠামোগত উদাসীনতাও এটি একটি স্পষ্ট উদাহরণ। কেন বৃষ্টির পূর্বাভাস পেলে মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি? কৃষকরা প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল, এটি কি আমাদের ভুলে গেছে?
কৃষকদের নিরাপত্তা: প্রয়োজনীয় উদ্যোগ
বজ্রপাতে আহত আরও দুইজনের অবস্থা গুরুতর, এবং তাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসন কি এবার তাদের জন্য কিছু করবে? ঝাড়গ্রামে কৃষকদের ওপর যে পরিমাণ নির্ভরতা রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তার অভাব কেন? নির্বাচনী সময়ে কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনা কি কোনো রাজনৈতিক পুঁজি হবে না?
জনতার ভাবনা: আমাদের বিশেষ দোষ কি?
প্রশাসন ও সরকারের দরজা আমাদের জন্য বন্ধ, কিন্তু জনগণের কণ্ঠস্বর কি গুরুত্বহীন? তাঁদের অসহায়ত্বের কাহিনীগুলি কি নির্বাচনী প্রচারে প্রভাব ফেলবে? কৃষকদের মৃত্যুর খবর আমাদের কাছে এক কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, তবে তাদের মূল্যবোধের কি অবস্থা? আমাদের সমাজে মানবিকতার ছাপ কি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে?
রাজনৈতিক বিচক্ষণতা এবং দায়বদ্ধতা!
রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে বিবেকের অভাব সত্যিই দুঃখজনক। নির্বাচনের আগে যারা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়ান, তাঁরা কোথায়? জনগণ যখন সরকারি নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত, তখন তাঁদের বক্তব্য কেবল নির্বাচনের জন্য কি? এর উত্তরের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
শেষ কথা: পরিবর্তনের আহ্বান
সমাজের এই অবক্ষয়ের পটভূমিতে, কল্পনার জালে বিন্দুমাত্র আটকে থাকা উচিত নয়। বরং আমাদের সময়ের দাবি অনুসারে অন্ধকারের মধ্যেও আলো খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলতে হবে, যাতে নির্বাচনের সময় সুবিধাবাদীদের কাছে আমাদের আশা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা যায়। প্রকৃতি আমাদের বন্ধু হবে, না কি শত্রু? কৃষকদের জীবন সুরক্ষার দায়িত্ব কাদের?