দিলজিৎ দোসাঞ্জ, যিনি সাধারণত বিতর্ক এড়িয়ে চলেন, সম্প্রতি টেলাঙ্গানা সরকারের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ পেয়ে বিপদে পড়েন। হায়দ্রাবাদে তার কনসার্টে মদ ও সহিংসতার প্রচারকারী গান গাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনি তার গানের কথা পরিবর্তন করেন এবং আহমেদাবাদে প্রচারিত নোটিশ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন। শিল্পী হিসেবে তিনি সমাজের প্রতিফলন দেখান এবং এর মাধ্যমে সামাজিক অবস্থা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তোলেন। বাদশাহ তার পক্ষে দাঁড়িয়ে বললেন, রাষ্ট্রে মদের প্রাপ্যতা থাকলে শিল্পীদের ওপর এমন চাপ দেওয়া অস্বচ্ছন্দজনক। এই পরিস্থিতি কিছু নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, যেখানে শিল্প ও সমাজের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
অভিনেত্রীদের দুনিয়ায় এল ভুল বৈষম্যর রোজকার চিত্র: দিলজিৎ দোশাঞ্জের বিতর্কিত কনসার্ট
সম্প্রতি দিলজিৎ দোশাঞ্জ, যিনি সাধারণত বিতর্ক থেকে দূরে থাকেন, তিনি একটি আশ্চর্যজনক পরিস্থিতিতে পড়লেন। তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকার তাঁকে একটি নোটিশ জারি করেছে, যেখানে তাঁকে হায়দ্রাবাদে তাঁর কনসার্টে আলকোহল এবং সহিংসতা প্রচারের গান গাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। এই ঘটনারই প্রেক্ষিতে, দিলজিৎ তাঁর গানের ভাষা পরিবর্তন করে পরিবেশন করেছেন।
হায়দ্রাবাদ শো শেষে, আহমেদাবাদে তাঁর দ্বিতীয় পারফরম্যান্সে, দিলজিৎ ওই আইনি নোটিশের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি আলকোহলকে উৎসাহিত করেন না এবং তাঁর কিছু গানে এই বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, যা সহজেই পরিবর্তন করা যায়। তিনি এও বলেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে তাঁর হতাশা রয়েছে কারণ কেন তাঁকে একা এই সমস্যাটির জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট করা হচ্ছে। তিনি ঘোষণা করেন, “যদি ভারতরের প্রতিটি রাজ্য মদ-মুক্ত হয়, তবে আমি আলকোহল বিষয়ে গান বানানো পুরোপুরি বন্ধ করে দেব।”
দিলজিতের পাশে বাহবা: বন্ধু বাদশাহর কঠোর মন্তব্য
দিলজিতের ওপরে ব্যক্তিগত অনুভুতি ব্যক্ত করার পর, তাঁর ভক্তরা সমর্থন জানিয়েছে। সম্প্রতি, তাঁর বন্ধু এবং শিল্পী সহকর্মী বাদশাহও তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। এজ টাকের একটি অনুষ্ঠানে বাদশাহ এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে বরাবর মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে সঙ্গীতশিল্পীদের লক্ষ্য করে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে, অথচ দেশজুড়ে মদ সহজলভ্য।
বাদশাহর সোজাসুজি বক্তব্য
দিলজিতের মন্তব্যের প্রতিফলনে বাদশাহ বলেন, “আপনি তাদের বলেন না গান গাইতে বা আলকোহল নিয়ে গান করতে, কিন্তু তারপরও আমরা চারপাশে মদ বিক্রি করছি। কেন এগুলি তৈরি করা উচিত নয়? একজন শিল্পী সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং এটাই তাঁদের প্রাসঙ্গিকতা এবং মানুষের ভালবাসার কারণ।” বাদশাহ আরও বলেন, সরকারের হয়তো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা জনসাধারণ জানে না। তবে, তিনি পুরোপুরি দিলজিতের সমর্থনে কথা বললেন এবং বলেন, “যদি আপনি চান তিনি কিছু নিয়ে গান গাইবেন না, তবে সেই বিষয়টি প্রথমে সমাজে থাকা উচিত নয়।”
ভাইজানির সম্পর্কের উষ্ণতা
বাদশাহ দিলজিতকে একজন বড় ভাইয়ের মতো বর্ণনা করেন, যিনি সবসময় তাঁকে কঠিন সময়ে সমর্থন ও পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, “দিলজিত আমার জন্য বড় একটি উৎস উৎপাদন করেছেন এবং আমি আমাদের সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করি।” আসলে, শিল্পীদের মধ্যে এই ধরনের বন্ধন এবং সমর্থনই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভেতরকার দ্বন্দ্বগুলোর চিত্র তুলে ধরে।
বিতর্কের মোড়: সামাজিক প্রভাব ও শিল্পীর দায়িত্বের প্রতিফলন
এভাবে চলচ্চিত্র ও সংগীত শিল্পের ক্ষেত্রে বিতর্কগুলো কেবল দুজন শিল্পীর মধ্যেই শেষ হয় না; বরং এটি সমাজের কাছে দায়িত্ব এবং এ শিল্পের সামাজিক প্রভাবের একটি বড় নিদর্শন। আমাদের বর্তমান সময়ে সঙ্গীতশিল্পীদের কাছে একটি প্রশ্ন রয়েছে – তারা কি সমাজের বাস্তবতা এবং সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারবেন, নাকি সেটি তাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে?