বলিউডে একটি দুঃখজনক খবর এসেছে, বিখ্যাত কম্পোজার এ আর রহমান ও তার স্ত্রী সাইরা ৩০ বছরের বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, এটি একটি যৌথ সিদ্ধান্ত, বাস্তবে সম্পর্কের মধ্যে কাজের চাপ ও আবেগের টানাপোড়েনের কারণে এই সিদ্ধান্ত। সৃজনশীলতাকে বিঘ্নিত করে এমন ব্যক্তিগত বিপর্যয়ের মধ্যে, শিল্পীদের জীবনে যে মানবিক দিকগুলোর প্রতি অবহেলা করা হয়, তা নতুন করে ভাবনার সূত্রপাত করেছে।
কলঙ্কজনক পদক্ষেপ: এ আর রহমানের বিচ্ছেদের খবর
বিশ্ববাসীর কাছে ‘মিউজিকের মন্ত্রীর’ খ্যাতি অর্জনকারী এ আর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী সাইরার বিচ্ছেদ ঘোষণা টালমাটাল করে দিয়েছে বলিউডে। ৩০ বছরেরও বেশি একটি যাত্রার পর তাদের এ সিদ্ধান্ত ভক্তরা মেনে নিতে পারছে না। আইনজীবী বন্দনা শাহ এই খবরে নিশ্চিত করেছেন যে, এটি একটি পারস্পরিক সিদ্ধান্ত, এবং তাদের গোপনীয়তাকে সম্মান করা উচিত।
বিচ্ছেদ: একটি ব্যথাদায়ক সিদ্ধান্ত
আইনজীবী বন্দনা শাহ ANI-কে জানিয়েছেন, “বিচ্ছেদ এখনও ঘটে নি। আমি উভয় পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছি। কারণ জানাতে পারছি না, কিন্তু ২৯ বছরের একটি বিবাহে উত্থান-পতন স্বাভাবিক।”
“এই একটি কষ্টকর সিদ্ধান্ত, তবে এটি একটি যৌথ সিদ্ধান্ত।” তিনি বলেন, “পরিবারের গোপনীয়তা এখন অবশ্যই সংরক্ষণ করা উচিত।”
বিয়ের উল্লেখযোগ্য সমস্যা
বিচ্ছেদের ঘোষণায় সাইরার আইনজীবী বলেন, “আপনারা জানবেন, একটি দীর্ঘ সম্পর্কের পর তারা মানসিক চাপের কারণে আলাদা হচ্ছেন। নিজেদের মধ্যে গভীর ভালোবাসা থাকলেও, উত্তেজনা এবং সমস্যা তাদের মধ্যে একটি অতিক্রম্য দূরত্ব সৃষ্টি করেছে।”
মঙ্গলবার, রহমান তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “আমরা আশা করেছিলাম যে আমরা ‘গ্র্যান্ড থার্টি’ উদযাপন করব, কিন্তু জীবন যে পথে চলেছে, তা ভিন্ন।”
এ আর রহমান ও সাইরার সম্পর্কের ইতিহাস
এ আর রহমান এবং সাইরা ১৯৯৫ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে: খাতিজা, রাহীমা, এবং আমীন। তাদের বিচ্ছেদের খবর বলিউডের মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরও উত্থান করেছে, যারা মনে করেন এই ধরনের সম্পর্কের মধ্যে যে মানসিক চাপ থাকে, তা সমাজের স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে।
কর্মজীবনে এ আর রহমানের সাফল্য
অন্যদিকে, এ আর রহমান সম্প্রতি ‘আইআইটি মাদ্রাস’ থেকে ‘এক্সটিআইসি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’ অর্জন করেছেন। তাঁর ‘ল রোনা’ নামক ফিল্মের সাউন্ডট্র্যাক বিশ্বব্যাপী লঞ্চ হয়েছে। বলিউডে অন্যতম সেরা গানের তালিকায় রহমানের সৃষ্ট গানগুলি অবস্থিত, যেমন ‘রোজা’, ‘বোম্বে’, ‘দিল সে’, ‘লাগান’ এবং ‘রকস্টার’।
সমাজের ওপর প্রভাব
বিচ্ছেদের খবরের প্রেক্ষিতে, এটি প্রশ্ন উঠিয়ে দিয়েছে যে, চলচ্চিত্র শিল্পের হয়ে ওঠা মানসিক স্বাস্থ্য কি ঠিকভাবে দেখানোর ক্ষেত্রে কতটা সফল? সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে সিনেমা বানানোর সময় সিনেমা নির্মাতারা কি যথেষ্ট সচেতন?
এ রাহমানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে হডফিল্ম ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়ার’-এ, যেখানে তিনি দুটি অ্যাকাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ‘মিলিয়ন ডলার আর্ম’ এবং ‘১২৭ আওয়ার্স’ ছবিতেও তাঁর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।
ভক্তদের জন্য বার্তা
এ আর রহমান এবং সাইরা যখন তাদের বিচ্ছেদের মরসুমে প্রবেশ করছেন, তখন তাদের ভক্তদের কাছে একটি আবেদন: “আসুন, তারা এই পরিস্থিতি অতিক্রম করতে সহায়তা করি এবং তাদের গোপনীয়তাকে সম্মান করি।”
এটি একটি শোকের সময়, তবে এটি শিল্পের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন সূচনা হতে পারে। Rahman এবং Saira’র কাহিনি বলিউডের ছবির ভাবনাকে কিছুটা উর্ধ্বে নিয়ে যাবে কিনা; সময়ই কথা বলবে।