মন্ত্রীর সংবর্ধনা শেষে যখন হাসপাতালের দরজায় দাঁড়িয়ে ওই তরুণরা হেলমেট ছাড়াই বাইকে প্রবেশ করল, তখন হয়তো রাজনীতির খেলায় সুরক্ষার এই বোধটাই ছিল ম্লান। সরকার উন্নত যন্ত্রপাতি এনে চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভাবনার উদ্রেগ ঘটাচ্ছে, অথচ জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। এর মানে কি, রাজনীতির প্রজ্ঞা আমাদের সচেতনতার অন্তরালকে অতিক্রম করতে ব্যর্থ?
রাজনীতির উজ্জ্বল আলো এবং সচেতনতার আহ্বান
পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর দক্ষিণের বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সম্প্রতি কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান যন্ত্রের উদ্বোধনে অংশ নেন। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পর তিনি লক্ষ্য করেন, তিন তরুণ হেলমেট ছাড়া বাইকে হাসপাতালে প্রবেশ করছে।
মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা
এ বিষয়ে লিখিত মন্তব্যে স্বপন দেবনাথ জানান, “এটি আমাদের সমাজের সুস্থতার জন্য একটি সংকেত। যুব সম্প্রদায়ের এই অবহেলা আমাদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব কেবল রোগ নিরাময় নয়, বরং সুরক্ষার সঠিক ধারণা গড়ে তোলাও।” এই বক্তব্যে একটি গভীর সামাজিক-রাজনৈতিক দিক প্রতিভাত হয়, যা ক্ষমতার শীর্ষে থাকা এক নেতার ভবিষ্যত ভাবনার প্রতিফলন করে।
রাজনৈতিক বাস্তবতা ও জনতার প্রতিক্রিয়া
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, জরুরি বিষয়গুলোর প্রতি সরকার কতটা নজর দিচ্ছে? দেশজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনা যখন বাড়ছে, তখন স্বপন দেবনাথের সুরক্ষা বিষয়ক মন্তব্য এক বিতর্কের জন্ম দেয়। জনসাধারণ মনে করছে, রাজনীতির উচ্চাভিলাষী ভাষণে সামাজিক সুরক্ষার গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এখন প্রশ্ন, সরকার কি করবে? আন্দোলন করবে নাকি শুধু কথার মাধ্যমে কর্তৃত্ব খোঁজার চেষ্টা করবে? সাধারণ জনগণের বক্তব্যের বিরোধিতা করে অনেকেই বলেন, “দুর্ভাগ্য আমাদের যে, রাজনৈতিক কারণে যাদের দেখা পাই, তারা আমাদের সুরক্ষায় আগ্রহী নন।”
সচেতনতা না অবহেলা?
মন্ত্রী সুরক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে বলছেন, কিন্তু সমাজের তরুণদের অসচেতনতা একটি গুরুতর সমস্যা। তাহলে পরিবর্তনের জন্য কি কোনো আন্দোলন হবে? নাকি ভাঙা সম্পর্কের উপর কবিতা লিখেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে আমাদের?
সাংবাদিকতার ভূমিকা
এখানে সাংবাদিকদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তারা কি সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উদ্ঘাটন করে জনগণের চেতনাকে জাগ্রত করতে পারবে? একদিকে তাদের আদর্শ সন্ধান করা হলেও, অন্যদিকে তাদের সততা বিচার করা একটি চ্যালেঞ্জ।
সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এখানে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। রাজনীতি, সমাজ ও সাংবাদিকতা—সবকিছু একত্রে কাজ করছে। নেত্রীর ভাষণ, সমাজের কার্যক্রম এবং সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একটি নাট্যমঞ্চ তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
সমাজের যাত্রাপথ
শেষে বলা যায়, পরিবর্তন বা সচেতনতা শুধু কথার মাধ্যমে নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে কার্যকরভাবে পৌঁছাতে হবে। স্বপন দেবনাথের মন্তব্য থেকে শুরু করে যুব সম্প্রদায়ের বাইক চালানো—সবকিছুই আমাদের সমাজের বিভিন্ন স্তরের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরে। এখন দেখার বিষয় এটি আমাদের কোন দিকে নিয়ে যায়।