বাড়ির জন্য সাজানো খেতাবের খাঁচায় দেবাশিসবাবুর নাম, অথচ তাঁর অধিকারী অর্থ অন্যের ব্যাঙ্কে! রাজনীতির এই মিশ্রণে বিশ্বাসের গন্ধ হারিয়ে যাচ্ছে, যখন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিনতাই হচ্ছে। অস্তিত্বের সংকটে সঙ্গী হয় খোঁজখবর আর বাবুদের শাসন। কোথায় সদাসর্বদা সেবা, আর কোথায় সত্তা?
রাজনীতির বাস্তবতা: দেবাশিসবাবুর হতাশা ও আশা
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সংবাদে দেখা গেছে, দেবাশিসবাবু, যিনি ২০১৭ সালে আবাস যোজনার জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, তাঁর প্রাপ্য অর্থের জন্য অসঙ্গতির শিকার হয়েছেন। সরকারি রেকর্ডে তাঁর নাম থাকলেও, যখন তিনি জানতে পারেন যে তাঁর টাকা অন্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে গেছে, তখন তাঁর মনে উঁকি দেয় একটি কঠিন প্রশ্ন—“এখনও কি আমার আশা ভেঙে যাবে?”
সরকারি ব্যবস্থার প্রতিফলন
এটি আমাদের সরকারি ব্যবস্থার আমলাতান্ত্রিকতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ, যেখানে একজন সাধারণ নাগরিকের ন্যায্য প্রাপ্য হারিয়ে যায়। যদিও সরকার নিজেদের সাফল্য নিয়ে বড় বড় প্রচার করছে, বাস্তবে অনেকের জন্য পরিস্থিতি ভিন্ন। দেবাশিসবাবু যেভাবে সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশা করেছিলেন, সেভাবেই বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তিনি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
নতুন নেতাদের উত্থান ও পুরনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি
এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করছে—“নতুন মুখ, কিন্তু পুরনো সমস্যা?” রাজনৈতিক নেতারা ভিন্ন ভিন্ন প্রচার চালাচ্ছেন, কিন্তু বাস্তবে জনগণের জন্য কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে কিনা তা সন্দেহজনক। মানুষের আশা প্রশাসনিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে যেন হারিয়ে যাচ্ছে। নেতাদের বক্তৃতায় অনেক কিছু আছে, কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি আগের মতোই রয়ে যাচ্ছে।
দেবাশিসবাবুর স্বপ্নের পথে চ্যালেঞ্জ
দেবাশিসবাবুর মতো মানুষের গল্প আমাদের সমাজের বাস্তবতার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাঁরা অসহায় অবস্থায় অন্ন ও আশ্রয়ের জন্য লড়াই করছেন। এই বিতর্কিত ঘটনা শুধু দেবাশিসবাবুর একার দুর্ভোগ নয়; এটি সমগ্র দেশের একজন নাগরিকের দীর্ঘশ্বাস। রাষ্ট্রের নীতির বড় বড় প্রশ্ন চললেও, সাধারণ মানুষ কেন এসবের শিকার হচ্ছেন, সেটি ভাবতে বাধ্য করে।
সমাজের দায়িত্বশীলতা
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কি কিছুই করার নেই? সমাজে যখন ক্ষতিকর ঘটনা ঘটে, তখন আমাদের সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। বুদ্ধিজীবীরা ক্যাম্পাসে মূল্যবান তত্ত্ব উপস্থাপন করলেও, বাস্তবে মানবিক অধিকার পাইয়ে দেওয়া কতটা কঠিন, সেটির দিকে আমাদের তাকাতে হবে। বাহ্যিক শোভাবর্ধন ও অভ্যন্তরীণ ঘাটতির মধ্যে সমন্বয় সাধনের সময় এসেছে।
মিডিয়া ও জনগণের সম্পর্ক
এদিকে, মিডিয়ার গঠনমূলক প্রচার এবং নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনার বিষয়েও নতুন বিতর্ক শুরু হচ্ছে। জনসাধারণের মনে প্রশ্ন জাগছে—এরূপ পরিস্থিতি কি মিডিয়ার সমর্থনে ঘটছে? নাকি সরকার এই প্রতিবন্ধকতা দেখার অনাপত্তি নিয়ে নিশ্চুপ? প্রশাসনিক বেআইনতা প্রতিরোধে তাদের কী ভূমিকা তা অবশ্যই ভাবার বিষয়।
মাথা তুলে দাঁড়ানোর সময়
দেবাশিসবাবুর অভিজ্ঞতা আমাদের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করছে। রাষ্ট্র তো মানবতার এক অভিব্যক্তি—যেখানে শান্তি ও ন্যায় বিদ্যমান। এই মুহূর্তে অন্যান্যদের দৃষ্টিকোণকে আলোর উৎস হিসেবে দেখতে হবে। সমাজিক ন্যায়ের জন্য জনগণের সংগ্রামকে একত্রিত করে নতুন আধুনিকতার স্বপ্ন দেখতে পারি।
অতএব, রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করা আমাদের জন্য জরুরি। দেবাশিসবাবুর অভিজ্ঞতা যেন আমাদের ভবিষ্যতের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।