আগামী শুক্রবার মুক্তির জন্য প্রস্তুত “Singham Again” ছবিটি সিবিএফসির হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বেশ কিছু পরিবর্তনের শিকার হয়েছে। ছবিতে ধর্মীয় প্রতীক এবং চরিত্র নিয়ে সংশোধন করা হয়েছে, যা চলচ্চিত্র শিল্পের এরূপ নৈতিকতা ও সংস্কৃতি বিষয়ক বিতর্কের প্রতিফলন। এই সময়ের দর্শকদের সামনে সিনেমার পরিবেশন এবং আবেগের গতিপ্রকৃতির পাশাপাশি কাজের যাথার্থ্য নিয়ে নতুন চিন্তা-ভাবনার উন্মোচন হতে যাচ্ছে।
বলিউডের মহাযুদ্ধ: ‘সিঙ্গাম এগেন’ কি পারবে দর্শকদের কাঁপাতে?
এক্সাইটমেন্টের চরম সীমায় হাজির হচ্ছে দীপাবলির মহাকলেজ। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, এই শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘সিঙ্গাম এগেন’, যা আসলে পরিচালককে আরেকটি বড় পরীক্ষা দিতে পারবে। এই ছবির তালিকায় আছেন তিন বড় গুণী অভিনেতা: অজয় দেবগন, কারিনা কাপূর খান, দীপিকা পাডুকোন, অক্ষয় কুমার, রণবীর সিং, অর্জুন কাপূর, টাইগার শ্রফ এবং জ্যাকি শ্রফ। এই ছবির প্রচারণা ইতোমধ্যেই তুঙ্গে পৌঁছেছে।
সেন্সর বোর্ডের কঠোর নিয়মাবলী
মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালকের সঙ্গে সঙ্গে, ভারতের কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড (CBFC) ‘সিঙ্গাম এগেন’-কে U/A সার্টিফিকেট দেওয়ার পরে, বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এদের মধ্যে সাড়ে দুই মিনিটের একটি দৃশ্য পরিবর্তন করতে বলার পাশাপাশি, রাম, সীতা, এবং হনুমানকে সিঙ্গাম এবং তার দলের সঙ্গে তুলনা করা স্থির চিত্রগুলি মৌলিকভাবে বদলানো হয়েছে।
ধর্মীয় সামগ্রী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
প্রোজেক্টের নির্মাতাদের কাছে বিভিন্ন দৃশ্য কেটে ফেলার প্রয়োজন হয়েছে, যেমন একটি ১৬ সেকেন্ডের দৃশ্যে সীতা এবং রাভণের চরিত্রের মধ্যে সংঘর্ষ। এছাড়াও, ২৬ সেকেন্ডের একটি লাইন এবং দৃশ্য, যেটি ভারতের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করছিল, সেটিও কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া, ঘটনাস্থলে ধর্মীয় পতাকার রঙ পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে এবং আধ্যাত্মিক নাটকের একটি পরিচিত পঙক্তি বাদ দেওয়া হয়েছে।
মেসেজের পরিবর্তন ও মিডিয়া দায়িত্ব
এছাড়া, CBFC নির্মাতাদের কাছে একটি গঠনমূলক ডিসক্লেমার থাকার নির্দেশ করেছে যা ছবির বিষয়বস্তু স্পষ্ট করে যে “এটি একটি কাজের ভিত্তিতে তৈরি, এবং এর সাথে বাস্তব জীবনের দেবতাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” এই ডিসক্লেমারটি ১ মিনিট ১৯ সেকেন্ড স্থায়ী, যেখানে মোট কাটা অংশ ৭ মিনিট ১২ সেকেন্ড। ছবির সাম্প্রতিক সময়কাল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ১২ সেকেন্ড।
প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া
দর্শকদের কাছে সিঙ্গাম এগেন-এর প্রতি আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য নির্মাতারা কি ভিন্ন ধরনের গল্প বলার দিকে নজর দেবেন? চলচ্চিত্র শিল্পের এই পরিবর্তনগুলো কি আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এবং টলিউডের অবস্থা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন তুলছে? আসন্ন দিনে দর্শকের সামনে উঠে আসবে সিঙ্গাম এগেন, কিন্তু তার প্রস্তুতির পেছনে যে প্রচেষ্টা, তা কি বিফল হবে? নাকি দর্শকদের মনে জাগিয়ে তুলবে নতুন কোনো উৎসাহ?
নিষ্কাশন: পরিবর্তনের সাহসিকতা
বলিউডের এ ধরণের সৃষ্টি একদিকে যেমন দর্শকদের মনে প্রশ্ন তুলছে, অন্যদিকে পরিবর্তনের সাহসিকতাকেও তুলে ধরছে। আমরা দেখি যে, শিল্প এবং গণমাধ্যমের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট সম্পর্ক রয়েছে যা কেবল সিনেমা নয়, বরং আমাদের সমাজের সংস্কৃতিকেও প্রভাবিত করে। গল্প বলার ধরনে এই পরিবর্তনগুলো দর্শকদের পছন্দের প্রশস্ততা কি দেখাবে? আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে।