অরূপ সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা: “ডু পাট্টির” নতুন রিমিক্স আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আদনান সিদ্দিকি, পাকিস্তানি অভিনেতা, কৃতি সেননের নাচের প্রসঙ্গ তুলে বরাবরের মতো ক্লাসিক গান ‘আখিয়াঁ দে খোল’ এর প্রতি অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রথাবিরোধী ও অশ্লীল উপস্থাপনার মাধ্যমে শিল্পীদের সন্মানে বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে। এই বিতর্কের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থন ও বিরোধিতা, দুইই দেখা যাচ্ছে। চলচ্চিত্রের এমন পরিবর্তন সত্যিই ভাবনার খোরাক জোগায়—বাহিরের চুলকায়া সংস্কৃতির প্রতি আমাদের আস্থা কি সত্যিই পুনর্চিন্তন করা উচিত?
বলিউডে বিতর্কিত নাচ: ‘অকুহ্যান দি খোল’ এবং অতীতের সমাদর
সর্বশেষ খবরের দিকে নজর দিলে, সুপরিচিত পাকিস্তানি অভিনেতা আদনান সিদ্দিকী সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। তিনি ভারতীয় সিনেমা ‘ডু প্যাটি’র জন্য পুনর্নির্মিত একটি পады় গান ‘অকুহ্যান দি খোল’ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করেছেন। কৃতি স্যানন এই গানটির জন্য একটি লাল শরীরবৃত্তাকার জামায় নেচেছেন, যা আদনানের কাছে ‘অশ্লীলতা’ বোধ হয়েছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তার অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন এবং এর নিন্দায় অনেক পাকিস্তানি এবং অন্যান্য নেটিজেনের সমর্থন পেয়েছেন।
বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এবং সামাজিক মিডিয়ার সমর্থন
অভিনেতা আদনান সিদ্দিকী তার টুইটার অ্যাকাউন্টে কৃতি স্যাননের একটি ছবির সাথে মন্তব্য করেছেন, “নকল করা প্রশংসনীয় হতে পারে, কিন্তু তা যদি একটি কিংবদন্তির ক্লাসিককে টুকরো টুকরো করে ফেলতে হয়, তবে তা অগ্রহণযোগ্য। রেশমা জীর প্রতি কিছু সম্মান দেখান এবং তার রেখে যাওয়া সংগীতের গুরুত্বকে সসম্মানে অনুধাবন করুন।” এ মন্তব্যের পর, অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী আদনানের সঙ্গীতা হয়ে উঠেছেন এবং গানটিকে মূল গায়কদের প্রতি ‘অমান্য’ মনে করেন। একজন মন্তব্য করেছেন, “আপনার এই মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। রেশমা জীর প্রতি সম্মানের এমন অশ্লীল প্রকাশে আমি অভিভূত।”
বহুমাত্রিক প্রতিক্রিয়া: সুশৃঙ্খল এবং অসংবেদনশীলতা
অন্যদিকে, কিছু লোক কৃতি স্যানন এবং গানটির সমর্থনে এসে আদনানের মন্তব্যের বিরোধিতা করছেন। সমাজে ব্যঙ্গাত্মক এমন ঘটনাগুলি আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গীকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। “রেশমা জীর গান একটি ক্যাবারেতে ব্যবহৃত হয়েছে, যা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। বলিউডের উচিত এই বিষয়গুলি নিয়ে সচেতন হওয়া,” মন্তব্য করেছেন একটি নেটিজেন। তবে, গানটিতে ব্যবহৃত আধুনিক সংগীত এবং কৃতি স্যাননের পারফরম্যান্সের প্রশংসাও উঠছে।
গান রচনা ও চলচ্চিত্রের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট
এই ‘অকুহ্যান দি খোল’ গানটি হিন্দি সিনেমা ‘ডু প্যাটি’র অঙ্গীকারমূলক, যেখানে সঙ্গীত রচনা করেছেন তানিিশ্ক বাগচী এবং গেয়েছেন শিল্পা রাও। ছবির কাহিনীতে কৃতি স্যানন দ্বৈত কৌতুক চরিত্রে অভিনয় করছেন, যেখানে কজল একটি পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। ২৫ অক্টোবর নেটফ্লিক্সে ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এটাও এই ছবির মাধ্যমে কৃতি স্যাননের প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটছে।
মিডিয়া প্রতিনিধিত্ব এবং বর্তমান চলচ্চিত্রের প্রবণতা
বর্তমানে চলচ্চিত্র আর সঙ্গীতের মধ্যে কেনাকাটার আবেগ এবং সমাজের প্রতিফলনের দিকে বাংলাদেশের শিল্পীরা কঠোর নজর রাখছে। আদনান সিদ্দিকীর এই মন্তব্য আসলে আমাদের সংস্কৃতির অংশের প্রতি শ্রদ্ধা এবং হৃদয়গ্রাহী সূত্রটির দিকে আলোকপাত করছে। বলা বাহুল্য, সংগীত ও চলচ্চিত্র নির্দেশনায় এখন যে পরিবর্তন ঘটছে, তা যেন আমাদের অতীতের সেই মহান শিল্পীদের অবমাননায় না যায়।