বলিউড তারকা তামান্না ভাটিয়া বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে অর্থপাচার তদন্তে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হন। এই তদন্তটি HPZ Token মোবাইল অ্যাপের সাথে যুক্ত, যা বিনিয়োগকারীদের সঠিকভাবে বিটকয়েন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের সুযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠকানোর অভিযোগে জড়িত। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অভিযোগ নেই, তবুও এই ঘটনা চলচ্চিত্র শিল্পে অভিনেতাদের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলে, যেখানে তারকারা মাঝে মাঝে বিতর্কিত ব্যবসায় যুক্ত হন। এই পরিস্থিতিতে, সিনেমার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সমাজের মূল্যবোধও যেন পাল্টে যাচ্ছে।
বলিউডের নীতিহীনতা: Tamannaah Bhatia এবং অর্থ পাচারের ঘটনাবলী
গত বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি শহরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দ্বারা ইন্টারোগেট করা হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী Tamannaah Bhatia। ব্যাপারটি অর্থ পাচারের একটি তদন্তের সাথে যুক্ত, যা HPZ Token নামক একটি মোবাইল অ্যাপের সাথে সম্পর্কিত বলছে। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এই অ্যাপটি ভিন্ন ভিন্ন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করে বিটকয়েন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি খননের সুযোগ দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশোধ দিয়েছে।
ইডি, Prevention of Money Laundering Act এর অধীনে Tamannaah-এর বিবৃতি রেকর্ড করেছে তাদের গুয়াহাটি জোনাল অফিসে। সূত্র জানায়, Tamannaah Bhatia একটি ইভেন্টে “সেলিব্রিটি উপস্থিতি” দেওয়ার জন্য অর্থ পেয়েছিলেন, যা অর্থ পাচারের অভিযুক্ত সংস্থার দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো “প্রমাণিত” সম্পূর্ণ তথ্য বা অভিযোগ আনা হয়নি।
মুখোশের আড়ালে
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটের তদন্ত চলছে, যেখানে মার্চ মাসে দাখিল করা চার্জশিটে ২৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৬টি চীনা নিয়ন্ত্রণাধীন। ১০ জন পরিচালকের মধ্যে চীনা নাগরিক রয়েছে। এদিকে, দুটি প্রতিষ্ঠান বিদেশী নাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
অর্থ পাচারের এই মামলা কোহিমা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট দ্বারা দায়ের করা FIR থেকে শুরু হয়েছে, যেখানে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারায় এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা “অনভিজ্ঞ” বিনিয়োগকারীদের জন্য বিটকয়েন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি খননের মাধ্যমে অকল্পনীয় ফল ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করেছে।
কিন্তু কি হলো Tamannaah-এর?
Bhatia এর আগে সুমনিত হয়েছিলেন, কিন্তু কাজের ব্যস্ততার কারণে তার উপস্থিতি স্থগিত করেছিলেন। অবশেষে, তিনি বৃহস্পতিবার হাজিরা দিতে সম্মত হন। চলচ্চিত্র শিল্পের এই নাটকীয়তা কি দেখায়? যতক্ষণ পর্যন্ত শিল্পের নীতির সুরক্ষা না হয়, তখন বিনোদন জগতের অন্ধকার দিকগুলি সামনে আসতেই থাকবে।
স্বাধীন ভারতের সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে অনিয়ম আর ছন্দের মাধ্যমে কাল্পনিক বাস্তবতা নির্মাণের মধ্যে, কি কখনো প্রশাসনিক মনোভাবের প্রতিফলন দেখতে পাই? সেলিব্রেটি আবেদন ও নামের কিনারা করাটা কি ভুল? Tamannaah-এর এই ঘটনা আমাদের মনে প্রশ্ন তুলে, “কেন কিছু মানুষ প্রতারণার শিকার হয়?”
সময়ের খেলা: বলিউড এবং সমাজ
এখন সুধু Tamannaah-এর কথা নয়, বরং এই ঘটনার ফলে গম্ভীরভাবে ভাবতে আমাদের উচিত যে, গণমাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পের নির্মাণ, সমাজের প্রতিফলন এবং পরিবর্তিত দর্শকদের পছন্দ সম্পর্কে। কান্ডারী হয়ে এই সংস্কৃতি কি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
নতুন ট্রেন্ড আরও গভীর অর্থনৈতিক চাপ, বিনোদনের ক্ষেত্রের উপর চাপ ফেলার সম্ভাবনা এবং চলচ্চিত্রের ভিন্ন ভিন্ন দিক নিয়ে আসছে। তবে প্রশ্ন হলো, আমাদের সেলিব্রেটিদের কর্তব্য ও দায়িত্ব কি দিনে দিনে কমছে? কিংবা, তারাই কি বিবেক-বাণী দিয়ে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন?
বলিউডের এই অবস্থান এবং Tamannaah Bhatia’র ঘটনা শুধুমাত্র শিল্পের একাংশকে প্রকাশ করে না, বরং পুরো সমাজে চলমান অস্থিরতা ও নীতির সীমাবদ্ধতাগুলিকে ফুটিয়ে তোলে। যদিও চলচ্চিত্র শিল্প উত্তরণের ক্ষেত্রে রয়েছে, প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি সেই পথের উপর চলাঅবস্থায় থাকব?