বলিউডে গতকাল ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড সবার নজর কাড়ছে। প্রাক্তন এমএলএ বাবা সিদ্দিকের হত্যাকাণ্ডের পর নির্মাতা রাম গোपाल বর্মা প্রশ্ন তুলেছেন সমাজের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নাম জড়িয়ে সিদ্দিকের হত্যার অভিযোগ উঠেছে, যা বলিউডের সঙ্গে পুলিশের দুর্বলতার ওপর একটি তীব্র আঙ্গুল তোলে। এই ঘটনা কোনো সিনেমার স্ক্রিপ্ট হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে এতো নাটকীয়তার সাক্ষী হতে হয়েছে বলিউডকে, যা অঙ্গীকার করে যেন সিনেমার একটি নতুন অধ্যায়।
ধারাবাহিক ঘটনার চিত্র: বাবার হত্যাকাণ্ডে বলিউডের আচরণ
সম্প্রতি, বলিউডের বিখ্যাত পরিচালক রাম গোপাল ভার্মা প্রকাশ করেছেন এক ভিন্নস্তরের প্রতিবাদ: মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক এবং জাতীয় কংগ্রেস পার্টির নেতা বাবা সিদ্দীকের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। ১২ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় সিদ্দীককে তার পুত্র জীশান সিদ্দীকের অফিসের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার ফলে রাজনীতি এবং বলিউড উভয়ই স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে।
রাম গোপাল ভার্মার প্রতিক্রিয়া
১৪ অক্টোবর, ভার্মা এক পোস্টে বলেন, “একজন আইনজীবী, যিনি এখন গ্যাংস্টার, সে একটি হরিণের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে চায় একজন সুপারস্টারকে হত্যার মাধ্যমে। সে তার ৭০০ সদস্যের গ্যাংকে, যারা ফেসবুকের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছে, প্রথমে একটি বড় রাজনীতিবিদকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়ে।” এই বক্তব্যে তিনি অপরাধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং এর পেছনে কারা রয়েছে সেই প্রশ্ন তোলেন।
অভিযুক্ত সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ভার্মা আরও জানান, যিনি এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছেন, তিনি বর্তমানে বন্দী থাকা অবস্থায় সরকারী সুরক্ষায় আছেন। তিনি দাবি করেন, “পুলিশ তাকে ধরতে পারছে না কারণ তিনি সরকারের সুরক্ষায় বন্দী এবং তার মুখপাত্র বিদেশে থাকা অবস্থায় বক্তৃতা দিচ্ছে।”
ফিল্মি কাহিনীর সম্ভাবনার কথা
এই ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ভার্মা জানান, হয়তো এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি সিনেমা নির্মিত হবে। তবে তিনি মনে করেন, “যদি কোনো বলিউড লেখক এ ধরনের একটি গল্প লেখেন, তারা হয়তো কঠোর সমালোচনার মুখ face পড়বে।”
বাবা সিদ্দীকের হত্যাকাণ্ডের পটভূমি
বাবা সিদ্দিকের হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয়। লরেন্স বিবশয় গ্যাং মৃত্যুর দায় স্বীকার করেছে, এবং তাদের ফেসবুক পোস্টে সিদ্দিকের সঙ্গী হওয়া নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে বলিউডের সুপারস্টার সালমান খানের সঙ্গে তার যোগসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্মানে অন্তেষ্টিক্রিয়া
১৩ অক্টোবর, বাবা সিদ্দীকের শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় সম্মানে অনুষ্ঠিত হয়। গুলি করার পরে, লীলা ভদ্র হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় বলিউডের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বে শোক প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে সালমান খান, সঞ্জয় দত্ত এবং শিল্পা শেঠী অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
একটি নতুন ভাবনা: বলিউডের সামাজিক প্রভাব
বাবা সিদ্দীকের হত্যা বলিউডের চিত্রশিল্পকেই প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে: চলচ্চিত্র শিল্প এবং রাজনীতির সম্পর্ক কোথায়? সেলেব্রিটিরা কি পশ্চিমা প্রভাবের পর্ণায় পড়ছেন? এবং সমাজের কাছে তাদের কি দায়বদ্ধতা রয়েছে?
বর্তমান সময়ে জনসাধারণের মনে এই ঘটনার প্রতিফলন স্পষ্ট। দর্শকদের কাছে সিনেমা শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং একটি সামাজিক বার্তা প্রদান করার মাধ্যমও। এই প্রতিক্রিয়া সিনেমার বিষয়বস্তু এবং কাহিনীর কিংবদন্তির ওপর নতুন আলোকপাত করবে।