“দুর্গাপুজোর মধ্যে ডাক্তারদের আমরণ অনশন: রাজনীতি ও ধর্মীয় উন্মাদনার সংঘাত!”

NewZclub

“দুর্গাপুজোর মধ্যে ডাক্তারদের আমরণ অনশন: রাজনীতি ও ধর্মীয় উন্মাদনার সংঘাত!”

দুর্গাপুজোর আবহে, যেখানে মানুষ ভক্তি ও আনন্দের মাঝে হারাতে চায় নিজেকে, সেখানে রাজপথে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান যেন সমাজের রোগটিকে নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। একদিকে ধর্মতলার ভিড়, অন্যদিকে অনিকেত মাহাতোর সাহসী পদক্ষেপ; এটি পুনঃপ্রমাণ করে, যে যখন শাসন ত্রুটি-বিচ্যুতে ভরপুর, তখন গণমানুষের গলা রুদ্ধ হয় না। অধিকার আদায়ে তাঁদের এই দৃঢ়তা, প্রকৃতই আমাদের সমাজের বাইরে যাওয়ার পথে একটি বিশেষ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

“দুর্গাপুজোর মধ্যে ডাক্তারদের আমরণ অনশন: রাজনীতি ও ধর্মীয় উন্মাদনার সংঘাত!”

জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন: দুর্গাপুজোর সময়ে রাজনৈতিক অশান্তি

দূর্গাপুজোর উৎসবের আনন্দ যখন সারা বাংলাকে engulf করে রেখেছে, তখন কলকাতার বুকে জুনিয়র ডাক্তারদের চলমান আন্দোলন ভিন্ন একটি চিত্র তুলে ধরছে। ধর্মতলায় তাঁদের আমরণ অনশন যেন এক অশান্ত সমূদ্রে ঢেউয়ের মতো। হাজার হাজার মানুষ যখন ঠাকুর দেখতে আসছেন, তখন একদল ডাক্তার তাঁদের দাবির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। এই পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে, যেখানে জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে একটি তিক্ত সম্পর্ক ফেটে পড়ছে।

অনিকেত মাহাতোর নেতৃত্বে অনশনের শুরু

৬ অক্টোবর, অনিকেত মাহাতো নেতৃত্বে এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। তিনি জনগণকে বোঝাতে চান যে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্যাগুলি অত্যন্ত গুরুতর এবং বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তবে সাধারণ মানসিকতা কি? ধর্মতলায় দাঁড়িয়ে থাকা ডাক্তারদের প্রতি জনগণের সমর্থন কি সাধারণ সহানুভূতি, নাকি একটি বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের সূচনা? চিকিৎসকরা যখন সেবা দিতে প্রস্তুত, তখন রাষ্ট্রের অব্যবস্থার কারণে জনজীবন বিপন্ন হয়ে উঠছে। এই প্রশ্নগুলি আরো গম্ভীর হয়ে দেখা দিচ্ছে।

রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে জনতার প্রতিক্রিয়া

দেশের রাজনৈতিক পরিসরে এই আন্দোলন নিয়ে আলোচনা চলছে। শাসক এবং বিরোধী দলের নেতারা বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করছেন। কেউ ডাক্তারদের সমর্থনে কথা বলছেন, আবার কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করছেন আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য নিয়ে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন নিজেদের স্বার্থে ব্যস্ত, তখন সাধারণ মানুষকে কিভাবে তাদের দিকে তাকাতে বলা যায়? কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কথায় বলতে হয়, “প্রযুক্তির ভিড়ে মানবিকতাকে খোঁজো!”

সংবিধান এবং স্বাস্থ্যসেবা: আমাদের সমাজের নৈতিক সংকট

ইতিহাস দেখায়, স্বাস্থ্যসেবার সমস্যা নতুন নয়। কিন্তু বর্তমান আন্দোলন প্রশ্ন তুলছে—রাষ্ট্র কি অঙ্গীকারবদ্ধ? ডাক্তারদের মানবেতর জীবন, সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, এবং রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্ৰুতি—এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে একটি ত্রিমাত্রিক সংকট তৈরি হয়েছে। চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণের সম্পর্ক, যেটা আগে ছিল আত্মবিশ্বাসের চিহ্ন, আজ তা ভেঙে যাচ্ছে।

মিডিয়ার ভূমিকা: পত্রিকাগুলির সতর্কতা

মিডিয়া, যা সমাজের দর্পণ, কি এই আন্দোলনের সব দিক তুলে ধরতে সক্ষম হচ্ছে? বিরোধী প্রচারের ফলে কি সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে? বাংলার মানুষের উপলব্ধি যদি এই ঘটনার তোলপাড় না করে, তবে মানবিক বিচারের মুখোশ খুলে যাবে। রাষ্ট্রের কাছে জনগণের অধিকার স্বীকৃতি না পেলে বাস্তব পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে, এবং আমাদের সেই দিকে নজর রাখতে হবে যতক্ষণ না সংগঠন ও সংগ্রামে সমাধান পায়।

পরিণতি: রাজনীতি এবং সমাজের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা

এখন প্রশ্ন উঠছে, ডাক্তারদের আন্দোলন কি নতুন রাজনৈতিক পরিবেশের সূচনা করছে? বর্তমান পরিস্থিতি যদি অপরিবর্তিত থাকে, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেক নৃশংসতা আমাদের অপেক্ষা করছে। সামাজিক ন্যায়ের পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হলে, আমাদের ভবিষ্যৎ ইতিহাসের অন্ধকারে থমকে থাকবে। জনগণের আওয়াজ তখন কিভাবে উচ্চারিত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

মন্তব্য করুন