মহালয়ার আগে বাড়ির আলো ঝলমল করত, কিন্তু এবারের উৎসব যেন হতাশার আড়ালে। চিকিৎসকের মা বলেছেন, মেয়ের শোকের মধ্যে পুজোর আনন্দ খুঁজে পান, তবুও সমাজের এই নিষ্ঠুরতা প্রশ্ন তুলে, আমরা কতটুকু উন্নত? নেতাদের অঙ্গীকার কি শুধু কল্পনায়? রাজনীতির চিরকালীন নাটক কি সমাজকে সত্যিই আলোকিত করতে পারবে?
মহালয়ার সময়ে বিদায়ী আলো
প্রতি বছর মহালয়ার সকালে মা দুর্গার আহ্বান বাঙালি সমাজে দুর্গাপুজোর আনন্দ নিয়ে আসে। কিন্তু এবারের মহালয়া যেন অন্ধকারের ছায়া ফেলে গেছে। আগের বছরগুলোতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতা চিকিৎসকের মায়ের আনন্দের মধ্যে উৎসব উদযাপন হয়েছিল, কিন্তু এই বছর মহালয়া হতাশার আবহে আগমন করেছে।
আরজি করের নিগৃহীত চিকিৎসকের মা
মেয়ের উদ্বেগে তারা দুর্গাপুজো আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন, যাতে সন্তান এই উৎসবের আবহে মুক্তি পায়। কিন্তু সমাজ ও সরকারের দিক থেকে নানান অন্ধকার সংবাদ এবং হতাশা উঁকি দিচ্ছে। এটি শুধুমাত্র একটি পুজো নয়, বরং মুক্তির একটি প্রার্থনা।
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর নির্যাতন
এ ঘটনা আমাদের প্রশ্ন করতে বাধ্য করে, সমাজে নারীর ভূমিকা আসলে কি? সরকারের প্রতিশ্রুতি ও মন্ত্রীর কথার বাহার দেখা গেলেও, নারীদের নিরাপত্তা কেন হারাতে হয়? আমলাদের উদাসীনতা ও প্রশাসনের নীরবতায় কি পরিস্থিতি এই রকম হয়েছে? আমাদের নেতা-মন্ত্রীদের কথাগুলো কেবল নির্বাচনী পরিবেশেই কেন সোনা ঝরা মনে হয়?
সামাজিক আন্দোলনের নতুন আশা
এখনই সময় সমাজের সব বিবেকবান মানুষের, যারা এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেন। মহালয়া শুধু দেবীর আহ্বান নয়, বরং আজকের নারীর আত্মসম্মান ও মুক্তির জন্য সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করার সময়। জনগণের মতামত ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রশ্ন রাখতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা
যদি সংবাদমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয়, সাধারণ মানুষ কিভাবে সচেতন হবে? হাজার হাজার ফুলের মতো আমরা মিডিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি, কিন্তু কবে আমরা তথ্যবহুল ও দায়িত্বশীল সংবাদ পাব? সত্যের খোঁজে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।
নতুন সমাজের দিশা
মহালয়া এখন চিন্তার উদ্ভাবনের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। ধর্মীয় আবহ থেকে স্বাধীনতার প্রশ্ন সামনে আসছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে বিচার ও প্রতিকার ছড়ানো প্রয়োজন। সরকারের প্রতিশ্রুতিগুলো যেন হতাশা স্পর্শ না করে, বরং নতুন দিশার সূচনা করে।
আমাদের আশা, সমাজের সব স্তরে নেতৃত্ব গভীর বিবেকের পথে হাঁটবে। নারীর সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবার মিলিত হতে হবে, তাহলে মহালয়া সত্যিই জীবনের আলোর পথ প্রদর্শক হবে, অন্ধকারের পথে চলে যাওয়ার প্রমাণ নয়।