জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিকে কেন্দ্র করে যে ‘থ্রেট কালচার’ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে কুণাল ঘোষের তীব্র প্রশ্নবাণ। চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ ও শৌচাগার গড়ার জন্য আন্দোলনে নামা তো দূরের কথা, সরকারি ঘর ভাঙার অসহিষ্ণুতা কি আমাদের সমাজের স্বাস্থ্যবিধিরও অবমাননা নয়? রাজনৈতিক নেতাদের নীরবতা আর পরিহাস যেন সর্বত্রই।
বাংলার রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের প্রসঙ্গ
কিছু দিন আগে কুণাল ঘোষ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন: “শাসক ও শাসিতের মধ্যে যে ভেদাভেদ, তার প্রভাব কতটা গভীর।” তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ‘থ্রেট কালচার’ সম্পর্কে অভিযোগ করেন। ডাক্তারদের আচরণ শুধুমাত্র নৈতিকতার প্রশ্নই নয়, বরং এটি সমাজের স্বাস্থ্যসেবার দিকেও একটি গুরুতর সংকেত দেয়। রোগীদের জন্য ডাক্তাররা অনশন শুরু করেছেন প্রয়োজনীয় দাবি নিয়ে, কিন্তু শাসক পক্ষ এ বিষয়ে কার্যত নীরব থাকছে।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি: সেবার ভূমিকা নাকি স্বার্থের খেলা?
ডাক্তাদের এই আন্দোলন সমাজের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে। সমাজের এই অংশের মানুষের চিকিৎসা সেবায় অবহেলার বিষয়টি কি আমরা বুঝতে পারছি? ডাক্তারদের বক্তব্য, “আমাদের কাজের সুযোগ দাও, আধুনিক যুগেও কেন আমাদের এইভাবে অপমানিত হতে হবে?” কিন্তু এই রাজনৈতিক বিতর্কে কি সত্যিই কোনো সেতুবন্ধন তৈরি হচ্ছে? এটি কি আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থার একটি কলঙ্ক নয়?
শাসকের দায়িত্ব ও জনতার প্রত্যাশা
রাজনীতিতে নেতৃত্বদানকারীদের আসল মাপকাঠি হল মানুষের স্বার্থ ও জীবনমানের উন্নয়ন। তবে আমরা দেখছিই, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্যে সরকারি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন কতটা দূরে। কুণাল ঘোষের প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া সত্ত্বেও, জনত 마ীষত্মের অশ্বস্ত যে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে তা স্পষ্ট। ডাক্তারদের আন্দোলন সমাজে নতুন উত্তেজনা তৈরি করছে। মানুষ এখন নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন, তাঁদের দুর্দশার প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট হচ্ছে।
মিডিয়ার দ্বায়িত্ব: সামাজিক দায়বদ্ধতা বনাম স্বার্থ
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রকৃত সংবাদ মিডিয়াতে চাপ দেওয়া হয়, যা আসলে একটি দুঃখজনক সত্য। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা কি এখন সত্যিই বিপজ্জনক স্থানে পৌঁছেছে? যখন মিডিয়া জনস্বার্থকে ভুলে যায়, তখন প্রশ্ন ওঠে যে এর শেষ কোথায়। পরিবর্তনের মনোভাব তৈরি করতে মিডিয়াকে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করতে হবে।
সমাজের চেতনা: সচেতনতা ও সংগ্রাম
তবে, নেতৃত্বের পরিবর্তন আমাদের কাছে অপরিহার্য মনে হচ্ছে। যেদিন সমাজের সব স্তরের মানুষ একত্রিত হয়ে গণজাগরণের মাধ্যমে দাবি জানাবে, সেদিনই হয়তো রাজনীতির অন্ধকার থেকে বাইরে এসে নতুন দিনের আলো খুঁজে পাব। আরজি কর হাসপাতালের আন্দোলন কি এটি নতুন পরিবর্তন, নাকি এটি অন্য একটি সংগ্রাম, সেটি সময়ই বলবে।
পরিবর্তন ও আন্দোলনের এই মুহূর্তে, নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে সঠিকভাবে পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করা। অন্যথায়, এই আন্দোলন হয়তো হাসপাতালের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আমাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর না মিললেও, আন্দোলনের উত্তেজনা যে দাউ দাউ করে জ্বলছে, এটি নিশ্চিত।
এখন দেখার বিষয়, এই আলোচনা কত দ্রুত আমাদের রাজনীতিতে একটি মুক্তির সুর নিয়ে আসবে।