“দুর্গাপুজো: ইউনেস্কোর তকমা, রাজ্যের আর্থিক কল্যাণে শাসক মহলের ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ নাটক!”

NewZclub

“দুর্গাপুজো: ইউনেস্কোর তকমা, রাজ্যের আর্থিক কল্যাণে শাসক মহলের ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ নাটক!”

উনিশের দুর্গাপুজোর জৌলুসে একদিকে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমার গৌরব, অন্যদিকে সরকারের ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ প্রকল্পটিতে অনুদানের নেপথ্য রাজনীতি উঠে এসেছে। কলকাতা হাইকোর্টের জনস্বার্থ মামলাটি রাজনৈতিক নাটকের নতুন পর্ব; আনন্দের উৎসবের মাঝে অর্থের ছৌকা যেন মেলাতে না পারে গণমানুষের প্রীতি আর প্রশাসনের দুর্বলতা।

“দুর্গাপুজো: ইউনেস্কোর তকমা, রাজ্যের আর্থিক কল্যাণে শাসক মহলের ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ নাটক!”

দুর্গাপুজো: সংস্কৃতি ও রাজনীতির সংযোগ

বাংলা সংস্কৃতির একটি বিশাল উৎসব দুর্গাপুজো এবার ইউনেস্কো হেরিটেজের স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই স্বীকৃতির ফলে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ বাংলায় এসে দুর্গার পূজা উদযাপনে অংশগ্রহণ করছে। দুর্গা মূর্তির বিশাল আয়োজন এবং সাংস্কৃতিক উন্মেষের সময় রাজনৈতিক নেতাদের উদ্বেগ বাড়ে। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার এই আবহে দুর্গাপুজো শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয় নয়, এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

রাজ্য সরকারের ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ প্রকল্প

রাজ্য সরকার প্রতি বছর গ্রাম ও শহরের দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে ‘দুর্গা ভাণ্ডার’ প্রকল্পের আওতায় অনুদান প্রদান করছে। এই উদ্যোগটি রাজনৈতিক প্রচারের নতুন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও স্লোগান রয়েছে “পুজো মানেই পঞ্চামৃত”, কিন্তু প্রকৃত অর্থ কি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে, নাকি তা শুধুমাত্র ভোট ব্যাংকের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে?

জনস্বার্থ মামলা এবং এর প্রভাব

বর্তমানে আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা চলছে। কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানির সময় বিচারপতি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তা করছেন। তারা কি রাজ্যের উন্নয়ন এবং জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দিচ্ছেন, নাকি রাজনৈতিক শাসন থেকে নিজেদের আলাদা করে নতুন কিছু সৃষ্টির চেষ্টা করছেন?

গণতন্ত্রের মানচিত্রে দুর্গাপুজোর প্রতিচ্ছবি

দুর্গাপুজো কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। জনপ্রতিনিধিরা যখন পুজোর নিয়ে উদ্যোগী হন, তখন গণতন্ত্রের আদর্শ যেন উজ্জ্বল হয়। তবে, কীভাবে এই বিশাল অর্থনৈতিক ব্যয় শুধুমাত্র ভোটের কৌশলে সীমাবদ্ধ থাকে, এবং গ্রামের মানুষের উন্নতির কী পরিকল্পনা রয়েছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ।

মিডিয়ার দৃষ্টি: সাংবাদিকতা এবং সমাজ

দুর্গাপুজোর এই মহা উৎসবে মিডিয়ার চিত্রণ সমাজের প্রতিচ্ছবি হিসেবে কাজ করে। সাংবাদিকরা কি সত্যিকার অর্থে সমাজের কাহিনী তুলে ধরতে পারছেন? বর্তমান সাংবাদিকতার যুগে তারা কি ‘সাসপেন্ডেড’ খবর প্রকাশের সাহস করছেন, নাকি মেকীর আড়ালে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন?

নতুন দিগন্ত, নতুন সম্ভাবনা

রাজনীতির নতুন মোড় নিয়ে দুর্গাপুজো যেন সাংস্কৃতিক মুক্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদিও এতে জনকল্যাণের বিভিন্ন দিক রয়েছে। আমাদের সক্ষমতা আবার কীভাবে পরিচয় খুঁজে পাবে? নাকি আমাদের কর্তব্যহীনতা আবারও অর্থনৈতিক সমস্যায় ফেলবে? দুর্গাপুজোর মাধ্যমে বাংলা সমাজের ধারাবাহিকতা কীভাবে বজায় রাখা হবে, সেটাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

মন্তব্য করুন