শাবানা আজমি সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নারীদের স্ব-দোষারোপের সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন, বিশেষ করে সন্তান না হওয়ার বিষয়ে। তিনি জানান, সমাজ নারীদেরকে ‘অপূর্ণ’ মনে করাতে ব্যস্ত, কিন্তু বাস্তবে তাঁদের মূল্য অর্জন উচিত ব্যক্তিগত কাজের মাধ্যমে। আজমি বলেন, নারীদের আত্মমর্যাদা তাঁদের সম্পর্কের মাধ্যমে নয়, বরং কর্মের মধ্য দিয়েও মাপে। এই বার্তা চলচ্চিত্র শিল্পের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে নারীদের ভূমিকাকে প্রায়ই হালকা করে দেখা হয়।
শাবানা আজমীর মন্ত্রীর taal Ukraine জয়িতা: কি সত্যিই একটি সামাজিক পরিবর্তনের প্রয়োজন?
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শাবানা আজমী, যিনি পর্দায় এবং পর্দার বাইরে বিরোধিতার বন্ধন ছিন্ন করতে পরিচিত, সম্প্রতি এক একান্ত সাক্ষাৎকারে নারীশক্তির নানা দিক নিয়ে আলোকপাত করেছেন। “যখন নারীরা সন্তান ধারণ করতে ব্যর্থ হন, তখন তারা নিজেদের দোষী মনে করেন,” বলেন তিনি। সমাজের যে প্রত্যাশায় নারীরা নিজেদের ‘অপূর্ণ’ অনুভব করেন, তার বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠে প্রতিবাদ করেছেন শাবানা।
নারীদের আত্মমর্যাদা: একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শাবানা আজমী জানিয়েছেন যে নারীদের আত্মসম্মান বাড়ানোর জন্য তাদের কাজের প্রতি শ্রদ্ধা অনুভব করা উচিত। তিনি বলেছেন, “এটা সত্যিই কঠিন যখন আপনি বুঝতে পারেন যে আপনি সন্তান ধারণ করতে পারছেন না। সমাজ আপনাকে অসম্পূর্ণ মনে করায়। তবে আপনার নিজের মানসিকতা আপনার কাজ থেকেই আসা উচিত।”
সামাজিক অবস্থান এবং পুরুষদের সফলতা
শাবানার মতে, নারীরা প্রায়ই নিজেদের আত্মমূল্যায়ন সম্পর্কিত একটি সংকীর্ণ ধারণার মধ্যে আবদ্ধ রয়েছেন। নারীরা তাদের সম্পর্কের ভিত্তিতে নিজেদের বিচার করেন, যেমন স্ত্রীর, মায়ের কিংবা কন্যার হিসেবে। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে সে রকমটা ঘটে না। পুরুষের সফলতা তার কর্মজীবনের ফলেই মাপা হয়।
মায়ের শিক্ষার প্রভাব
শাবানা বলেছেন, “আমি আমার মা শौকত আজমীকে যখন জিজ্ঞেস করেছিলাম, তার সমস্ত ভূমিকায় কোনটি সবচেয়ে সন্তোষজনক ছিল, তার উত্তরের প্রতি আমি অবাক হয়েছিলাম। উনি বলেছিলেন যে তার কাজ এবং তার জন্য যে প্রশংসা পাওয়া যায় সেটাই তার প্রধান সন্তোষটি।” এটি বুঝিয়ে দেয় যে মায়েরা চাকরির মাধ্যমে নিষ্ক্রিয়তার বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলে সংসারের নারীদের জন্য এটি কিভাবে একটি উদাহরণ স্থাপন করে।
বিনোদন জগতের রাজনৈতিক বিবেচনা
তবে শাবানা আজমীর ক্ষোভই কি শুধুই সামাজিক চাপের বিরুদ্ধে? বিরোধিতার মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলার সময় তিনি বিনোদন জগতের রাজনৈতিক বিন্যাস এবং এই যোগাযোগের গতিশীলতা সম্পর্কে কথাও বলেছেন। “নারীরা তাদের মধ্যে থাকা প্রতিভাকে প্রকাশ করার জন্য নিজেদের অবদান রাখতে চান। তবে সেটা যদি শুধুমাত্র একজন ভাল অঙ্গনে ঘটে, তাহলে সম্মান পাওয়া উচিত,” তিনি যোগ করেন।
সংসার এবং ক্যারিয়ারের সঠিক সমন্বয়
শাবানা আজমী এবং কবি ও লেখক জাভেদ আখতার, যাদের বয়সের বিধি মানেন না, তাঁরা জীবনে একশত বা ততোধিক কাজের মধ্যে মানসিক সমন্বয় তৈরির একটি সফল উদাহরণ। সেইসাথে সমাজের পুরুষ এবং নারীদের সহযোগিতামূলক দায়িত্ববোধ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি
ফেরার পথে, শাবানার ৫০ বছরের শিল্পী কেরিয়ারকেও ‘আইএফএফএসএ’ ২০২৪-এ সম্মানিত করা হবে। এখানেই লক্ষ্য রাখা উচিত, যে দর্শকদের মনোজ্ঞ অভিজ্ঞতা খুঁজে বের করার পেছনে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির ব্যতিক্রমী কার্যকলাপের দিকও।
ফলে, শাবানা আজমীর মত অভিনয়শিল্পীদের দ্বারা উচ্চারিত বার্তাগুলি শুধু সমাজের নারী শক্তির প্রসঙ্গে নয়, বরং সমগ্র মানবতার জন্য এক পদ্ধতির আহ্বান দেয়। তবে এখানেও প্রশ্ন থেকেই যায়, সমাজের উন্নতির জন্য আমাদের কতটা আরও কাজ করতে হবে?